সেই ফেলে আসা দিনগুলি বেগম আখতার কি “দিল কি বাত কাঁহি নাহি জাতি”
আমি আখতারি
ড:পলাশ_বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা,৮ অক্টোবর ২০২০
●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●
(গতকাল গজল সম্রাজ্ঞী বেগম আখতারের একশো সাত তম জন্মদিন ছিলো।আজ এই লেখা বাস্তবের সঙ্গে কলমের কল্পনার মিশেলে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ ছাড়া আর কিছু নয়,তাঁর কাল্পনিক জবানীতে)…..
●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●
[জগতের কোনো মূল্যবান বস্তু
যন্ত্রণার আগুনে পোড়া
অগ্নিশুদ্ধ জীবনের থেকে মূল্যবান নয়।
হৃদয়ের তন্ত্রীতে ঝংকারের রূপকথার
সব সুর,জমে থাকা কান্নার অন্তর থেকে
চুঁইয়ে পড়া,রাজহাঁসের পাখা ছোঁয়া
স্ফটিক স্বচ্ছ অপাপবিদ্ধ অমৃতধারা।
জগতের,সব ব্যাথায় মোড়া সংগীতের
আর এক মহাকাব্যিক নাম
আখতারি বাই]……
হ্যাঁ ।আমি সেই মেয়ে,
যাকে তোমরা স্বনামধন্যা,সংগীত রসিকের নয়নের মনি,যশস্বী বেগম আখতার বলে জানো।
হিন্দুস্থানী ক্লাসিকাল মিউজিকের
গজল,দাদরা,ঠুমরি ঘরানার সম্রাজ্ঞী,
মেহেদী হাসান, পন্ডিত যশরাজ,
বিসমিল্লা খান,রবিশঙ্করের কাছে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি পাওয়া,
সংগীত নাটক একাডেমি, পদ্মশ্রী,ও
পদ্মভূষণ ভূষিত তোমাদের সেই দুঃখী
লাডলি,’মালিকা-এ-গজল’-
বেগম আখতার।
উত্তরপ্রদেশের সরযূ নদীর তীরে
বহু ইতিহাসের স্বাক্ষী ফৈজাবাদ শহরে আমার জন্ম।
দিনটা ছিলো উনিশশো চোদ্দ সনের
সাত’ই ,অক্টোবর।
বাবা আসগার হুসেন ছিলেন লখনৌয়ের
সিভিল জাজ।
মা ছিলেন,লোকে বলে, উচ্চশ্রেণীর বারবনিতা-
বাবার ভালোবেসে বিয়ে করা ডাকসাইটে সুন্দরি দ্বিতীয় স্ত্রী,মুস্তারি বাই।
তার গর্ভের যমজ কন্যার একজন-
এই আমি।
কোকিল কণ্ঠী মা আমার,
আমার কাছে মাতৃমূর্তিই ছিলো।
পাঁকে জন্মানো পদ্মফুলের মতো,
পঙ্কিল জীবন যাপন করা মায়েরাও
মা’ই হয়।
মা গাইতে ভালোবাসতো।
তার শ্বশুরকুল যদিও তা মেনে নেয়নি।
এই বিপন্নতার সাথে,তার জীবনের আরো
এক ভয়ংকর বিপর্যয়-
আমার যমজ বোন জোহরার –
খাদ্যে বিষক্রিয়ায় অকাল মৃত্যু।
শোকে পাথর যন্ত্রণাক্লিষ্ট মা, বাবার থেকে বিচ্ছিন্ন হলেন এই সময়।
আমিও সেই শিশুবয়সেই চিরকালের জন্য
বঞ্চিত হলাম পিতৃস্নেহ থেকে।
জগতের আরো এক এবং একমাত্র স্বজন
মা’কেও পাছে হারাতে হয়-
সেই ভীতির তীব্রতায়-
শরীর মন ও আত্মার সর্বশক্তি দিয়ে আঁকড়ে ধরলাম তাকে।
পরবর্তীতে আরো বড় হলাম যখন
তখন বুঝেছিলাম, গালিব!ওহ গালিব!
