স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জারি করা অদ্ভুত গাইড লাইন নিয়ে দ্বিধায় রাজ্যের প্রায় ১৯ হাজার এএনএম ও ৫২ হাজারের বেশি আশা কর্মী

0
2428
West Bengal - Tourism
West Bengal - Tourism
0 0
Azadi Ka Amrit Mahoutsav

InterServer Web Hosting and VPS
Read Time:10 Minute, 17 Second

স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জারি করা অদ্ভুত গাইড লাইন নিয়ে দ্বিধায় রাজ্যের প্রায় ১৯ হাজার এএনএম ও ৫২ হাজারের বেশি আশা কর্মী

হীরক মুখোপাধ্যায় (১৫ এপ্রিল ‘২০):- পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত তৃণমূল স্তরের প্রায় ১৯ হাজার এএনএম ১, এএনএম ২ এবং ৫২ হাজারের বেশি আশা স্বাস্থ্য কর্মীদের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন একাধিক নিম্নমেধার অযোগ্য আধিকারিকের অপরিণাম দর্শী নির্দেশে ঘোরতর সঙ্কটে পড়তে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের তামাম এএনএম ১ ও এএনএম ২, এবং আশা পর্যায় ভুক্ত স্বাস্থ্য কর্মীরা।

গত ১৩ এপ্রিল ডিরেক্টর অব হেল্থ সার্ভিসেস এবং ডিরেক্টর অব মেডিক্যাল এডুকেশন-এর যৌথ স্বাক্ষরিত এক গাইড লাইন (মেমো নম্বর : এইচ/এসএফডাব্লুবি/২৩এম-০১-২০২০/২৯০ তারিখ : ১৩/৪/২০২০)-এর পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছেন রাজ্যের প্রায় ১৯ হাজার এএনএম ১, এএনএম ২ এবং ৫২ হাজারের বেশি আশা কর্মীরা।

‘কোভিড ১৯’-এর প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্য ভবন থেকে জারি করা ওই নির্দেশনামার ‘এ’ বিভাগে, কোভিড ১৯-এর পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে রাজ্যের গর্ভবতী মহিলাদের কীভাবে দেখভাল করতে হবে সেই সম্পর্কে কিছু গাইড লাইন দেওয়া হয়েছে।

গাইডলাইন জারি করে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে এএনএম ও আশা কর্মীদের বলা হয়েছে, উন্নতমানের পরিষেবা প্রদানের জন্য তাঁরা সর্বাগ্রে যেন সেই গর্ভবতী মহিলাদের চিহ্নিত করেন যাঁরা হাই রিস্ক প্রেগন্যান্সি পর্যায়ে রয়েছেন। অন্যান্য গর্ভবতী মহিলা ও সদ্য প্রসব করা মায়েদের অনুপ্রেরিত করা হোক তাঁরা যেন প্রয়োজনে এএনএম ও আশা কর্মীদের সাথে দূরভাষ মাধ্যমে যোগাযোগ করেন।

অন্যদিকে এএনএম ও আশা কর্মীদের বলা হয়েছে, ইচ্ছা হলে তাঁরা দূরভাষের মাধ্যমে গর্ভবতী মহিলাদের এন্টি নেটাল কেয়ার সম্পর্কে উপদেশও দিতে পারেন।
এর পাশাপাশি স্বাস্থ্য ভবন থেকে জারি করা ওই গাইড লাইনে আরো বলা হয়েছে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও সংক্রমণ নিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণ করেই বাধ্যতামূলক ভাবে এএনএম ও আশা কর্মীদের এন্টি নেটাল পরিষেবা প্রদান করতে হবে।

স্বাস্থ্য ভবন থেকে জারি করা এই গাইড লাইনের পরিপ্রেক্ষিতেই এখন চোখে সরষে ফুল দেখছেন এএনএম ১, এএনএম ২ ও আশা কর্মীরা। তাঁরা ভেবে পাচ্ছেন না ঠিক কোন পদ্ধতি অবলম্বন করলে সংক্রমণ নিরোধক ব্যবস্থা সহযোগে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে একজন গর্ভবতী মহিলার যাবতীয় অসুবিধা নিরীক্ষণ করা সম্ভবপর হবে।

