Read Time:9 Minute, 50 Second
প্রয়াত মোল্লা নুরুল হোদা (বিচারক) সাহেবের পুত্র মোল্লা জসিমউদ্দিন পৈত্রিক জমির নথি জালিয়াতি করে সর্বশান্ত করার প্রচেষ্টা করছে একদল সুভিদাবাদী সিন্ডিকেট ও সহযোগী সরকারি অহিকারিকদের একাংশ|
দুর্নীতির হাত এত লম্বা যে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর কে জানিও কোন ফল নেই| মোল্লা জসিমউদ্দিন আবশ্য বলেছেন যে মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয় বিষয়টি জানতে পারেননি কারণ তাঁর সুবিচার সম্পর্কে তিনি নিশ্চিত|
বিষয়টি তিনি সবিস্তারে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন এবং ইমেইল টি তুলে ধরা হলো|
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে তাঁর অফিসিয়াল ইমেলে গত ৩১ ডিসেম্বর এবং ২ জানুয়ারি স্পিড পোস্টে নবান্ন অফিসে নিম্নলিখিত অভিযোগ পাঠানো হয়েছিল।প্রায় আড়াই মাস কেটে গেলেও কোন প্রশাসনিক উত্তর কিংবা তদন্ত হয়নি।এখনও সুবিচারের আশায় অভিযোগকারী।
প্রাপক
মুখ্যমন্ত্রী
মাননীয়া
জেলাস্তরের প্রতিটি দপ্তর কে বারবার জানিয়েও কার্যক্ষেত্রে কোন সুরাহা মেলেনি।যেহুতু অভিযুক্ত দপ্তর (ভুমি সংস্কার) আপনার নিয়ন্ত্রণাধীন, তাই সুবিচার পেতে আপনার দারস্থ হয়েছি।পৈতৃক সম্পত্তির রেকর্ড জালিয়াতির বিরুদ্ধে আমার প্রয়াত বাবা মোল্লা নুরুল হোদা (বিচারক) গত ০২/০৬/১৫ তারিখে কাটোয়া বিএলআরও, এসডিএলআরও, মহকুমাশাসক পরবর্তী ০৫/০৬/১৫ তারিখে জেলাশাসক, ডিএলআরও প্রমুখ আধিকারিকদের লিখিতভাবে জানিয়েছেন।অভিযোগের বিষয় ছিল – কাটোয়া ১ নং ভূমি দপ্তরের অধিন শ্রীখণ্ড মৌজার (জে এল নাম্বার ৭, খতিয়ান নাম্বার ২০২৩, দাগ নাম্বার – ৬৬৭, পরিমান ৬০ শতক) পৈতৃক সম্পত্তি কিভাবে বিনা নোটিসে – বিনা শুনানিতে – বিনা দলিলে একতরফা ভাবে রেকর্ডভুক্ত হয় ( মিউটেশন কেস নাম্বার ১৭৭২/১৪) তা নিয়ে? লিখিত অভিযোগ পেয়ে তৎকালীন ডিএলআরও তদন্তের নির্দেশ{মেমো নাম্বার ৯৯১(৩)} দেন। গত ২৭/০৭/১৫ তারিখে কাটোয়া এসডিএলআরও অফিসে উভয়পক্ষদের নিয়ে শুনানি হয়।তদন্ত রিপোর্ট পেয়ে অভিযোগকারী মোল্লা নুরুল হোদা কে ডিএলআরও গত ০৯/০৩/১৬ তারিখে অফিসিয়াল চিঠি ( মেমো নাম্বার ৩৮৭/৪১৬/সি/২০১৫) করে ওই মিউটেশনের বিরুদ্ধে (ইউ/এস ৫৪ অফ, ডাবলু. বি.এল.আর ১৯৫৫) আপিল করতে নির্দেশ দেন।আপিল আবেদন করবার অর্ডার শিট পেতে বারবার হয়রানি করে কাটোয়া ১ নং ভূমি দপ্তর।২৯/০৬/১৬ তারিখে উক্ত অফিসে মোল্লা নুরুল হোদা এবং পরবর্তী ২৮/০৭/১৬ তারিখে তথ্য জানার আইনে আমি অর্থাৎ মোল্লা জসিমউদ্দিন আবেদন করি।বহুকস্টে অর্ডার শিট ( এমএন/২০১৪/০২২৪/৪৭৯৯) তুলে দেখি মিউটেশন করার ক্ষেত্রে কোন দলিল নাম্বার বা তারিখ নেই।সাধারণত রেকর্ড সংশোধন দলিল /ওয়ারিশ /আদালতের রায়ের ভিক্তিতে হয়।কিন্তু এক্ষেত্রে কোন নিয়ম মানা হয়নি।তদাপি বর্ধমান (পূর্ব) ডিএলআরও অফিসে গত ২২/১২/১৬ তারিখে আপিল ( কেস নাম্বার ১৭২/১৬) জমা পড়ে।অদ্ভুতভাবে শুনানির জন্য প্রথম নোটিশ আমরা ডাকযোগে পাইনি।দীর্ঘসময় কেটে যাওয়ায় ডিএলআরও অফিসে দ্বিতীয় নোটিশ পায় ০৩/০৫/১৭ তারিখ হাজির হওয়ার জন্য।অভিযুক্ত খায়রুল মোল্লা শুনানির দুবার হাজিরা এড়িয়ে তৃতীয় শুনানি (৩০/০৮/১৭ তারিখ) তে ভাইপো আজগর মোল্লা কে প্রতিনিধি হিসাবে হাজিরা দেন।