যন্ত্রণার ভোগে,উপভোগে-
আমি তোমার নারী সংস্করণ।
বারে বারে গানে, সুরে তা স্মরণ করেছি তাই।
মা মুস্তারি ছিলো আর পাঁচটা সাধারণ স্নেহশীলা মায়ের মতো অপত্য স্নেহে পাগলী।
তার বংশগতির ধারায় প্রবলভাবে বইতো
যে সুরের স্রোত,
তাকে উপেক্ষা করে,সে তাই চেয়েছিলো,
আমি পড়াশোনা করি,বিয়ে করে সুখী সংসারী হই।
সৃষ্টির দুঃখী নাগপাশ থেকে মুক্তি পেয়ে মুক্ত জীবন যাপন করি।
কিন্তু একরোখা ছিলাম আমি।
মায়েরই মতো।
তাই সে বয়সেই মানিনি তার কথা।
সুর আমাকে চুম্বকের মতো টানতো।
প্রথাগত শিক্ষার অত্যাচার
আমার কাছে লোহার বেড়ি মনে হতো।
আমি কাঁদতাম।বিদ্রোহী হতাম।
সুরের হাত ধরে খুঁজতাম আমার মুক্তি।
আমার সুরের প্ৰতি পাগল করা আবেগ, আর স্মৃতিশক্তি দেখে,
আমার মামা প্রথমবার এই আখতারির জীবনে আবির্ভূত হয়েছিলো ফেরেস্তা হিসাবে।
তার কথায় সাব্যস্ত হয়ে মা রাজি হয় আমাকে ,গুরুর কাছে তালিম দেওয়ানোতে।
মনে পড়ে;
আমার প্রথম গুরু ছিলেন,
বিখ্যাত সারেঙ্গী বাদক,
উস্তাদ ইমদাদ খান।
কিন্তু প্রথমেই ছন্দপতন।
তার তালিম দেওয়া রাগ কামদ
অত্যন্ত দুরূহ ঠেকেছিলো সহজ সরল আমার কাছে।
লোকসঙ্গীতের চিরায়ত সুরে আকৃষ্ট সেই আমি’কে তাই ছাড়তেই হলো তার প্রথম গুরুর সান্নিধ্য।
নতুন আশ্রয় হলো গয়ায়।
উস্তাদ গুলাম মহম্মদ খানের কাছে নাড়া বাঁধলো
তোমাদের আখতারি।
সে পর্বও শেষ হলো অচিরেই।
উনিশশো বাইশ সনে ফিরতে হলো
জন্ম শহর ফইজাবাদে।
সেখানে মাত্র আট বছর বয়স থেকে
দীর্ঘ চার বছর,
পাতিয়ালা ঘরানার উস্তাদ-
আতা মহম্মদ খানের কাছে শুরু হলো-
আমার প্রথম নিবিড় অনুশীলনের অধ্যায়।
অনুশীলনের একঘেয়েমি আর
বৈচিত্রহীনতায় হাঁফিয়ে উঠেছিলাম আমি।
অধৈর্য্য লাগতো।পালাতে ইচ্ছা করতো সব ছেড়ে।
সেরকমই একটা দিনে,
উস্তাদের উদাত্ত গলায় রাগ গুণকালি শুনে যেন সম্মোহিত হয়ে পড়লাম আমি।
সুরের সঙ্গে মনের মিলনে
সেই বোধকরি প্রথমবার,
মানব আত্মা ও সুরের পরমাত্মার মিলনে
অপার্থিব পুনর্জন্ম হলো আমার।
এরপর সেই উনিশশো সাতাশ সন।
মা, বেটি এবং উস্তাদ,
তিনজনে মিলে এলাম
তৎকালীন ভারতীয় সুর সাম্রাজ্যের রাজধানী কলকাতায়।
সেখানে সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে আমার পরিচিতি ঘটলো।উত্তরণ হলো।
শৈশবের যন্ত্রণার সঙ্গে সুরের মিশেল আর অনুশীলনের মুন্সিয়ানা,আমাকে নিয়ে গেল অন্য উচ্চতায়।কৌলিন্যে।