চিকিৎসা পরিষেবা সম্পর্কে খোলামেলা আলোচনা করতে গিয়ে অনেক চিকিৎসকই বলে থাকেন, “রোগীর নাড়ি ধরে না দেখলে বা শরীর স্পর্শ না করে হয়তো অনেক কিছুই করা সম্ভব কিন্তু উপযুক্ত চিকিৎসা করাটা মোটেও সম্ভব নয়।”

সংবাদ মাধ্যমের সামনে প্রশ্ন ছুঁড়ে হলুদ, গোলাপী এবং বেগুনি শাড়ি পরিহিতা বিভিন্ন নামে চিহ্নিত সেবিকারা জানতে চেয়েছেন “কোনো গর্ভবতী মহিলার বাড়ি গিয়ে নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে নয় জানতে চাওয়া হলো, তাঁর জ্বর, হাঁচি-কাশি হয়েছে নাকি বা ঠিকমতো মল-মূত্র ত্যাগ বা স্রাব হচ্ছে নাকি।

কিন্তু, গর্ভবতী মহিলার শরীরে কতটা জ্বর রয়েছে বা বর্তমান রক্তচাপ ঠিক কতটা রয়েছে কিংবা প্রয়োজনে ইঞ্জেকশন দিতে হলে বা বিভিন্ন কারণে (হিমোগ্লোবিন, ব্লাড সুগার ইত্যাদি) রক্ত সংগ্রহ করতে হলে রোগীর শরীর স্পর্শ ছাড়া তা কীভাবে সম্ভব ?”

গাইড লাইনে এই প্রশ্নের বিষয়ে যেমন কোনো আলোকপাত করা নেই, ঠিক তেমনই কীভাবে সংক্রমণ নিরোধক ব্যবস্থা সহকারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে গর্ভবতীদের বা সদ্য প্রসবিত মায়েদের রক্তচাপ দেখতে হবে বা রক্ত সংগ্রহ করতে হবে বা এই প্রসঙ্গে ভবিষ্যতে কোনো প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে কিনা সেই বিষয়েও কিছু উল্লেখ নেই।

সব থেকে চিন্তার বিষয়, ‘নভেল কোরোনা ভাইরাস’ সম্পর্কিত রোগ ‘কোভিড ১৯’ এমন এক ধরণের সংক্রামক ব্যাধি যা খোলাচোখে দৃষ্টিগোচর হয়না বা চিহ্নিত করা যায়না।
তার উপর এই মুহুর্তে রাজ্যের অধিকাংশ এএনএম ১, এএনএম ২, আশা বা অন্য সেবিকারা যখন তাঁদের চাহিদামাফিক স্যানিটাইজার, মাস্ক বা গ্লাভস পায়নি বা পাচ্ছেনা সেখানে প্রয়োজনে গর্ভবতীদের বাড়ি পাঠিয়ে এই সেবিকা ও গর্ভবতীদের পরিবারকে কী আরো মারাত্মক বিপদের মুখে ফেলা হচ্ছে না !

আমাদের সবাইকেই মাথায় রাখতে হবে আপাত দৃষ্টিতে কেউই বুঝতে পারবেন না কে ‘কোভিড ১৯’ রোগের বাহক বা আক্রান্ত রোগী।

এই পরিস্থিতিতে বিনা মাস্ক, গ্লাভস বা পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইক্যুইপমেন্ট (পিপিই) -এর কোনো সেবিকা গিয়ে যদি কোনো ‘কোভিড ১৯’ রোগের বাহক বা আক্রান্ত গর্ভবতীর শরীর স্পর্শ করেন, সেক্ষেত্রে সেই সেবিকা তাঁর কর্মস্থলে ফিরে এসে যেমন নিজের অজান্তে সহকর্মী ও চিকিৎসকদের আক্রান্ত করবেন তেমনই বাড়ি ফিরে তাঁর নিজের পরিবারের সদস্যদেরও আক্রান্ত করবেন।

