রাজনীতির অনিন্দ্য সুন্দর দিনগুলি
সুমন মুন্সী,২৭ জানুয়ারী ২০২১ ,কলকাতা: অনিন্দ্য গোপাল মিত্র মানে সকলের প্রিয় গোপালদা সর্বভারতীয় রাজনীতির নেপথ্য নায়ক । দীর্ঘ পাঁচ দশক ধরে নানা উত্থান পতনের সাক্ষী গোপালদা কলম ধরলেন আই বি জি নিউজ এর পাঠকদের জন্য । “রাজনীতির অনিন্দ্য সুন্দর দিনগুলি” এই শিরোনামে আগামী দিনগুলিতে আমরা জানতে পারবো রাজনীতির অনেক অজানা কথা, অনেক ভালোবাসা, বেদনা, পাওয়া না পাওয়ার মিষ্টি মধুর স্মৃতিচারণ ।
এক এক করে দিকপাল সব নেতাদের সাথে তাঁর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের অকপট স্মৃতিচারণ করলেন ,যা ক্রমশ ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ করবো আমরা ।অনেক কথাই হয়তো বলা হবে, কিছু কথা মনেই রেখে দিতে হবে, তবু জয়প্রকাশ নারায়ণ (জে পি সাহেব), ইন্দিরা গান্ধী,অটল বিহারী বাজপেয়ী ,লালকৃষ্ণ আদবানি, মুরালি মনোহর জোশী, জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, মমতা ব্যানার্জী, প্রণব মুখার্জী এবং তাঁর অন্যতম প্রিয় নেতা নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে তাঁর অভিজ্ঞাতা বাংলার তথা ভারতের মানুষের কাছে এক রাজনৈতিক দলিল হয়ে থাকবে। আগামী প্রজন্ম জানবেন কেন এই সকল নেতা বা নেত্রী সকলের থেকে আলাদা ও সর্বজন শ্রধ্যেয় ।
ছোটবড় সকল রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা তাঁকে কাছ থেকে জেনে আপন করে নিয়েছেন| এই প্রসঙ্গে আরএসপির ত্রিদিব চৌধুরী, ফরওয়ার্ড ব্লকার অশোক ঘোষ, চিত্ত বাবু, সমাজবাদী দলের নেতাদের সকলে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী মানলেও, এটা বিশ্বাস করতেন গোপালদা অনৈতিক কোনো সুযোগ নেবেন না, আর তাই তিনি সকলের কাছের মানুষ ।
দেশে যখন বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহের সরকার হলো, তখন ভারতীয় জনতা পার্টির তরফে প্রধানমন্ত্রীর অন্যতম পরামর্শ দাতা নিযুক্ত হলেন । সেই উত্তাল সময়ে দাঁড়িয়ে, যা তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞার ওপর দলের ভরসার প্রতীক বলেই অনেকে মনে করেন ।
পাঠকদের অবগত করার জন্য বলি, ভারতের রাজনীতিতে “লোক নায়ক” হিসাবে পরিচিত জয়প্রকাশ নারায়ণ (জে পি সাহেব) এর অন্যতম সহচর ও আপ্তসহায়ক ছিলেন গোপালদা । তাই রাজনৌতিক কৌলিন্য তাঁর কর্মে, তাঁর আদর্শে । আজও অক্রূর দত্ত লেনের বাড়িতে সকলের অবারিত দ্বার ।
দীর্ঘ্য দিনের রাষ্ট্রীয় সায়ং সেবক হিসাবে তাঁর কাজের অভিজ্ঞতা, তাঁকে রাজনৈতিক আনুগত্যের ও অনুশাসনের আদর্শকে তুলে ধরতে সাহায্য করেছে । যা বর্তমান প্রজন্মের নেতাদের কাছে হয়তো, আবার নতুন করে ফিরে দেখার দাবি রাখে ।
সারাদিনের ব্যাস্ততার মধ্যে যখন হঠাৎ গিয়ে হাজির হলাম, হাসি মুখে বললেন “কি সাংবাদিক মনে পড়লো”? নিমেষে চা আর সিঙ্গারা চলে এলো, আশ্চর্য্য হলাম, তিন বছর পর দেখা কিন্তু ভোলেননি তাঁর বিশেষ দোকানের সিঙ্গারা আমার বিশেষ পছন্দ । এই ভাবে আপন করার ক্ষমতাই বড় মাপের, বড় মনের মানুষ করে তোলে ।
আজকের রাজনীতিতে যখন অসৌজন্য ও অশালীন ভাষার প্রয়োগ এক নতুন ট্রেন্ড, সেই সময় দাঁড়িয়ে গোপালদা কিন্তু বিতর্কিত বিষয় নিয়ে আলাপচারিতায় কখনো রাজনৈতিক শিষ্টাচার ভোলেন না । এমনকি চরম রাজনৈতিক বিরোধীদেরকেও সৌজন্যের সীমায় থেকে সমালোচনা করেন ।
২০২১ এর নির্বাচন বাংলার নির্বাচনের ইতিহাসে এক মাইল ফলক হতে যাচ্ছে । বিজেপি ক্ষমতার শীর্ষে পৌঁছানোর জন্য তৈরী আর তৃণমূল এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ । এই রকম উত্তেজনা ও আশংকার নির্বাচনে প্রয়োজন রাজনৈতিক প্রজ্ঞার সাথে যৌবনের উদ্দীপনার । প্রয়োজন নতুন সরকারের শিল্প, কৃষি ও শিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলার হৃত গৌরব ফেরত আনার স্পষ্ট দিক নির্দেশ । পরিবর্তনের জন্য পরিবর্তন নয়, প্রকৃত উন্নয়নের কর্মযোগে বাংলা হোক সমবৃদ্ধ ।
অনিন্দ্য গোপাল মিত্র তাঁর দীর্ঘ্য পাঁচ দশকের অভিজ্ঞতার ঝুলি নিয়ে বিজেপির ময়দানে হাজির হবেন এবং নতুন প্রজন্মের নেতাদের কাছে আদর্শ রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও জেতার মশলা একসাথে কি ভাবে যোগ করা যায় তার উজ্জ্বল পথপদর্শক হবেন বলে ওয়াকিবহাল মহলে জোর আলোচনা শুরু ।
আগামী দিনে আমরা নিয়ে আসবো জে পি সাহেবের সাথে গোপালদার অমূল্য স্মৃতির কিছু কথা। নজর রাখুন “রাজনীতির অনিন্দ সুন্দর দিনগুলি” এই বিভাগে ।

***সুমন মুন্সী সম্পাদক আইবিজি নিউজ ,২৭ জানুয়ারী ২০২১ কলকাতা ***