আপামর বাঙালীর ঘরে ঘরে সাড়ম্বরে পুজো চলছে বাল গোপালের

0
1745
Lord Krishna
Lord Krishna
0 0
Azadi Ka Amrit Mahoutsav

InterServer Web Hosting and VPS
Read Time:8 Minute, 33 Second

আপামর বাঙালীর ঘরে ঘরে সাড়ম্বরে পুজো চলছে বাল গোপালের

পল মৈত্র,দক্ষিন দিনাজপুরঃ আজ গোপাল পূজা শ্রীকৃষ্ণের জন্ম ভূমি বৃন্দাবন থেকে শুরু করে সারা পৃথিবী জুড়ে বাঙালি অবাঙালি দেশী-বিদেশী প্রত্যেকের ঘরে ছোট বাল গোপালের পুজো হচ্ছে| বাঙালির ঘরে গোপাল পুজো এই পৌষ মাসের শুরুতে যথেষ্ট শোভা পায়| তা বলাই বাহুল্য দিন থেকে বলা হয় শুরু হয়ে যায় পৌষ মাসের সূচনা গোপাল পুজোর দিন সকলে ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠে শুদ্ধ বস্ত্রে সুচি কাপড়ে মাল গোপালের পুজো করেন |

ফুল ফলাদি প্রসাদ সবকিছু থাকলেও গোপালের প্রিয় খাবার মাখন না থাকলে যেন শিবু যা তা সম্পূর্ণই হয় না তাই প্রত্যেক বাড়িতে গোপাল প্রতিমার সামনে বাটি ভর্তি মাখন রাখা থাকে| বাড়ির বড়রা বলে গোপাল ঠিক এ মাখন গুলো খেয়ে ফেলবে এই পুজো নিয়ে বাড়ির সদস্য থেকে শুরু করে ভক্তদের উদ্দীপনা থাকে চোখে পড়ার মতন। সারা দেশের পাশাপাশি শুধু দক্ষিণ দিনাজপুর ও রবিবার সাড়ম্বরে পালিত হলো গোপাল পুজো|

