তরিকুল ইসলাম লাভলু, বাংলাদেশ: করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গোটা বিশ্ব যখন পর্যুদস্ত ঠিক এমন পরিস্থিতিতেই মর্তে আসছেন দেবী দুর্গা। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরসহ সারাদেশে শুরু হয় মহালয়ার আচার।
ঘট স্থাপন ও পূজার মধ্য দিয়ে চলে দুর্গতিনাশিনী’ দেবী দুর্গাকে মর্ত্যে ‘নেমে’ আসার আহ্বান। মন্দিরে মন্দিরে চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবীকে আহ্বান করা হয়। সাধারণত আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন হয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। আশ্বিন মাসের এই শুক্ল পক্ষকে বলা হয় দেবীপক্ষ। দেবীপক্ষের শুরু হয় যে অমাবস্যায়, সেদিন হয় মহালয়া; সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মহালয়ার প্রাক সন্ধ্যায় ‘কাত্যায়নী মুনির কন্যা’ রূপে মহিষাসুর বধের জন্য দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে।
এ বছর মহালয়ার এক মাস পাঁচ দিন পর আগামী ২২ অক্টোবর থেকে পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গোৎসব শুরু হবে। এর কারণ হিসেবে হিন্দু শাস্ত্রবিদরা জানিয়েছেন, ধর্মীয় রীতিনীতির কারণে দুর্গোৎসব শুরুর মাস আশ্বিন এ বছর ‘মলো মাস’ তথা ‘অশুভ মাস’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যার কারণে আশ্বিনের বদলে এবারের দুর্গাপূজা শুরু হবে কার্তিক মাসে। বিশ্বাস ও পঞ্জিকামতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার দোলায় (পালকি) চড়ে স্বর্গলোক থেকে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) আসবেন (আগমন)। যার ফল হচ্ছে মড়ক।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রোগ ও মহামারির প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাবে। দেবী স্বর্গলোকে বিদায় (গমন) নেবেন গজে (হাতি) চড়ে। যার ফল হিসেবে বসুন্ধরা শস্যপূর্ণ হয়ে উঠবে। ঢাকেশ্বরী মন্দিরের প্রধান পুরোহিত রঞ্জিত চক্রবর্তী বলেন, মলো মাসে পূজাদি করা যাবে না। বৈদিকভাবেই নিষেধ আছে।’ ভোরে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে মহালয়ার অনুষ্ঠানের সূচনা করেন বাংলাদেশে ভারতের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত রীভা গাঙ্গুলী দাস। এরপর চণ্ডি পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মহালয়ার পর্ব।