“আলেয়া” নতুন আলোর দিশারী – চলচ্চিত্র পরিচালনায় আইপিএস অফিসার ড. হুমায়ুন কবীর

0
2350
Aleya The Film By Humayun Kabir IPS Pic 4
Aleya The Film By Humayun Kabir IPS Pic 4
0 0
Azadi Ka Amrit Mahoutsav

InterServer Web Hosting and VPS
Read Time:9 Minute, 52 Second

চলচ্চিত্র পরিচালনায় আইপিএস অফিসার ড. হুমায়ুন কবীর
প্রশাসন থেকে সাহিত্যের অঙ্গন কিংবা চলচ্চিত্র-পরিচালনা, সব অলিন্দেই তার স্বচ্ছন্দ যাতায়াত। পুলিশের উর্দিতে তিনি যেমন সফল অফিসার তেমনই লেখার জগতেও ক্রমশ পরিচিত হতে থাকা একটি নাম। সেই হুমায়ুন কবীর এবার ক্যামেরার পিছনে ছবি পরিচালনার দায়িত্বে। ডি আই জি ট্রাফিক পদে কর্মরত ড. হুমায়ুন কবীর তেতে ওঠা পাহাড় সামলে এখন কলকাতায়। তাঁর নতুন ছবির কাজ শেষ হল। ঈদ-উল-ফিতর এর আগের দিন (১৫.০৬.২০১৮) বড় পর্দায় আসছে “আলেয়া।”
সম্প্রতি হুমায়ুন কবীর-এর মুখোমুখি হয়েছেন ফারুক আহমেদ।​​​​​​​​​​
প্রশ্ন: অধ্যাপনা থেকে পুলিশে চাকরি তারপর লেখক হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠা, এখন আবার ছবি করছেন। নিজেকে আর কি কি ভূমিকায় দেখতে ইচ্ছে করে?                   
উত্তর: চারপাশের মানুষ এবং তার কাজকর্ম নিয়ে আমার  সীমাহীন কৌতুহল। এখনো পর্যন্ত যা যা করেছি  তার সব কিছুতেই চারপাশের মানুষ কে বুঝতে চেয়েছি। মানব মন আর হৃদয় এর সঙ্গে সংযুক্তির পথ খুঁজেছি। ভবিষ্যতের কাজ কর্মেও উদ্দেশ্য একই থাকবে। তবে এর পর কি কি করবো এখনই বলছিনা।যখন অধ্যাপনার কাজে যুক্ত ছিলাম তখনও ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলতে খুব ভালো লাগতো। পরে আমার এক পরিচিত যাঁকে আমি শ্রদ্ধা করতাম, তিনি আমাকে পুলিশের চাকরিতে আসার পরামর্শ দেন। আরও বেশি মানুষ কে এবং সমাজ কে কাছ থেকে দেখার সুযোগ পাবো এটা বুঝতে পেরেছিলাম সমাজের জন্য কিছু করার তাগিদ ও অনুভব করছিলাম। সেভাবেই পুলিশের চাকরির পরীক্ষা দেওয়া এবং চাকরিতে আসা।
প্রশ্ন: উপন্যাস লিখতে লিখতে ছবি করার কথা ভাবলেন কেন?
উত্তর: মাধ্যম হিসেবে লেখার চেয়ে চলচিত্র অনেক বেশি শক্তিশালী। চলচিত্রের আবেদন অনেক বেশি মানুষের কাছে পৌঁছয়। একটা অদ্ভুত সময়ের মধ্য দিয়ে আমরা চলেছি এই সময়ের সম্ভবনা এবং বিপন্নতার কথা মানুষকে জানাতেই ছবি করার ভাবনা। আলেয়ার গল্প আগে একটি পত্রিকায় শারদ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল। তারপর যখন ছবি করার প্রস্তাব পেলাম তখন আর দেরি করিনি। অনিকেত চট্টপাধ্যায় বিশেষ ভাবে সাহায্য করেছেন তিনি চিত্রনাট্য লিখেছেন।
প্রশ্ন: ছবির বিষয় কি?
উত্তর: ছবির প্রেক্ষাপট নিউটাউন থানা এবং ২০০২ সালের বসিরহাট ও হাসনাবাদ এলাকার কথা। ওই সময় একটা রাজ্যের সাম্প্রদায়িক ঘটনার প্রভাবও পড়েছিল বাংলার কিছু জায়গায়, বাদ যায়নি বসিরহাট ও হাসনাবাদ। শৈশব থেকে এক সঙ্গে বেড়ে ওঠা দুই ভিন্ন সম্প্রদায়ের চারটি মেয়ের গল্প নিয়েই ‘আলেয়া।’সেখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিষয় যেমন রয়েছে, তেমনই নাবালিকার বিয়ের বিরুদ্ধে বার্তা ও রয়েছে। ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র আলেয়ার অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু সে বিয়ে করতে চায়নি সে তখন দ্বাদশ শ্রেনী তে পড়ছে। আলেয়ার বান্ধবীরা চেষ্টা করেও তার বিয়ে আঁটকাতে পারেনি। তার বিয়ের দিনে এলাকায় সাম্প্রদায়িক হানাহানির পরিবেশ তৈরি হয় সেখান থেকে কয়েক বছর পর তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। সে পড়ে অকুলপাথারে। ছবি শুরু হয় নিউটাউন থানার প্রেক্ষাপটে। সেখানে আলেয়ার বন্ধু সুমনা সাব ইন্সপেক্টর পদে যোগ দেয়। তার নেতৃত্বে দুস্কৃতীদের বিরুদ্ধে এক গোপন অভিযান চালানোর সময় একটি দুর্ঘটনা ঘটে। এক নর্তকীর মৃত্যু হয় এর পরই শাস্তি স্বরূপ সুমনাকে বদলি হয়ে যেতে হয় বসিরহাটে। সেখানে সমাধান না হওয়া একটি কেস এর ভার এসে পড়ে সুমনার উপর। ঐ ঘটনার সূত্র খুঁজতে গিয়ে নিজের শৈশবের বন্ধুদের কাছে ফিরে যায় সুমনা। মুখোমুখি হয় কিছু আশ্চর্য্য সত্যের। থ্রিলারের মোড়কে বলা গল্পে একাধিক স্তর রয়েছে। সুমনা কী ভাবে রহস্যের সমাধান করে, কীভাবে জানতে পারে তার ছেলেবেলার বন্ধুদের পরিণতির কথা সেই গল্পই রয়েছে ছবিতে।
