ঐতিহ্য সম্পন্ন হুগলী মাদ্রাসা চালু করতে ১৯ সেপ্টেম্বর মহা সমাবেশের ডাক দিল মুসলিম সংগঠনগুলি

0
3027
Hoogly Madrasha
Hoogly Madrasha
0 0
Azadi Ka Amrit Mahoutsav

InterServer Web Hosting and VPS
Read Time:9 Minute, 45 Second

হুগলী মাদ্রাসা চালু করতে ১৯ সেপ্টেম্বর মহা সমাবেশের ডাক দিল মুসলিম সংগঠনগুলি

বিশেষ প্রতিবেদক

বর্তমান সংখ্যালঘু দরদি তৃণমূল সরকার হুগলী মাদ্রাসা বন্ধ করে দিয়েছে এই প্রতিবাদে এবং হুগলী মাদ্রাসা চালু করার দাবিতে ১৯ সেপ্টেম্বর মহা সমাবেশের ডাক দিল মুসলিম সংগঠনগুলি। ১৮১৭ সালে দানবীর হাজী মুহাম্মদ মহসীনের দান করা সম্পত্তিতে ইসলামী শিক্ষার প্রসারের লক্ষ্যে স্থাপন করা হয়েছিল হুগলী মাদ্রাসা । সময়ের বিচারে দেখা যাচ্ছে ওই একই সময়ে কলকাতায় প্রতিষ্ঠা হয়েছে হিন্দু স্কুল। সমসাময়িক হয়েও কালের গ্রাসে নয়, স্বাধীন ভারতের জনগণ দ্বারা নির্বাচিত সরকারের আমলেই হাজী মুহাম্মদ মহসীনের স্বপ্নের সমাধি ঘটেছে । অথচ এই মাদ্রাসাটি বাংলার নবজাগরণের অন্যতম প্রতীক হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার কথা ছিল। তা হয়নি। বাম আমলে এই মাদ্রাসাটি বন্ধ করার সব রকম প্রচেষ্টা হলেও শেষ পর্যন্ত তৎকালীন সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী আবদুস সাত্তারের হস্তক্ষেপে মাদ্রাসাটি বন্ধ না হয়ে অন্তত চালু ছিল । আজকে এই মাদ্রাসার প্রাঙ্গনে যে ইংরেজি মাধ্যম প্রাথমিক বিভাগ খোলা  হয়েছে  সেটা ছিল বাম আমলেরই সিদ্ধান্ত। এই মাদ্রাসার ইতিহাস বলছে, ইংরেজরা কোনদিন এর প্রতি অবহেলা দেখায়নি। বরং এই মাদ্রাসাটিকে সেই সময় বাংলার অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছিল ব্রিটিশরা।