একাকিত্বের ঈশ্বরত্ব প্রাপ্তি ঘটলো আমার।
রসিক ও বোদ্ধা মানুষদের তখনো আমাকে সম্পূর্ণরূপে জানা বাকিই ছিলো।
কিন্তু একদিন সে সুযোগও এসে গেল আচম্বিতে।
সেটা উনিশশো চৌত্রিশ সন।
নেপাল ও বিহার বিধ্বংশ ভূমিকম্পে বিপন্ন, অভুক্ত,গৃহহীন মুমুর্ষ অসংখ্য মানুষ।
তাদেরই সাহায্যকল্পে আয়োজন করা হয়েছিলো এক বিশাল সংগীতানুষ্ঠানের।
নির্ধারিত এক শিল্পী সময়মতো এসে পৌঁছতে না পারায় আমার উস্তাদের অনুরোধে অযাচিতে সেদিন আমার সুযোগ জুটলো সেই অনুষ্ঠানে গাইবার।
মন প্রাণ ঢেলে গাইলাম একটার পর একটা রাগ।অধৈর্য্য শ্রোতা দর্শক শান্ত হলো সে পরিবেশনে।
যশস্বী কবি সরোজিনী নাইডু উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।
তিনি মুগ্ধ হয়ে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন আমাকে।
পুরস্কৃত করেছিলেন।
আমি আবেগে ভেসে গেছিলাম।
শিহরিত হয়েছিলাম।
এর পরে পরেই এলো
আমার সঙ্গীত জীবনের সেই মাইলফলক।
মেগাফোন কোম্পানি থেকে বেরোলে
আমার প্রথম গানের রেকর্ড।
‘ওহ-আসিরে-দাম-এ-ওয়ালা’।
বিপুল জনপ্রিয়তা পেলো সে রেকর্ড।
মানুষ নতুন করে চিনলো আমায়।
আমার কুড়ি বছর বয়সে
ঠিকঠাক খ্যাতির স্বাদ পেলাম।
সেই প্রথম।
এরপরেই শুরু হলো
আকাশে উড়ানের আর এক অধ্যায়।
সেই উড়ানের পাখাকে আরো উঁচু আকাশ দেখানোর জন্য ,সে সময় মা আমাকে নিয়ে যায় বেরিলিতে, এক পীরের কাছে।
কথিত ছিলো,
তিনি ছিলেন এক বাকসিদ্ধ পুরুষ।
আমার দিকে এক ঝলক তাকিয়ে,
আমার গজলের খাতা উল্টে পাল্টে দেখে
তিনি একটি গানের পাতার কাছে এসে থেমে যান।সেটি ছিলো-
কবি,গীতিকার বেহজাদ লাখানভি’র গজল-
‘দিওয়ানা বানানা হ্যায়, তো দিওয়ানা বানা দে’।
এই গানটি গেয়ে তিনি আমার পরবর্তী অনুষ্ঠান শুরু করার নিদান দেন।
তাঁর কথায় যেন জাদু ছিলো।
আমার খ্যাতির শস্যক্ষেত্রে সোনা ফলালো সে গজল।
পরে রেকর্ড হয়েছিলো সে গান এবং
প্ল্যাটিনাম ডিস্ক পেয়েছিলো।
ধীরে ধীরে আমি যশস্বী,আরো যশস্বী হয়ে উঠতে থাকলাম।
বনেদি বাড়ির বৈঠকখানার মেহফিল পেরিয়ে আমার সাদর আসন হলো,
বিশাল বিশাল সম্মানজনক সংগীতানুষ্ঠানের মঞ্চে।
আমার নতুন পরিচিতি হলো
‘মালিকা-এ-গজল’ হিসাবে।
গলায় মা সরস্বতী ছিলেন।
সঙ্গে ছিলো চোখ ধাঁধানো রূপের জৌলুস।
সুতরাং অচিরেই,রুপালি পর্দার জগতের নজর পড়লো আমার দিকে।
ইস্ট ইন্ডিয়া ফিল্ম কোম্পানির ব্যানারে
মুক্তি পেলো আমার অভিনীত
