ইন্দ্রনগর মাদ্রাসায় স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগে বরখাস্থ হলেন রাজাকারপুত্র মারুফ বিল্লাহ
তরিকুল ইসলাম লাভলু, ঢাকা, বাংলাদেশ,নিজস্ব প্রতিনিধি: উপাধ্যক্ষ পদ দাবি করে নকল কাগজপত্র ও স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগে বরখাস্থ হয়েছেন সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ইন্দ্রনগর হুসাইনাবাদ সিদ্দিকীয়া ফাজিল মাদ্রাসার আরবী প্রভাষক ও মানবতা বিরোধী অপরাধে গ্রেফতারকৃত রাজাকার আকবর আলীর পুত্র মারুফ বিল্লাহ।
সোমবার ৭ ডিসেম্বর মাদ্রসার গভর্নিং বডির এক জরুরী সভার মাধমে তাকে সাময়িক বরখাস্থ করে ৫ সদস্যর তদন্ত টিম গঠন করে ৭ কর্মদিবসে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে গভর্নিং কমিটির সভাপতি এস.এম আসাদুর রহমান সেলিম।

ইন্দ্রনগর হুসাইনাবাদ সিদ্দিকীয়া ফাজিল মাদ্রাসায় সম্প্রতি অধ্যক্ষ,উপাধ্যক্ষ,অফিস সহকারি কাম হিসাব সহকারি ও অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলে সেই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বাধা গ্রস্থ করতে গ্রেফতারকৃত রাজাকার আকবর আলীর পুত্র মাদ্রাসার আরবী প্রভাষক মাওঃ মারুফ বিল্লাহ নিজেকে উপাধ্যক্ষ দাবি করে জাল স্বাক্ষরযুক্ত নকল কাগজপত্র তৈরি করে মাদ্রাসার সভাপতি বরাবর আবেদন পেশ করেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৭ ডিসেম্বর সোমবার মাদ্রাসা অফিস কক্ষে জরুরী ভাবে মাদ্রাসা গভর্নিং বডির সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভাপতি এস.এম আসাদুর রহমান সেলিম তার কাছে দেয়া আবেদন পেশ করলে কমিটির সকল সদস্যের মাঝে তার আবেদনের সহিত সংযুক্ত সকল কাগজপত্র দেখে সন্দেহ হলে সংযুক্ত রেজুলেশনের ফটোকপি দেখে মাদ্রাসার গভর্নিং বডির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শেখ মোনাজাত হোসেন, দাতা সদস্য শেখ হায়বাত আলী, অভিভাবক সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আনছার আলী বিশ্বাস ও সোহরাব হোসেন পাড় এবং শিক্ষক প্রতিনিধি মাওঃ আমজাদ হোসেন বলেন যে, ঐ রেজুলেশনে উপস্থিত সদস্যদের মাঝে আমাদের নামের পাশে যে স্বাক্ষর দেয়া আছে তা আমাদের নয়। তা সম্পূর্ণ নকল। তাছাড়া মারুফ বিল্লাহ কর্তৃক দাখিলকৃত কাগজে ২০০৪ সালের যে সময়ে তাকে উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেয়ো হয়েছে সেই সময়ে মাদ্রাসায় সংরক্ষিত নিয়োগ পরীক্ষার খাতা, নিয়োগপত্র সহ অন্যান্য সকল কাগজ পত্র দেখে কমিটির সকল সদস্য নিশ্চিত হন যে, মারুফ বিল্লাহ যে সকল কাগজপত্র দাখিল করেছেন তা সম্পূর্ণ জাল কাগজপত্র। সেই সময়ে মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল নলতা মাদ্রাসার বর্তমান অধ্যক্ষ মাওঃ সফিউল্লাহ হাবিবীকে।
রাজাকারপুত্র মারুফ বিল্লাহর এমন প্রতারণা ও বিভিন্ন সময়ে মাদ্রাসার অফিস সহকারি আঃ রাজ্জাককে মারপিট, মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে প্রাণ নাশের হুমকি সহ মাদ্রাসার নিয়ম শৃংখলা ভঙ্গসহ মাদ্রাসা পরিচালনায় বিঘœ সৃষ্টি করার দায়ে তাকে তৎক্ষণাত সাময়িক ভাবে বরখাস্থ করা হয় এবং মাদ্রাসার রেজুলেশন খাতা জালিয়াতির সাথে প্রাথমিকভাবে সম্পৃক্ততা থাকা প্রমাণিত হওয়ায় আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রাথমিক তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত কমিটিকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
উল্লেখ্য, মাদ্রাসার আলমারি থেকে ২০০১ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত মুল রেজুলেশন খাতা আলৌকিকভাবে গায়েব করে সেখানে একটি নকল রেজুলেশন খাতা রাখা হয়। সেই নকল রেজুলেশনে মারুফ বিল্লাহকে উপাধ্যক্ষ দেখানো হয়েছে।
#তরিকুল ইসলাম লাভলু
তারিখ: ০৮/১২/২০২০ ইং