কেন বড়ো হলাম – আফসোস কখনো কখনো মিষ্টি একটা অনুভূতি
ড:পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা,২৫ অগাস্ট ২০২০
●●●●●●●●●●●●●●●
ছোটবেলা থেকে পড়ে আসছি-
দুই আর দুইয়ে যোগ করলে চার হয়।
এখন আমার অনেক বয়স।
এখনো অন্যকিছু ভাবিনা।
আমার চিরকালই গুড়ের নারকোল নাড়ু,বাসি জিলিপি আর জিভেগজা খেতে খুব ভালো লাগতো।
এখনো সেগুলো একই রকম ভালো লাগে।
মনে আছে,
সাত বছর বয়সে যখন খুব বৃষ্টি নামতো হঠাৎ করে,
কাগজের নৌকো বানিয়ে বাড়ির পাশের রাস্তায় জলের স্রোতে তা ভাসিয়ে দিতাম নদী থেকে সাগরে চলে যাবে বলে।
আজও সে কান্ড করি।
বউ ছেলে হাসলেও করি।
কতদিন মাকে চুরি করে কৌটো উঁচু করে কনডেন্সড মিল্ক মুখে ঢালতে গিয়ে স্যান্ডো গেঞ্জিতে পড়ে মায়ের বকা খেয়েছি।
তবু ছাড়তে পারিনি।
ছাড়তে পারিনি এখনো।এই বয়সেও।
সবারির সব কথার মাঝে বোকা বোকা কথা বলা আমার আজন্ম অভ্যাস।
তখন বড়দের হাসির খোরাক হতাম।
এখন ছোটদের হই।
আজ পর্যন্ত কোনোদিন সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কোনো মানুষের থেকে কোনো বিষয়ে নিজেকে যোগ্য মনে করিনি।আজও করি না।
হীন হয়ে বেঁচেছিলাম।
হীন হয়ে বেঁচে আছি।
কে কি ভাববে মনে করে অনেক দরকারি কথা,সত্যি কথা এখনো ভিতরে লুকিয়ে রাখি।
আমার জন্য অপ্রয়োজনীয় মানুষেরও কি ভাবে, তাও এখনো আমার জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ।
আমার চারিদিকে অসংখ্য নেতা নেত্রী জ্ঞানী মানুষ।
তখনো ছিলো।এখনো আছে।
তখনকার মতো এখনো তাদের যুধিষ্ঠির ভেবে-
তাদের সব কথা ধ্রুব সত্য এটা না মানলে আমার কষ্ট হয়।
তখন আমাকে বাবা সাইকেল শেখানোর চেষ্টা করতো।এখন ছেলে করে।
তখন গাছের গুঁড়িতে ধাক্কা মারতাম।এখন মানুষ বা ল্যাম্পপোস্টে মারি সমান নৈপুণ্যে।
বাড়ির পাশে গঙ্গা তখন ছিলো।
সময় পেলেই নৌকো চড়ে এপার ওপার করতাম।
এখন আমি অনেক দূরে গঙ্গার থেকে।
তবুও নদীর বুকে মানুষ সমেত নৌকোর ছবি দেখলে আজও মনে হয় সওয়ারী হয়ে যাই।
কাঁচা পেঁয়াজ, সর্ষের তেল ,নূন লংকা মাখা ছাতু এখোনো ছাড়িনি।
কারো প্রশ্নের মুখে ভ্যাবাচ্যাকা খেতে এখনো আমার জুড়ি নেই।
শুনেছি পন্ডিতেরা বলে,বিখ্যাত হওয়ার আগে বড় হতে হয়।
বড় হওয়ার আগে পাল্টে ফেলতে হয় ভাবনা চিন্তা।পাল্টে ফেলতে হয় নিজেকে।
আমার আর বিখ্যাত হওয়া হলো না।
●●●●●●●●●●●
২৫.০৮.২০২০