এক দিন কা বাদশা, এবং
নল দময়ন্তী , ছবি দুটি।
আরো একটি পালক যোগ হলো
রূপময়ী আমার খ্যাতির মুকুটে।
আমার লাল ওষ্ঠরঞ্জনী শোভিত ঠোঁটের লাস্যে, আমার এমব্রয়ডারি করা জমকালো জর্জেটের আবরণ ও আভরণের আগুনে পাগল হয়ে গেল আমার ভক্তকুল।
এরপরে পরেই আমি লখনৌ গেলাম।
বিলাসী জীবনের তিনটি বছর কাটলো সেখানে।
চিত্র নির্মাতা,নির্দেশক মেহবুব খানের সঙ্গে পরিচয় ঘটলো।
উনিশশো বিয়াল্লিশ সনে তাঁর নির্দেশনায়,সুর সাধক অনিল বিশ্বাসের সুরে,শেখ মুখতার এবং সিতারা বিবির অভিনয় সমৃদ্ধ রোটি ছবিটি নির্মিত হলো।
এই ছবিতে ছটি গান ছিলো আমার গাওয়া।
পরবর্তীতে অবাক হয়ে দেখেছিলাম
সে গানগুলো ব্যবহৃত হয়নি ছবিতে।
মেগাফোন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গের অপরাধে তার ব্যবহার বাতিল হয়ে গেছিলো নাকি।
পরে অবশ্য গানগুলো আলাদা করে রেকর্ড করেছিলো মেগাফোন।
আমি বুঝতে শিখেছিলাম,
আমাকে বুঝতে হয়েছিলো,
সিনেমার মায়াবী হাতছানি আমাকে কেবল প্রলোভিত এবং অকৃষ্টই করতে পারে।
এছাড়া ওখান থেকে আমার কিছু পাওয়ার নেই।
তাই, কষ্ট হলেও আমি ছাড়তে পেরেছিলাম রুপালি পর্দায় মোহ।
উনিশশো আটান্ন সনে
বিদদ্ধ আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন
চিত্র পরিচালক, সত্যজিৎ রায়ের ছবি, জলসাঘরে এক গায়িকার চরিত্রে অভিনয়ই তাই অভিনেত্রী হিসাবে আমার শেষ আত্মপ্রকাশ।
আমার শৈশবের যন্ত্রণা ও অ-সুখ,
আমার ভেঙে যাওয়া পরিবার,
আমাকে অভিমানী করেছিলো।
অবুঝ,বিদ্রোহী ও উশৃঙ্খল করেছিলো।
আমি বিলাসে ডুবে গেছিলাম হতাশা ঢাকতে।
ধূমপায়ী হয়েছিলাম।যাকে বলে চেন স্মোকার।
আমার শরীর,মন,গলা, অন্তরাত্মা,
সবকিছু সিস্টেমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতো মাঝে মাঝে।
খাঁচা ভেঙে,শিকল ছিঁড়ে পালাতে চাইতো শিল্পী সত্তা।
এ হতাশা ভুলতে,নতুন জীবনের স্বাদ পেতে,
সংসার,সন্তান ও মাতৃত্বের স্বাদ পেতে
উনিশশো পঁয়তাল্লিশ সনে আমি বিয়ে করলাম এক ব্যারিস্টারকে।
ইস্তিয়াম আহমেদ আব্বাসী।
স্বামী আমার,উর্দু শের শায়েরী আর গজলের বড় গুনগ্রাহী ছিলো।
আমি হলাম বেগম আখতার।
এরপর আমি পাঁচটি বছর বিচ্ছিন্ন ছিলাম সঙ্গীত নামক মহাসমুদ্রের ঢেউ থেকে।
ভেসেছিলাম সংসারের টানে।স্বপ্নের আকর্ষণে।সন্তানের আকাঙ্খায়।
আদর্শ গৃহিণী,স্ত্রী ও মা হতে চেয়েছিলাম।
কিন্তু হায়রে ভাগ্য!