পুজো নিয়ে কিছু গল্প রয়েছে একটি জনশ্রুতি বা বলা যেতে পারে যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে হিন্দু বা সনাতন ধর্মের মধ্যে, কোন পূজা উপলক্ষে অনেকের বাড়িতে বড় করে অনুষ্ঠান করা হয় গরীব দুঃখীদের দান করা হয় সুদূর দক্ষিণ দিনাজপুরে ও নানান বাড়িতেই সকাল থেকে শুরু হয়েছে গোপাল পুজোর শঙ্খ ধ্বনি ও গোপাল মন্ত্র উচ্চারণে হিন্দু ধর্ম সনাতন ধর্মের পরম ভক্তি ও শ্রদ্ধার সাথে পূজিত হচ্ছেন বাল গোপাল পুজো শেষে সকলেই প্রসাদ নিতে ভিড় জমান পাড়ার বড় বড় মন্দির গুলোতে সাথে বাড়ির পুজো গুলো তো বেশ সুস্বাদু নিরামিষ খাবার গুলো তৈরি করা হয় এ গোপালপুর ব্লক অনেকে বলেন বাড়িতে ছোট গোপন রাখলে জীবনের চলার পথে সমস্যার সমাধান হয়ে যায় পালকি একটু মাখন মন ভরে ভক্তি সমাদর করলে গোপাল পরিপূর্ণ করে সে তার ভক্ত কে পরিপূর্ণ করে তুলবে তুলবে এই প্রসঙ্গে গোপাল পুজো নিয়ে একটি গল্প আছে। যশোদানন্দন গোপাল নীলমণি যখন হাটতে শিখল যশোদার আঙ্গিনায় তখন ঘর থেকে বাইরে, ব্রজের গোপালের অনেক বন্ধু হল, সুবল, বসুদাম, শ্রীদাম, মধুমঙ্গল, অংশুমান আদি অনেক মিত্র হল। সবাই মিলে প্রতিদিন মাখন চুরি করতে লাগল। শ্রীদামাদি সখা একটা চোরমন্ডলী তৈরি করল। ঐ চোরমন্ডলীর অধ্যক্ষ হলেন আমাদের মাখনচোর প্রধান স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ ।
সব জায়গায় তারা চুরি করে এবং নতুন পদ্ধতিতে চুরি করার কথা যোজনা বানায় এবং গোপীর ঘরে চুরি করে।
আজ গোপাল আর তার সখা চোরমন্ডলী চুরি করতে চলল চিকসৌলী গ্রামে। গোপাল গোপীর ঘরের পাশে সকল বন্ধুদের লুকিয়ে দিলেন। আর স্বয়ং গোপীর ঘরে পৌছে গেল। দরজায় আওয়াজ করতে লাগলেন । ভগবান নিজের মুখের কাজল ও চুল উলটাপালটা করে দিলেন। গোপী দরজা খুলতে দেখলেন কৃষ্ণ দাড়িয়ে আছে।
গোপী বলল- ” আরে লালা, আজ সকাল সকাল এখানে কেন ?
কানাইয়া বলল– “গোপী, কি বলব ! আজ সকাল উঠলে মা বলল, লালা তুই চিকসৌলী গোপীর ঘরে যা, ওকে বলল আজ আমাদের ঘরে সাধুসন্ত আসবে, আমি তো সকালে তাজা মাখন বের করি নি। ওতো রোজ তাজা মাখন বের করে। ওর থেকে তাজা মাখন বের করে । ওর থেকে তাজা মাখনের এক হাড়ি নিয়ে আয়। আমি পরে দুইটা মাখনে হাড়ি ওকে দিয়ে দেব। তাই এখানে এলাম গোপী।”
গোপী বলল, ” লালা, আমি মাখনের হাড়ি নিয়ে আসছি।আর মাকে বলবে, হাড়ি আমাকে দেবার প্রয়োজন নেই রে লালা। বলসি আমি হাড়ি দিয়ে সাধুসেবা করলাম।” তখন গোপী ভিতরে গিয়ে মাখনের হাড়ি নিয়ে এল আর সঙ্গে কিছু মিশ্রীও নিয়ে আসল আর বলল, লালা মাখন নও সঙ্গে এই মিশ্রীও নাও সাধুসেবায় দিও।”
মাখন নিয়ে কৃষ্ণ বাহিরে আসল। গোপী দরজা বন্ধ করে দিল। ভগবান তখন সকল সখাদের ডেকে শ্রীদাম, সুবল, মধুমঙ্গল তাড়াতাড়ি আয়। সব সখা তাড়াতাড়ি এলে সবাই ওখানে বসল। কানাইয়া বলল — যার ঘরের মাখন তার ঘরের সমানে বসে খাওয়ার আনন্দ আলাদা। ভগবান সবার পাতে মাখন মিশ্রী দিল। মাঝখানে বসে কানাইয়া আরাম করে মাখন মিশ্রী খেতে পটপট আওয়াজ আর মিশ্রী কটকট আওয়াজ হতে লাগল । যখন এই আওয়াজ শুনে, গোপী দরজা খুলল। দেখল গোপাল সখাদের সাথে আরাম করে মাখন খাচ্ছে আর হাসছে ।
গোপী বলল- ” কি রে কানাইয়া, মাখন কি সাধুসেবার জন্য ছিল, না তুই চুরি করলি রে?
তখন ভগবান বলল, দেখ গোপী, আমার সখারা কি কোন সাধু থেকে কম নাকি, সব নাগা সাধু তুমি দেখ, কারো বস্ত্র আছে, কারো নেই। এই দেখ এরা তো বড় সাধু এদের প্রণাম করো।
গোপী বলল– আচ্ছা কানাইয়া, এদের দন্ডবৎ প্রণাম করব, দাঁড়াও আমি দন্ডা নিয়ে আসছি, গোপী ঘরের ভিতর থেকে দন্ডা নিয়ে আসল।
গোপাল বলল, “বন্ধু সখা, পালাও। তা না হলে গোপী এখনই আমাদের পূজা করবে।”
গোপী চুরির কথা মা যশোদার কানে তুলল।
একদিন যখন মা নালিশ শুনতে শুনতে ক্লান্ত হয়ে গিয়ে আজ গোপালকে ঘরে বেঁধে রাখল। যে ভগবান যোগীদের সাধনার ধন, সেই ভগবানকে মা ঘরে বেধে রাখলেন।যখন আজ গোপীরা গোপালকে ব্রজের ঘরে গলিতে দেখল না। তখন নালিশ করার বাহনা নিয়ে আসল মা যশোদার আঙ্গিনায় । নন্দরাণীকে বলল–” যশোদা তোমার লালা খুব দুষ্ট গো, অসময়ে এসে গাভী বাছুরীদের খুলে দেয়। মাখন লুকিয়ে রাখে না জানি কি করে খুজে নেয়। আর যে দিন মাখন পায় না সে দিন ঘুমন্ত শিশুকে চিমটি কাটে চলে যায় । যদি মাখন খায়, মাখনের হাড়ি ভেঙ্গে দেয় ।”
যশোদা গোপালের হাত ধরে বললেন, ” দেখ লালা, গোপীর গলিতে তুই আর যাবি না। মাখন খাবি না।”
যখন গোপীরা এটা শুনল বলতে লাগল, ” যশোদা রে আমরা নালিশ করতে আসি নি। আজ লালাকে তুই বেঁধে রেখেছিস, তাই বেঁধে রেখেছিস, তাই লালাকে দেখতে পাই নি। তাই এলাম একটু দেখতে লালাকে। তাই নালিশের বাহনা দিয়ে এক ঝলক দেখতে আসলাম । যখন যশোদা তা শুনল শুনে বলল- গোপী, তোমরা আমার লালাকে এত ভালবাস, আজ থেকে গোপাল শুধু আমার না, গোপাল সারা বৃন্দাবনের লালা।

About Post Author

Editor Desk

Antara Tripathy M.Sc., B.Ed. by qualification and bring 15 years of media reporting experience.. Coverred many illustarted events like, G20, ICC,MCCI,British High Commission, Bangladesh etc. She took over from the founder Editor of IBG NEWS Suman Munshi (15/Mar/2012- 09/Aug/2018 and October 2020 to 13 June 2023).
Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Advertisements

USD





LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here