যাইহোক আবদুস সাত্তারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মাদ্রাসাটিকে সচল রাখার উদ্দেশে হুগলী মাদ্রাসাকে মাদ্রাসা শিক্ষা দপ্তরের অধীনে আনা হয়। এর আগে পর্যন্ত হুগলী মাদ্রাসায় একমাত্র মাদ্রাসা যা স্কুল শিক্ষা দপ্তরের অধীনে ছিল । এখানে শিক্ষক থেকে যাবতীয় নিয়োগ প্রক্রিয়া হত পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে। বাম আমলে এই মাদ্রসাটিতে দীর্ঘদিন প্রধান শিক্ষক ছিল না। কিন্ত বন্ধ করা হয়নি বলে মুসলিম নেতাদের অভিযোগ। মুসলিম নেতাদের দাবি বাম সরকারের পতন হওয়ার পর তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরই মাদ্রাসাটির কফিনে শেষ পেরেক পোতা হয়েছে । যা এতদিন ধরে বামেরা করতে পারেনি, মাত্র কয়েক বছরের শাসনে মা-মাটি-মানুষের সরকার তা করে দেখিয়ে দিয়েছে।
এই মাদ্রাসাটি বন্ধ হওয়ার পর স্থানীয় মুসলিমরা যখন আন্দোলন করছেন ঠিক তখনই ১৭ জুন ২০১৫ সালে ওই মাদ্রাসার প্রাঙ্গনে গিয়ে হাজির হন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য ও লকেট চ্যাটার্জিরা । বিজেপি নেতারাও সেদিন মাদ্রাসটি অবিলম্বে খোলার দাবি জানিয়েছিলেন। এরপরেই ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই মাদ্রাসা পরিদর্শনে যান শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি । তাঁর কাছে অল বেঙ্গল মাইনোরিটি অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে আবু আফজল জিন্নাহ অনুরোধ করেছিলেন বামেরা মাদ্রাসাটিকে বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল, আপনারা অন্তত চালু রাখার ব্যবস্থা করুন। ছাত্র আমরা জোগাড় করে দেব। সেদিন পার্থবাবু আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্ত কথা রাখেননি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন আবু আফজল জিন্নাহ।
আজ মধ্য কলকাতার এক বেসরকারি বিদ্যালয়ে হুগলী মাদ্রাসাকে পুনরায় চালু করার দাবিতে এক সভা অনুষ্ঠিত হয় । এই সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে মা-মাটি-মানুষের সরকার ঐতিহ্যবাহী এবং বাংলার নবজাগরনের অন্যতম পীঠস্থান হুগলী মাদ্রাসাকে বন্ধ করে দিয়ে রাজ্যের সংখ্যালঘু সমাজের সঙ্গে বিশ্বাসভঙ্গ করেছে। দু মাস ধরে রাজ্যের সব জেলাগুলিতে হুগলী মাদ্রাসার করুণ পরিনতি নিয়ে সভা করা হবে বলে আজকের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর হুগলী মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে মাদ্রাসাটিকে অবিলম্বে খোলার দাবিতে বিশাল সমাবেশের করবেন মুসলিম নেতারা। এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন মুসলিম সংরক্ষণ মোর্চার নেতা আবু রিদা, অল বেঙ্গল মাইনোরিটি অ্যাসোসিয়েশনের আবু আফজল জিন্নাহ, নাজিবুল হক মল্লিক, ফুরফুরা শরীফ আহলে সুন্নাতুল জামাতের সম্পাদক, ফুরফুর শরীফের পীরজাদা নওসাদ সিদ্দিকী, আবদুল্লাহ হিল মারুফ, ইমতিয়াজ আহমেদ মোল্লা ও আইনজীবী আনিসুর রহমান প্রমুখ। এদিনে সভায় সব বক্তাই বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে এখন যা বলা হচ্ছে তা বিশ্বাসযোগ্য নয় । এর আগে সংখ্যালঘু দপ্তরের আধিকারিকরা নানা বিষয়ে আশ্বস্ত করলেও শেষ পর্যন্ত দেখা গেছে তা হয়নি। হুগলী মাদ্রাসাকে স্বমহিমায় আগের চেহারায় ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে এদিনের সভায় ঠিক হয়েছে।
বিশিষ্ট গবেষক, লেখক, সাংস্কৃতিক আন্দোলনের লড়াকু নেতা তথা উদার আকাশ পত্রিকার ও প্রকাশনের সম্পাদক ফারুক আহমেদ জানান, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপরিচালনা করতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মুসলিম সমাজের একচেটিয়া ভোট পেয়ে। বিগত সাত বছর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকালে সব থেকে অবহেলিত ও বঞ্চিত হয়েছে মুসলিম সম্প্রদায়। চাকরি, ভর্তি থেকে বিগত নির্বাচন গুলিতে জনপ্রতিনিধি দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি কোথাও সংরক্ষণ নীতির ১০০ শতাংশ রোষ্টার মানা হয়নি। মুখে মেকি দরদ ও বিজেপি জুজু দেখিয়ে আর মুসলিমদের মন জয় করা যাবে না কারণ তাদের পিঠে দেওয়াল ঠেকে গিয়েছে। ৬১৪ টি সরকারি মাদ্রাসাতে ব্যাপক ভাবে শিক্ষকের ঘাটতি থাকায় পঠন পাঠন বিঘ্ন হচ্ছে। রাজ্যের গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাটাই ভেঙে পড়েছে দক্ষ পরিচালকের অভাবে। তাই আজ রাজ্যের অচল শিক্ষা ব্যবস্থাটা নিয়েই প্রশ্নবাণে জর্জরিত রাজ্যসরকার। দ্রুত হুগলী মাদ্রাসাকে চালু না করলে আগামীতে মুসলিমদের সমর্থন দ্রুত হারাবে তৃণমূল সরকার যারফলে ক্ষমতায় চলে আসবে অন্য সরকার। শিক্ষা প্রসারে হুগলী মাদ্রাসা ও হুগলী মাদ্রাসার মসজিদ চালু করতে মুখ্যমন্ত্রী এবং সংখ্যালঘু মন্ত্রীপরিষদের মূল দায়িত্বে যেহেতু আছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাই এখনও আশার আলো দেখছি। তাঁর কাছে সবিনয় আবেদন করছি দ্রুত এই সংখ্যালঘুদের গর্বের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হুগলী মাদ্রাসা চালু করতে সঠিক পদক্ষেপ নিন এবং এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করুন। আর সেই সঙ্গে যে জেলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা বেশি সেই জেলার ডিএম ও পুলিশসুপারের দায়িত্বে কোনও মুসলিম আধিকারিকে দিন। এখন বাস্তবিক ২৩টি জেলার কোথাও মুসলিম পুলিশ আধিকারিক পুলিশসুপার পদে নেই কেন? সেই প্রশ্নও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের মনে উঠছে। এই বার্তাও যাচ্ছে সংখ্যালঘু কল্যাণে এই সরকারের নীতিগত অবস্থান প্রশংসার যোগ্য নয় বরং প্রশ্নের মুখে।”

About Post Author

Editor Desk

Antara Tripathy M.Sc., B.Ed. by qualification and bring 15 years of media reporting experience.. Coverred many illustarted events like, G20, ICC,MCCI,British High Commission, Bangladesh etc. She took over from the founder Editor of IBG NEWS Suman Munshi (15/Mar/2012- 09/Aug/2018 and October 2020 to 13 June 2023).
Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Advertisements

USD





LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here