বাংলার মানুষের জন্য জীবন বাজি রাখলেন দিদি
মা যেমন সন্তানকে বাঁচানোর জন্য আগুনে ঝাঁপ দিতে দেরি করেন না , ঠিক তেমন ভাবে করোনার ভয়াল পরিস্থিতিকে উপেক্ষা করে নিজের জীবন কে বাজি রেখে হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল ঘুরে বেড়াবে এমন মানুষ বা নেতা কে আছেন? অনেকেই উদ্ধারণ খুঁজবেন সারা ভারতে কিন্তু হাতে গোনা যে কজন পাবেন তাদের মধ্যে বাংলার বাঘিনী, সকলের প্রিয় দিদি প্রথম সারিতে । বার্তা দিচ্ছেন বিপদ কালে পাশে ছিলেন আছেন আর ভবিষ্যতেও থাকবেন ।
সাংবাদিক বৈঠকেও রাজ্যবাসীকে সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘হাত জোড় করে অনুরোধ করছি, দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা করুন। ব্যাঙ্কের লাইনে যাঁরা দাঁড়ান, তাঁদেরও একই কথা বলব। রাস্তায় ক্রিকেট খেলবেন না দয়া করে। একটা বাড়িতেই চার জনের হয়ে গেল। কতটা ভয়ঙ্কর, বুঝতে পারছেন না। ভিন্ রাজ্য থেকে যাঁরা ফিরেছেন, তাঁদের বলব, ঘরে থাকুন। ১৪ দিন পরিবারের সঙ্গেও দূরত্ব রেখে চলুন। সাংবাদিক বৈঠকের পর দিদি নিলেন এক দৃষ্টান্ত মূলক পদক্ষেপ শুরু করলেন হাসপাতাল ভ্রমণ ।
মঙ্গলবার শহরের প্রায় সব ক’টি মেডিক্যাল কলেজ, রাজারহাট কোয়রান্টিন কেন্দ্র এবং আইডি হাসপাতাল নিজে ঘুরে দেখলেন । শুরু করলেন আর জি কর মেডিকেল কলেজের পরিকাঠামোগত কী সমস্যা রয়েছে, তা নিয়ে উপাধ্যক্ষ মানস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেন মমতা।
লকডাউনের জেরে হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে সরকার থেকে হোটেলে থাকা এবং গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিজের ব্যক্তি উদ্যোগে এর পর মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারের দু’টি বাক্স কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, এর সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরের সম্পর্ক নেই। এটা আলাদা ভাবে দেওয়া হল।
স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য দায়িত্বে আছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের যা করোনা হাসপাতাল বলে চিন্নিত হয়েছে ।
মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পরবর্তী গন্তব্য ছিল এই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। সে বিষয়ে অধ্যক্ষা মঞ্জুশ্রী রায়ের সঙ্গে আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। পরের হাসপাতালে গেলেন তা হলো এনআরএস, সেখানে পৌঁছে অধ্যক্ষ শৈবাল মুখোপাধ্যায় এবং উপাধ্যক্ষ সৌরভ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেন। রাজ্যের প্রথম করোনা আক্রান্ত্র মৃতের সহকর্মী বর্তমানে এনআরএসের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তাঁর স্বাস্থ্য সম্পর্কে খোঁজ নেন মমতা।
এরপর দিদি গেলেন এনআরএস থেকে এসএসকেএম হয়ে মুখ্যমন্ত্রী রাজারহাট কোয়রান্টিন কেন্দ্রে । শুনলেন চিকিৎসকদের ও স্বাস্থ কর্মীদের অভাব অভিযোগের কথা । আশ্বাস দিলেন আপ্রাণ পাশে থাকার ।
এর পর গন্তব্য রাজ্যে করোনা চিকিৎসার কেন্দ্র বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল। সেখানে সবিস্তারে জানলেন বর্তমান পরিস্থিতির কথা । তার পরে যান সুপার শিশির নস্করের পরিচালিত এম আর বাঙুরে। এক কথায় সকলে বললেন , ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে সাহস জুগিয়ে গেলেন তার তুলনা হয় না।’’ মুখ্যমন্ত্রী যখন হাসপাতাল ছেড়ে যাচ্ছেন তখন শ্রদ্ধায় মাথা নাতো সকলের ,হাত তুলে নমস্কার করলেন অধ্যক্ষা অণিমা হালদার এবং উপাধ্যক্ষ আশিস মান্না। প্রতি নমস্কারে মাথা ঝুঁকিয়ে হাসি মুখের অভয় দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘‘খুব ভাল কাজ করছেন। নিজেদের খেয়াল রাখুন।’’
নিঃশ্চুপ জনতা না দেখা চোখের জলে মনে মনে বললেন ,আমাদের সকলের জন্য আপনিও ভালো থাকুন । উপরআলা আপনাকে বাংলা তথা ভারতের ভবিষ্যতের জন্য ভালো রাখুন ।