যুক্তরাষ্টের ফ্লোরিডার ইন্টারন্যাশনাল সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (আইএসডিআই), হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এবং হার্ভার্ড লক্ষ্মী মিত্তাল সাউথ এশিয়া ইন্সস্টিটিউট এর আয়োজনে বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বড় একাডেমিক সম্মেলন “বাংলাদেশ রাইজিং কনফারেন্স ২০১৮’ শীর্ষক দিনব্যাপী সেমিনারটি গত ১২ই মে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে
এ সম্মেলনে, বাংলাদেশ কী করে অগ্রযাত্রার গতি আরও ত্বরান্বিত করতে পারে সেই প্রশ্নের চুলচেলা বিশ্লেষণ ও জানতে অংশ নিলেন হার্ভার্ডসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের নীতিনির্ধারক, কূটনীতিক, সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদার ও সংস্থার প্রতিনিধি, বেসরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের হার্ভার্ডের সেমিনারে বাংলাদেশের উন্নয়নযাত্রা: কী সম্ভাব্য ভবিষ্যত বাংলাদেশের?
প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞরা। তাদের আলোচনা, বিতর্ক , উপস্থাপনা, অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের যে চিত্রটি উঠে এল, তা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বিপর্স্থ বাংলাদেশের নয়, প্রবৃদ্ধির সোপানে এগিয়ে চলা উদীয়মান এক রাষ্ট্রের।
উন্নয়ন এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কোন কোন ক্ষেত্রে আরও সংস্কার আনতে পারে এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উন্নয়ন সহযোগীরা কীভাবে বাংলাদেশকে কার্যকর সহযোগিতা করতে পারে সে বিষয়গুলোও আসে আলোচনায়।
সম্মেলনের শুরুতেই আয়োজকদের পক্ষ থেকে অতিথিদের স্বাগত জানান কনফারেন্সের দুই উদ্যোক্তা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনেডি স্কুলের বেলফার সেন্টার এর সিনিয়র ফেলো ইকবাল কাদির এবং ইন্টারন্যাশনাল সাসটেইনেবল ডেভোলপমেন্ট ইনস্টিটিউট এর পরিচালক ইকবাল ইউসুফ। উদ্বোধনী পর্বে স্বাগত বক্তব্য দেন টাফটস ফ্লেচার স্কুলের ইন্সটিটিউট ফর বিজনেস ইন দ্য গ্লোবাল কনটেক্সটের উদীয়মান বাজার উদ্যোগ বিষয়ক ফেলো নিকোলাস সুলিভান। তিনি বলেন, ২০০৬ সালে তিনি যে বাংলাদেশকে দেখেছেন, এখনকার বাংলাদেশ তার চেয়ে অনেকটাই আলাদা। জিডিপি প্রবৃদ্ধি, রপ্তানি, রেমিটেন্সসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দারুণ উন্নতি দেখিয়েছে। তবে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করায় বাংলাদেশকে যে এখন সাহায্য নির্ভরতার বদলে বাণিজ্য নির্ভরতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে, সে কথাও তিনি মনে করিয়ে দেন।
উদ্বোধনী অধিবেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের গবেষণা পরিচালক ফ্রাঙ্ক নেফকে। তিনি বাংলাদেশের রপ্তানি, উৎপাদন সক্ষমতা, বিশেষ করে গার্মেন্ট খাতের বিকাশের কথা তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হারকে ভিয়েতনাম ও চীনের সঙ্গে তুলনা করেন।
এর পর শুরু হয় প্যানেল আলোচনা। ছয়টি প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন নীতিনির্ধারকসহ বিভিন্ন খাতের শীর্ষস্থানীয়রা। সামষ্টিক অর্থনীতির প্রতিশ্রুতি ও সংস্কার, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর সম্ভাবনা, বিদ্যুৎ উৎপাদনে গতিশীলতা আনা, বাণিজ্যে নারীর নেতৃত্ব এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রসার নিয়ে তারা আলোচনা করেন।
সেমিনারে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ এর সফল উৎক্ষেপণের ভিডিওচিত্র দেখানো হয়। স্যাটেলাইট ক্লাবের সদস্য হওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে অভিনন্দন জানান বিদেশি আলোচকরা।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিরা কীভাবে বাংলাদেশের উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারে, সে বিষয়েও একটি আলোচনা পর্ব ছিল সম্মেলনে।
এ আয়োজনের পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল সামিট পাওয়ার, জেনারেল ইলেকট্রনিক্স, ম্যাক্স গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, আব্দুল মোনেম ইকনোমিক জোন, মেঘনা গ্রুপ, এনার্জিপ্যাক বাংলাদেশ ও হাবিব গ্রুপ।