তুই আর আমার সাথ দিলি কই?
উপর্যুপরি গর্ভপাত আমার মা হওয়ার স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল।
বাস্তবের মাটি আর ছুঁতে দিলো না।
আমি যথারীতি যন্ত্রণাবিদ্ধ হলাম।
আমার জীবনের ধ্রুবতারা,
আমার একমাত্র অবলম্বন আমার মা..
এমনকি সেও, এইসময় পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে আমাকে ছেড়ে চলে গেল চিরতরে।
নিরুপায়,দেওয়ালে পিঠ ঠেকা শরীরে মনে বিদ্ধস্ত আমি,
সব পার্থিব ও সামাজিক সম্পর্ক ছিন্ন করে
জীবনের একমাত্র জিয়নকাঠি সুরের সাধনায় ফিরলাম আবার।
সেটা উনিশশো উনপঞ্চাশ সন।
এইসময় প্রথম লখনৌ অল ইন্ডিয়া রেডিওতে আমি তিনটি গজলের রেকর্ড করি।
এরপর থেকে আমৃত্যু সংগীতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করিনি আর।
পাশাপাশি বেচেঁছি পরস্পরের ভরসায়।
রেকর্ড করেছি চারশোরও বেশি গান।
লাহোরের উস্তাদ ওয়াহিদ খান সাহির কাছে অনুশীলন,
পরবর্তীকালে আমার সঙ্গীত শৈলীকে এক অন্য মাত্রায়,অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছিলো।
কালোয়াতি, কানহাদা,ছায়ানট,দেশ,এবং নারায়ণী রাগে অবাধ বিচরণ ছিলো আমার।
বিভিন্ন রাগে ঠুমরি,গজল ও দাদরা আমার গলায় শুনে মোহিত হতেন রসিক জন।
বাংলা সঙ্গীতেও আমার ছিলো সাবলীল গতি।
‘জোছনা করেছে আড়ি’ আমাকে অমরত্ব দিয়েছে বাংলা সঙ্গীত জগতে।স্থায়ী আসন দিয়েছে।
শেষে একদিন এলো সেই কালো দিন।
উনিশশো চুয়াত্তর সনের ছাব্বিশে অক্টোবর।
সৃষ্টিকাল, জগৎ থেকে দেওয়া নেওয়ার খেলা তখন শেষ হয়ে এসেছে আমার।
আহমেদাবাদের এক জলসায় আবেগে বিভোর হয়ে গাইতে গাইতে তৃতীয়বার হৃদ রোগে আক্রান্ত হলাম আমি।
তারপরও আরো চারদিন ছিলাম এই মায়াময় ধরাধামে।
শেষের সেদিন এলো তিরিশে অক্টোবর।
প্রিয় বান্ধবী নিলামের কোলে শুয়ে,তার চোখের দিকে চেয়ে পৃথিবীকে চিরবিদায় জানালাম আমি।
আমার শেষ অনুষ্ঠানের শেষ গান
শাকিল বাদিয়ানির…
“ইয়ে মহব্বত তেরে আনজাম পে রোনে আয়া”—আমার মতোই স্মৃতি হয়ে গেল আমার সঙ্গে।
°°°°°°°°°°°
ডার্লিং মিনাকুমারী!ছ’বারের চেষ্টাতেও তোমার অভিনীত আমার প্রাণের ছবি পাকিজা আমি একটানা বসে দেখতে পারি না।জীবনে এ দুঃখও রয়ে গেল আমার।
আমার ধূমপানের বিরতি…
আমার অস্থিরমতি…
আমার যন্ত্রণা আর বঞ্চনা…..
°°°°°°°°°°°°
ঈশ্বর! দোহাই তোমার! মিনতি তোমায়!
পৃথিবীর আর কাউকে আমার মতো কষ্টে রেখো না।
ভালো রেখো সবাইকে।
●●●●●●●●●●●●●●●●
০৮.১০.২০২০