আবার এর উল্টোদিকে যদি ‘কোভিড ১৯’ রোগের বাহক বা আক্রান্ত কোনো সেবিকা কোনো নিরোগ সুস্থ গর্ভবতী মহিলাকে দেখতে যান সেখানেও একই সমস্যা সামনে আসবে।

এইরকম এক ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গে স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষকর্তারা কীভাবে যে এক হেঁয়ালি ভরা গাইড লাইন জারি করলেন তা ভাবতেও অবাক লাগে।

এই বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের একাধিক শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো জায়গা থেকেই সদর্থক কোনোরকম উত্তর মেলেনি।
কোনো আধিকারিক “ব্যস্ত আছি” বলে যেমন দায় এড়িয়েছেন, তেমনই কেউ বলেছেন “বিষয়টা আমার জানা নেই”। আবার কেউ বলেছেন “এ বিষয়ে যাবতীয় তথ্য পরিবেশন করবেন মুখ্যমন্ত্রী।”

এমনিতেই রাজ্যের হলুদ, গোলাপী শাড়ি পরিহিতা স্বাস্থ্য কর্মীরা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মধারার উপর আর তেমন আস্থা রাখতে পারছেননা। সুপ্রিম কোর্টের আদেশ সত্ত্বেও তাঁরা স্থায়ী নার্সদের মতো সমকাজে সমবেতন পাচ্ছেননা। তাঁর উপর গোলকধাঁধা তুল্য এই গাইডলাইন তাঁদের ভেতর ভেতর আরো ক্ষুব্ধ করে তুলেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক সেবিকাই জানিয়েছেন, “সংসারে অর্থের অভাবের কারণেই এই কাজে এসেছি। আমরা অনেকেই চুক্তি ভিত্তিক কর্মী, তাই সত্যি কথা বললে যেকোনো সময় কাজ থেকে আমাদের বহিষ্কার করা হতে পারে। তাই এই প্রসঙ্গে কিছুই বলবনা।”

তবে সংবাদমাধ্যমের সামনে তৃণমূল স্তরের এই স্বাস্থ্য কর্মীরা সরকারের বিরুদ্ধে মুখ না খুললেও তাঁদের চোখের চাউনি, শারীরিক ভাষা বুঝিয়ে দিয়েছে “মাইনে বাড়াবার মুরোদ না থাকলেও এই সরকার কিল মারার গোঁসাই।”

পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল স্তরের তামাম স্বাস্থ্য কর্মীদের মুখের দিকে তাকালে মনে হচ্ছে, সরকারের এই গাইড লাইন যেন তাঁদের প্রত্যেকের হাতে স্বেচ্ছায় ‘যমের বাড়ি’ যাওয়ার ‘কনফার্ম টিকিট’ ধরিয়ে দিয়েছে। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।

West Bengal Medical Support2
West Bengal Medical Support2

Anti_Natal_Care_Services #Guideline #Issued_By_Department_Of_Health_And_FW #State_FW_Bureu #Govt_Of_WB #Depresed #Frontline_Healthworkers #ANMs #ASHAs #Govt_Work_Culture #Health_News #Health_Scenario #Health_Hazzard #Novel_Corona_Virus #Covid19 #Corona_Pandemic

About Post Author

Editor Desk

Antara Tripathy M.Sc., B.Ed. by qualification and bring 15 years of media reporting experience.. Coverred many illustarted events like, G20, ICC,MCCI,British High Commission, Bangladesh etc. She took over from the founder Editor of IBG NEWS Suman Munshi (15/Mar/2012- 09/Aug/2018 and October 2020 to 13 June 2023).
Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Advertisements

USD





LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here