চতুর্থ শুনানিতে অর্থাৎ ১৮/১০/১৭ তারিখে ডিএলআরও অর্ডার দেন। তবে অত্যন্ত চতুরভাবে তিনি আদেশনামায় পুনরায় কাটোয়া ১ নং বিএলআরও কে আমাদের অভিযোগের মান্যতা দিয়েও ‘ফ্রেস হিয়ারিং’ নির্দেশ দেন।এই আপিল কেসে ১০ মাসে ৪ বার শুনানিতে আসেনি অভিযুক্ত।যদিও তৃতীয় শুনানিতে নিজ প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলেন।০১/১১/১৭ তারিখে কাটোয়া ১ নং বিএলআরও অফিসে পৈতৃক সম্পত্তির রেকর্ড পুর্বের নামে (দাদু) করবার জন্য অর্ডার শিট দিয়ে ওয়ারিশ হিসাবে আবেদন জানাই।এই আবেদনের (কেস নাম্বার ১০১৫, কাটোয়া) ২৭/১২/১৭ তারিখে প্রথম শুনানি হয়।সেখানে কাটোয়া বিএলআরও সাহেব কে অবগত করি যে – উক্ত মিউটেশন এর বিরুদ্ধে ডিএলআরও অর্ডার শিট কে মান্যতা দেওয়া হোক।কিন্তু ওই আধিকারিক অত্যন্ত রুঢ হয়ে আমাকে বলেন – ডিএলআরও সাহেবের অর্ডার শিটের শেষে ‘ফ্রেস হিয়ারিং’ এর কথা।এই কেসের লিখিত বয়ান নিতেও অস্বীকার করেন ওই আধিকারিক। পরে বিষয়টি এসডিএলআরও সাহেব কে জানালে রিসিভ সেকশন থেকে প্রাপ্তিস্বীকার করা হয়।
মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী, প্রথম শ্রেণীর দৈনিক সংবাদপত্রে দীর্ঘ পনেরো বছর গ্রামীন বর্ধমানে সাংবাদিকতা করার সুত্রে জানতে পেরেছি, শুধু আমাদের ক্ষেত্রে নয় ২০১৩ থেকে ২০১৫ এই দুবছরে কুড়ির বেশি মিউটেশন হয়েছে জালিয়াতির ভিক্তিতে।এরমধ্যে সিংহভাগ জালিয়াতি প্রমাণ হয়ে আবেদনকারীদের রেকর্ড পুনরায় পুর্বে ফিরে গেছে।এক্ষেত্রে কাটোয়া ১ নং বিএলআরও অফিস কে কেন্দ্র করে রেকর্ড জালিয়াতির ‘সিন্ডিকেট’ রয়েছে।যাদের নেটওয়ার্ক সাব রেজেস্ট্রি অফিস, ডাকঘর, থানা, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অফিসের একাংশের পাশাপাশি খাজুরডিহি (কাটোয়া শহর সংলগ্ন) তে সশস্ত্র বাহিনী রয়েছে। অতীতে সিপিএমের চ্যাটার্জী বাবু এইসব নিয়ন্ত্রণ করতেন।বর্তমানে আরেক চ্যাটার্জী বাবু চালাচ্ছেন বলে শোনা যায়।আমাদের এই সম্পত্তি টি শ্রীখণ্ড এনটিপিসির সামনেই।তাই জমি সিন্ডিকেটের কুনজর রয়েছে।ইতিমধ্যে আমাদের ভাগচাষীদের বাড়ীতে বেশ কয়েকবার হানা দিয়েছে ওই চক্রের দলবল। পুলিশ কে জানাতেও প্রাণহানির আশংকা করছেন ভাগচাষীরা।গত ২৭/১২/১৭ তারিখে কাটোয়া বিএলআরও অফিসে এইরুপ মস্তানদের দেখি।বিএলআরও সাহেব এই মিউটেশন কেসের নথিভুক্ত দলিলের নাম্বার আমায় জানাননি।তাই আশংকা ‘ব্যাক ডেট’ দিয়ে কোন দলিল নথিভুক্ত করতে পারেন।সেক্ষেত্রে সাইবার সেল দ্বারা দলিল নথিভুক্তের সময় জানতে ফরেন্সিক তদন্তর দাবি রাখি।সর্বোপরি পূর্ব বর্ধমান ডিএলআরও ১০ মাসে ৪ বার শুনানি করেও কেন কাটোয়া ১ নং বিএলআরও কে অর্ডার শিটে ‘ফ্রেস হিয়ারিং’ করতে বললেন, তাও খতিয়ে দেখা উচিত।কাটোয়ার রেকর্ড জালিয়াতি করা সিন্ডিকেটটির ডিএলআরও অফিসে ‘হট লাইন’ আছে বলে জনশ্রুতি। ঠিক এইরকম পেক্ষাপটে পৈতৃক সম্পত্তি পুনরুদ্ধার (যদিও এই জমির ৩৫+ বছর আমাদের দখলস্বত্ব রয়েছে) করতে নানান সমস্যা, হয়রানী, প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছি।আপনির প্রতি আস্থা রেখে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত দাবি রাখছি।
ধন্যবাদান্তে
মোল্লা জসিমউদ্দিন
গ্রাম পদিমপুর,ডাক নূতনহাট
থানা মঙ্গলকোট,জেলা পূর্ব বর্ধমান
আমরা আশা করি প্রশাসন দ্রুত সমাধান সুত্র বের করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবেন |
Advertisements