উত্তরপ্রদেশ সরকারের পর্যটন বিভাগের ব্যর্থতায় আজও ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটে স্থান পেলনা রত্নেশ্বর মহাদেব মন্দির
হীরক মুখোপাধ্যায় (১০ অগস্ট ‘২০):- ইতালিতে অবস্থিত ‘পিসার হেলানো মিনার’ (টাওয়ার)-এর থেকে কোনো অংশে পিছিয়ে না থেকেও শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশ সরকারের পর্যটন বিভাগের সামুহিক ব্যর্থতায় আজও বিশ্ব পর্যটন মানচিত্রে স্থান পেলনা বারানসী শহরের মণিকর্ণিকা ঘাটে অবস্থিত ‘রত্নেশ্বর মহাদেব মন্দির’।
এই বিষয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ‘আর্য সমাজ’-এর আন্তর্জাতিক প্রচারক মহারাজ কৃষ্ণ জোয়ারদার (আর্য) জানান, “সম্ভবতঃ যোগী আদিত্যনাথ এই বিষয়ে কিছু জানেননা বলে নীরব আছেন। এই স্থান যাতে অতিশীঘ্র ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’-এ স্থান পায় সেই বিষয়ে সচেষ্ট হওয়ার জন্য অবিলম্বে আমরা উত্তরপ্রদেশ সরকার এবং একই সাথে ভারত সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করব।”
যোগী আদিত্যনাথ মুখ্যমন্ত্রী রূপে উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর ভারতের শৈবসাধক সম্প্রদায় মনে করেছিলেন, ‘এবার হয়তো কিছু হবে’। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
‘রত্নেশ্বর শিব মন্দির’ সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে বিভিন্ন সময় ভারতের শৈবসাধক সম্প্রদায় সরাসরি উত্তরপ্রদেশ সরকারের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে জানিয়েছেন, “সবকিছু ছেড়ে দিয়ে শুধু এক ‘রামমন্দির’ নিয়েই মেতে আছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। ‘রত্নেশ্বর মহাদেব মন্দির’-কে নিয়ে কোনোদিনই কিছু ভাবেনি উত্তরপ্রদেশ সরকার বা ভারত সরকার। সরকার যদি শুধুমাত্র চিঠিচাপাঠি করে ‘ইউনেস্কো’-কে এই বিষয়টা জানাতো বা যাঁরা বিদেশ থেকে ভারতে ঘুরতে আসেন তাঁদের এই জায়গায় বেশিকরে ঘোরাতে আনতো তাহলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত।”
১৩৭২ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হয় ‘পিসার হেলানো মিনার’-এর। নরম মাটি ৫৫.৮৬ মিটার (১৮৩.২৭ ফুট) উঁচু এই স্থাপত্যের ভার ধরে রাখতে না পারার ফলে মিনার ৪ ডিগ্রি হেলে যায়।
অন্যদিকে ১৯ শতকের কোনো এক সময় তৈরী হয় ‘রত্নেশ্বর মহাদেব মন্দির’। ৭৪ মিটার (২৪৩ ফুট) উঁচু এই মন্দির হেলে রয়েছে ৯ ডিগ্রি।
‘পিসার হেলানো মিনার’-এর থেকেও বেশি উঁচু এবং বেশি হেলে থাকার পরেও শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশ সরকারের পর্যটন মন্ত্রকের ব্যর্থতায় ‘ইউনেস্কো-র ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’-এ আজও জায়গা পায়নি হিন্দুদের পবিত্র এই শিবমন্দির।
বিভিন্ন বই থেকে ‘রত্নেশ্বর মহাদেব মন্দির’ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানা যায়, কোথাও বলা হয়েছে ‘..মহারাজা মানসিংহ-র কোনো এক কর্মী তাঁর গর্ভধারিণী মা রত্না বাঈ-এর সম্মানে তৈরী করেছিলেন এই শিবমন্দির। মন্দির তৈরী করার পর ওই কর্মী গর্বের সাথে ঘোষণা করেছিলেন- মায়ের ঋণ মিটিয়ে দিলাম। ‘মায়ের ঋণ’ শব্দবন্ধ থেকেই এই মন্দিরের আর এক নাম ‘মাতৃঋণ মহাদেব মন্দির’। যদিও পরে ওই কর্মীর মায়ের অভিশাপেই এই মন্দির একদিকে হেলে যেতে শুরু করে।’
এই মন্দির নির্মাণ সম্পর্কে আর একটা মতও প্রচলিত আছে, সেই মত অনুযায়ী, ‘ইন্দোরের রাজমাতা অহল্যা বাঈ-এর এক সেবিকা রত্না বাঈ তাঁর নিজের নামে এই শিবমন্দির বানিয়েছিলেন। পরে এই খবর রাজমাতার কানে পৌঁছলে তিনি সেবিকাকে শাপ দেন। সেই শাপের ফলেই মন্দির একদিকে হেলতে শুরু করে।’
#Ratneswar_Mahadev_Mandir #Matririn_Mahadev_Mandir #ManikarnikaGhat_Varanashi #Dept_Of_Tourisam #Govt_Of_UttarPradesh #Govt_Of_India #AryaSamaj #Shiva_Worshipers_Of_India