লক্ষ্মণহীন কোভিড রোগী হয়েও কী অমিতাভের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দরকার ছিল
নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতা ,১৮ জুলাই ২০২০:-
জীবন বড় বিচিত্র খেলা কখন কি মোড় নেবে কেউ বলতে পারে না ।
লক্ষ্মণহীন কোভিড রোগী হয়েও কী অমিতাভ বচ্চন-এর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া সত্যিই খুব দরকার ছিল ?
হ্যাঁ, এই প্রশ্নটাই এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে দেশের সাধারণ নাগরিকদের মনে।
অনেকে সরাসরি জানতে চাইছেন, দেশের অনেক লক্ষ্মণহীন কোভিড রোগী যখন বাড়িতে থেকে ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন; তখন কী এমন দরকার ছিল যে বিগ বি-কে হাসপাতালে ভর্তি হতে হলো?
এর প্রত্যুত্তরে বিগ বি-র পোঁ ধরা অনেক সংবাদমাধ্যম ইতিমধ্যে আওয়াজ তুলেছে, ‘ওঁনার কিডনীর ২৫ শতাংশই অকেজো, এরকম অবস্থায় ওঁনাকে বাড়িতে রাখা ভুল সিদ্ধান্ত হতো।’
এবার আসুন একটু খোলা মনে সব দিক বুঝে নেওয়া যাক, কেনো বিগ বি-কে হসপিটালে ভর্তি করতেই হলো।
মুম্বই-এর নানাবতী হসপিটাল কাদের পরিচালনায় চলছে?
খুব পরিষ্কার উত্তর রাডিয়েন্ট গ্রুপের পরিচালনায় চলছে।
রাডিয়ান্ট গ্রুপের মেজর স্টেক হোল্ডার কে?
কে আবার, একমেবাদ্বিতীয়ম অমিতাভ বচ্চন ওরফে বিগ বি।
বাহ, খুব ভালো কথা।
এবার একটু পরনিন্দা পরচর্চা সেরে ফেলা যাক।
আপনারা নিশ্চই জানেন সাম্প্রতিক অতীতে মুম্বই-এর নানাবতী হসপিটাল নিয়ে বেশ কিছু খবর সংবাদমাধ্যমে বেরিয়েছিল।
পাঠকদের স্মৃতিশক্তি খুব বেশি দুর্বল না হলে নিশ্চয়ই মনে আছে, প্রতি ১০ জন কোভিড পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৭ জনকেই কোভিড পজিটিভ বলে ঘোষণা করছিল নানাবতী হসপিটাল-এর পরীক্ষাগার। যদিও অন্যত্র পরীক্ষা করালে দেখা যাচ্ছিল এই পজিটিভ রোগীরা অনেক ক্ষেত্রেই কোভিড ১৯ রোগী নন। এই নিয়ে মহারাষ্ট্রে জলঘোলাও কম হয়নি।
সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, কোরনা আবহে হসপিটালের বদনাম হচ্ছিল। আয় তলানিতে নামছিল।
হসপিটালের এই ডামাডোলের সময় হসপিটালের হাত যদি শাহেনশা রূপী ডিরেক্টর না ধরবে তাহলে ধরবে কে ? আরে বিগ বি তো নানাবতী হসপিটাল-এর ডিরেক্টর।
সুতরাং চিত্রনাট্য তৈরী করা হলো। অমিতাভ বচ্চন ও অভিষেক বচ্চন-এর কোরনা সংক্রমণের কথা ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচারের ব্যবস্থা করা হলো।
বিগ বি হসপিটালে ভর্তি হয়ে হসপিটালের পরিষেবা সম্পর্কে ট্যুইটবার্তায় জ্ঞানগর্ভ ভাষণ দেওয়া শুরু করলেন। অমিতাভের লাইভ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে নানাবতী হসপিটাল-এর বদনাম ঘুচে সুনাম আবার বৃদ্ধি পেতে শুরু করল।
এইটুকু পড়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলতে পারেন, ‘বিগ বি-র মতো ওই রকম মানের ব্যক্তির বিষয়ে কিছু বলার আগে অনেক অনুসন্ধানের প্রয়োজন ছিল।’
সত্যি কথা বলতে এই বিষয়ে খুব বেশি অনুসন্ধান না করলেও যেটুকু খোঁজ পেলাম তা যথেষ্টই ভাববার বিষয়।
কমবেশি ১৮ টা ঘর আর ২ টো মিনি আইসিইউ নিয়ে
মুম্বইতে বচ্চন পরিবারের সাকুল্যে ৩ টে বাংলো রয়েছে।
বিগ বি এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের দেখভালের জন্য
সপ্তাহভর ঘড়িধরে ২৪ ঘন্টা সেখানে ২ জন করে চিকিৎসকও থাকেন বলে বহুবার সংবাদমাধ্যমে খবর হয়েছে।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, দুজন লক্ষ্মণহীন কোভিড রোগীকে দেখতে আর কী লাগে ?
কিন্তু না, খোলামেলা ঘর সমেত নিজের বাংলো থাকতেও পশ্চিমবঙ্গের জামাই বাবাজীবনকে যেতে হলো সেই নানাবতী-তে।
আর এখান থেকেই অনেকের ভ্রু কোঁচকাতে শুরু করেছে।
অবশ্য বিগ বি-র বিষয় নিয়ে কার বা কাদের ভ্রু কোঁচকালো তা নিয়ে আমাদের কী, বিগ বি তাড়তাড়ি ভালো হয়ে উঠুক এটাই বড়ো কথা।ওষুধ কিনতে গিয়ে এই এক বিচিত্র অভিজ্ঞতা হলো । দুজন বচ্চন ভক্ত আর অসুধের দোকানের মালিকের আলোচনা বর্তমান মিডিয়া ও সেলিব্রিটিদের যোগাযোগ নিয়ে এই আলোচনা । আশার কথা বচ্চন পরিবারের সকলে সুস্থ আছেন এবং দ্রুত নিরাময় হবে আশা করা যায় ।
লোকে কিনা বলে , যত দিন যাচ্ছে মানুষের কাজের পিছনের কারণ সন্দেহের দোলাচলে আরো বেশি করে থাকবে , এই ভাবতে ভাবতে বাড়ি এলাম।