কলকাতায় ‘গহনা ও রত্নের অভিন্ন সুবিধা কেন্দ্রে’-র (কমন ফেসিলিটি সেন্টার) কাজ শুরু হয়ে গেল

0
1378
Jewel
Jewel
0 0
Azadi Ka Amrit Mahoutsav

InterServer Web Hosting and VPS
Read Time:14 Minute, 17 Second

কলকাতায় ‘গহনা  রত্নের অভিন্ন সুবিধা কেন্দ্রে‘- (কমন ফেসিলিটি সেন্টারকাজ শুরু হয়ে গেল

· কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীনে গোটা দেশে গহনা ও রত্নের অভিন্ন সুবিধা কেন্দ্র গড়ে তুলছে জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিল হীরের জন্য চারটি সুবিধা কেন্দ্র এরই মধ্যে গড়ে তোলা হয়েছে, সেখানে কাজও শুরু হয়েছে।

· ওই চারটি সুবিধা কেন্দ্র গড়ে উঠেছে গুজরাতের আমরেলি, পালানপুর, বিসনগর ও জুনাগড়ে। 

ভারতে গহনা ও রত্ন শিল্পে দক্ষতা বাড়াতে তাদের আরও ক্ষমতায়ণের জন্য কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রক বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। সংশ্লিষ্ট শিল্পক্ষেত্রের জন্য সহায়ক নীতি প্রনয়ণ করা ছাড়াও মন্ত্রক পরিকাঠামো উন্নয়নেরও ব্যবস্থা করছে। কমন ফেসিলিটি সেন্টার তথা অভিন্ন সুবিধা কেন্দ্র সেই কারণেই গড়ে তোলা হচ্ছে। 

কলকাতার বউ বাজারে সম্প্রতি আনুষ্ঠানিক ভাবেই শুরু হল অভিন্ন সুবিধা কেন্দ্রের কাজ। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা শ্রীমতি রূপা দত্ত, জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের (জিজেইপিসি) চেয়ারম্যান শ্রী প্রমোদ আগরওয়াল, জিজেইপিসি-র কলকাতা স্থিত আঞ্চলিক অধিকর্তা শ্রী প্রকাশ পিঞ্চা, কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের ডেপুটি সেক্রেটারি শ্রী সেন্থিলনাথন এবং স্বর্ণ শিল্প বাঁচাও কমিটির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সব্যসাচী রায় সহ আরও অনেকে। বউ বাজার ও আশপাশের এলাকার ছোট ও মাঝারি স্বর্ণশিল্প প্রতিষ্ঠানগুলির উৎপাদন ও গুনমাণ বাড়াতে এই অভিন্ন সুবিধা কেন্দ্র সাহায্য করবে। এই কমন ফেসিলিটি সেন্টারেই নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচয় ঘটবে স্থানীয় স্বর্ণশিল্পী ও ছোট কারিগরদের। হিসাব মতো বউবাজার ও সংলগ্ন এলাকা মিলিয়ে গহনা ও রত্নের যে শিল্প তালুক রয়েছে তার সঙ্গে যুক্ত প্রায় এক লক্ষ স্বর্ণশিল্পী তথা কারিগর এতে উপকৃত হবেন, যাঁরা এতোদিন মূলত হাতেই গহনা বানান।

প্রান্তিক শ্রমিক ও কারিগরদের উৎপাদন ক্ষমতা ও উৎপাদিত পণ্যের গুনমান বাড়াতে জিজেইপিসি স্থানীয় বাণিজ্য সংগঠন তথা লোকাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের সাহায্যে এই কমন ফেসিলিটি সেন্টারগুলি গড়ে তুলছে। ইতিমধ্যেই গুজরাতের আমরেলি, পালানপুর, বিসনগর ও জুনাগড়ে হীরে শিল্পের জন্য চারটি অভিন্ন সুবিধা কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানেই কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। শুধু তা নয়, তারা প্রমাণ করে দিয়েছে যে এ ধরনের অভিন্ন সুবিধা কেন্দ্রের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উৎপাদন ক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়ানো যায় এবং তাদের উৎপাদিত পণ্যকে রফতানিযোগ্য করে তোলাও সম্ভব। দক্ষিণ ভারতের কোয়েম্বাত্তুরেও একটি কমন ফেসিলিটি সেন্টার গড়ে তোলার কাজ চলছে। আশা করা হচ্ছে সেখানে এ বছর মার্চ মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে। 

কমন ফেসিলিটি সেন্টার তথা অভিন্ন সুবিধা কেন্দ্রের মূল উদ্দেশ্য পরিষ্কার। এমনিতে ছোট কারিগর বা শিল্পীরা কোনওভাবেই অতি আধুনিক প্রযুক্তির মেশিন বা যন্ত্র ব্যবহার করতে পারে না। কারণ সেগুলির জন্য বড় অঙ্কের মূলধন প্রয়োজন। কমন ফেসিলিটি সেন্টার গড়ে সেখানে যদি সেই সব আধুনিক প্রযুক্তির মেশিন বা উপকরণের ব্যবস্থা রাখা যায়, তা হলে স্থানীয় কারিগররা তা ব্যবহার করতে পারেন। তাতে যেমন তাঁদের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়বে, তেমনই উৎপাদিত পণ্য গুনগত ভাবে আরও ভাল হবে।

কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা রূপা দত্ত বলেন, “গহনা ও রত্ন শিল্পে দেশের পিছিয়ে পড়া অংশের প্রায় চল্লিশ লক্ষ মানুষ কাজ করেন। এবং ভারত থেকে প্রায় চল্লিশ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের গহনা ও রত্ন রফতানি হয়। এই শিল্পক্ষেত্রের আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের লক্ষ্য হল ২০২৫ সালের মধ্যে এই শিল্প থেকে রফতানি বাণিজ্যকে ৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যে পৌঁছে দেওয়া।” 

তিনি আরও বলেন, “কমন ফেসিলিটি সেন্টারের মাধ্যমে উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি আমাদের লক্ষ্য হল ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ক্ষমতায়ণ ঘটানো। যাতে তারাও রফতানি বাণিজ্য শুরু করতে পারে। ছোট শিল্প ক্ষেত্রগুলির পক্ষে নতুন ও আধুনিক প্রযুক্তি খাতে বড় বিনিয়োগ করা সম্ভব হয় না। কমন ফেসিলিটি সেন্টার এই অভাবটাই পূরণ করবে। কারিগর ও প্রযুক্তির মধ্যে সেতুবন্ধন করবে এই উদ্যোগ।”

বর্তমানে গহনা ও রত্নের সঙ্গে যুক্ত অধিকাংশ শিল্পী ও কারিগরই কাজের চুক্তিতে উৎপাদন করেন। অর্থাৎ পাইকারি বিক্রেতা বা উৎপাদন সংস্থার থেকে তাঁরা কাজের বরাত নেন, তার পর তা শেষ করে মজুরি পান। এই স্বর্ণশিল্পীরা প্রধানত ছোট শহর বা মফস্বলে থেকে কাজ করেন। তাঁরা পুরনো পদ্ধতিতেই মূলত গহনা তৈরি করেন। হাতে গোণা কিছু প্রতিষ্ঠানে কাস্টিংয়ের জন্য আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার হয় বা ফিনিশিংয়ের জন্য টাম্বলিং কিংবা ম্যাগনেটিক পলিশার ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।

দ্বিতীয় শ্রেণির শহর তথা কোয়েম্বাত্তুর, হায়দরাবাদ, জয়পুর, রাজকোট এবং প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় এখনও কাজ হয় পুরনো প্রযুক্তিতে। উৎপাদিত পণ্যের গুনমানে স্বাভাবিক ভাবেই এর প্রভাব পড়ে। কমন ফেসিলিটি সেন্টার সেই অনগ্রসরতা দূর করবে। সার্বিক ভাবে উৎপাদন ক্ষমতা যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনই সময় বেঁধে উৎপাদিত পণ্য সরবরাহ করার শৃঙ্খলা আসবে এই শিল্পে। ক্রেতাদের সমস্ত চাহিদা মেটাতে এক ছাদের তলায় সমস্ত রকম কাজ সম্ভব হবে এর ফলে। তাতে ছোট ও মাঝারি শিল্পের আয় বাড়বে এবং তা সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক হয়ে উঠবে। 

সিএফসি গুলির কর্মক্ষমতা:

সিএফসিকত বর্গ ফুট জায়গাকত জন উপকৃতমোট হীরা তৈরী হয়েছে
বিসনগর২৩৯৮৫০+২৫ লক্ষ
পালানপুর২৬০০১৬৬+২৩ লক্ষ
আমরেলি১৯৬৭১৮+৬ লক্ষ
জুনাগড়১৭৯৫১০২+৪ লক্ষ
কোয়েম্বাটোরএ বছর মার্চ এর মধ্যে কাজ সমাপ্ত হবে  

কলকাতায় যে কমন ফেসিলিটি সেন্টার তথা অভিন্ন সুবিধা কেন্দ্র গড়ে উঠেছে তা স্থানীয় স্যাঁকরা তথা স্বর্ণশিল্পীদের কাজের মানোন্নয়নে সাহায্য করবে। স্বর্ণ শিল্প বাঁচাও কমিটির ভবনেই এই কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। তারাই এই সুবিধা কেন্দ্র পরিচালন করবে এবং স্থানীয় কারিগররা তাতে উপকৃত হবেন। স্বর্ণ শিল্প বাঁচাও কমিটি ছাড়াও হাওড়া জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন, বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতি, কলকাতা জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরাও সেদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তা ছাড়া এই সূত্রে পশ্চিমবঙ্গে এসে সিঙ্গুরে ইমিটেশন গহনার শিল্পতালুকও পরিদর্শন করেন কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা রূপা দত্ত। সেখান থেকে রফতানি বাণিজ্যের সম্ভাবনা কতটা তা তিনি খতিয়ে দেখেন। আশা করা হচ্ছে, কলকাতার কমন ফেসিলিটি সেন্টার আগামী এপ্রিল মাস থেকে কাজ শুরু করে দেবে।

About Post Author

Editor Desk

Antara Tripathy M.Sc., B.Ed. by qualification and bring 15 years of media reporting experience.. Coverred many illustarted events like, G20, ICC,MCCI,British High Commission, Bangladesh etc. She took over from the founder Editor of IBG NEWS Suman Munshi (15/Mar/2012- 09/Aug/2018 and October 2020 to 13 June 2023).
Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Advertisements

USD





LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here