প্রশ্ন: ছবিতে করা অভিনয় করেছেন?
উত্তর: ছবিতে আলেয়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রিয়াঙ্কা সরকার। রুমানার চরিত্রে সায়নী ঘোষ। শ্যামার চরিত্রে অঙ্কিতা। এবং পুলিশ অফিসার সুমনার চরিত্রে তনুশ্রী চক্রবর্তী। দুটি মুসলিম এবং দুটি হিন্দু চরিত্র এই ছবির মূল চরিত্র। এছাড়া ও বাদশা মৈত্র রয়েছেন দুটি বিশেষ চরিত্রে।
প্রশ্ন: শোনা যাচ্ছে ছবিতে আপনি এবং আপনার স্ত্রী অভিনয় করেছেন?
উত্তর: একটি ছোট চরিত্রে ঐ সময় কাউকে পাওয়া যাচ্ছিলনা তাই আমাকে অভিনয় করতে হয়েছে। তবে খুব অল্প সময়ের জন্য চরিত্রটিকে পর্দায় দেখা যাবে। আমার স্ত্রী অনিন্দিতা দাশ কবীর ও শিক্ষিকার একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তবে সেটাও খুব অল্প সময়ের জন্য।
প্রশ্ন: ছবিটি কখন মুক্তি পাবে?
উত্তর: বর্ষার সময় টাকি তে আমরা টানা শুটিং করেছি। সম্পাদনার শেষ হল। ছবিটি রোজার ঈদ-এর আগের দিন মুক্তি পাবে আশা করছি।
প্রশ্ন: কি ভাবে দেখেন এখনকার সময়কে?
উত্তর: সারা পৃথিবী জুড়েই একটা অস্থিরতা রয়েছে। দেশে সাম্প্রদায়িকতা এবং সন্ত্রাসবাদ এই দুই সমস্যাই খুব পীড়া দেয়। মুসলিম সমাজের ব্যাপক অংশে শিক্ষার আলো পৌঁছনো খুব জরুরি। সেটা সম্ভব হলে সব অংশে মানুষের সচেতনতা বাড়বে। নিজেকে প্রকাশ করতে না পারার কষ্ট কিংবা পরিচিতি সত্ত্বার সংকট সবকিছুরই সুষ্ঠ সমাধান খোঁজার পথে এগোনো সম্ভব হবে। শিক্ষা সংবিধান প্রদত্ত অধিকার এবং দায়দায়িত্ব সম্পর্কে দায়িত্বশীল এবং সচেতন করে তোলে বলে বিশ্বাস করি। এই সময়ের সংকটকে এ ভাবেই মোকাবিলা করতে হবে।
প্রশ্ন: আপনি নিজে সংযুক্ত রাষ্ট্রসংঘের হয়ে বসনিয়া-হারজিগোভিনায় শান্তি মিশনে বা পিস কিপিং ফোর্স এ কাজ করেছেন। কি ভাবে দেখেন রোহিঙ্গা শরণার্থী দের সমস্যা কে?
উত্তর: বসনিয়ায় পাঁচ লক্ষ্যের বেশি মানুষ হানাহানিতে মারা যায়। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিল মুসলিম। মৃত্যু হওয়া মানুষদেরকে গণকবর দেওয়া হয়। এর মধ্যেও ভালবাসা বাঁচার আশা যোগায়। ভালবাসা ও বসনিয়ার শান্তি মিশনে কাজ করার অভিজ্ঞতা নিয়ে ‘গণকবরের দেশ বসনিয়া’ নামে আমার লেখা একটি উপন্যাস আগেই প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে যে এথনিক ক্লেনজিংয়ের ঘটনা চোখে পড়েছিল তা লেখায় তুলে ধরেছি। হানাহানিতে প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষ ওই সময় মারা গিয়েছেন। তাঁদের কথা আর ওই মর্মান্তিক দৃশ্য আজও মনকে গভীর ভাবে ভাবায়।রাজনীতির মধ্যে যাবো না কিন্তু রোহিঙ্গারাও নির্যাতিত নিপীড়িত। রোহিঙ্গারাও প্রবল দুর্দশার মধ্যে রয়েছেন। এই সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান হওয়াটা খুব জরুরি। এই মানব হনন আমাকে গভীর ভাবে ব্যতীত করে ও পীড়া দেয়। আগামীতে বসনিয়ার উপর লেখা আমার উপন্যাটিও ছবি করব প্রডিউসার পেলে।​ এখন একটা নতুন সিনেমা তৈরীর কাজে হাত দিয়েছি।

About Post Author

Editor Desk

Antara Tripathy M.Sc., B.Ed. by qualification and bring 15 years of media reporting experience.. Coverred many illustarted events like, G20, ICC,MCCI,British High Commission, Bangladesh etc. She took over from the founder Editor of IBG NEWS Suman Munshi (15/Mar/2012- 09/Aug/2018 and October 2020 to 13 June 2023).
Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Advertisements

USD





LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here