কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রী চা বাগিচা ধন পুরষ্কার মেলার তৃতীয় পর্যায়ের আয়োজনে যোগ দিয়েছেন
বিশ্ব বিখ্যাত চা উৎপাদনে জড়িত কর্মীদের ক্ষমতায়নে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধঃ শ্রীমতী নির্মলা সীতারমণ
By PIB Kolkata
গুয়াহাটি, ৬ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী শ্রীমতী নির্মলা সীতারমণ আজ চা বাগিচা ধন পুরষ্কার মেলার তৃতীয় পর্যায়ের সূচনা করেছেন। গুয়াহাটির খানাপাড়ায় আসাম পশু চিকিৎসা কলেজের খেলার মাঠে এই উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে চা বাগানের কর্মীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
এই প্রকল্পে তৃতীয় পর্যায়ে ৭,৪৬,৬৬৭ জন সুবিধাভোগীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি ৩০০০ টাকা পাঠানো হয়েছে। প্রসঙ্গত ২০১৭ – ১৮ অর্থবর্ষে আসাম সরকার, এই প্রকল্পের সূচনা করেছিল। প্রথম পর্বে ৬,৩৩,৪১১ জন সুবিধাভোগীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আড়াই হাজার টাকা সরাসরি পাঠানো হয়েছিল। দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০১৮ – ১৯ অর্থবর্ষে ৭,১৫,৯৭৯ জন সুবিধাভোগীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আরো আড়াই হাজার টাকা জমা দেওয়া হয়।
শ্রীমতী সীতারমণ বলেছেন, আসাম, তার বিশ্ববিখ্যাত চায়ের জন্য পরিচিত। জনসাধারণ দিনের শুরুতে এক কাপ আসামের চা খান। কিন্তু এই চা বাগানের শ্রমিকরা বিশ্বখ্যাত আসামের চা উৎপাদনের জন্য কাজ করলেও দীর্ঘ দিন ধরে তাঁরা অবহেলিত ছিলেন। তাঁরা অস্বচ্ছল জীবনযাপন করতে বাধ্য হতেন। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সরকার, চা বাগিচার শ্রমিকদের মানোন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর ফলে এই সম্প্রদায়ের প্রতি সরকারের অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে। এই সব উদ্যোগের মাধ্যমে ইতিবাচক ফল পাওয়া যাচ্ছে।
চা বাগান এলাকায় বিমুদ্রাকরণের সময় ৮ লক্ষ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার প্রসঙ্গে মন্ত্রী ব্যাঙ্ক আধিকারিক ও রাজ্য় সরকারী কর্মচারীদের গৃহীত উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েন। মন্ত্রী বলেছেন, প্রথাগত ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় চা শ্রমিকদের যুক্ত করার ফলে বিভিন্ন সরকারী প্রকল্পের সুবিধাভোগীরা সরাসরি অর্থ সাহায্য পেয়ে থাকেন। এর জন্য তাদের কোনো মধ্যস্বত্ত্বভোগীর উপর নির্ভর করতে হয় না। আয়ুষ্মান ভারতের মতো উচ্চাকাঙ্খী প্রকল্পগুলিতে চা বাগিচা সম্প্রদায়ের মতো সমাজের দূর্বলতর শ্রেণির মানুষদের সাহায্য করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেছেন, সমাজের সকলের মানোন্নয়নের জন্য মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল আন্তরিকভাবে কাজ করছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্র সমাজের দুর্বল শ্রেণীর মানুষদের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে এবং কোন রাজ্যের প্রতি বৈষম্যমূলক মনোভাব দেখান হয় না। চা বাগিচার সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য ভবিষ্যতেও নানা উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল বিরাট এই জমায়েতে জানান, আজকের দিনটি ঐতিহাসিক। এই প্রসঙ্গে তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিমুদ্রাকরণের উদ্যোগের সময় চা বাগানের কর্মীদের সাহায্যর জন্য ৮ লক্ষর বেশী ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার প্রসঙ্গটি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রীর ‘ সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস’ মন্ত্র রাজ্য সরকার অনুসরণ করে। সমাজের সর্ব স্তরের মানুষের সমান উন্নয়নে কাজ করা হয়। শিল্পী দুলাল মাঙ্কিকে পদ্ম সম্মানে ভূষিত করার জন্য, মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে চা বাগিচা সম্প্রদায়ের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শিত হয়েছে। এই বছরের সাধারণতন্ত্র দিবসে রাজ্যের ট্যাবলোর ভাবনা ছিল আসামের চা বাগিচার সম্প্রদায়। কেন্দ্রের এবছরের বাজেটে, আসামের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে সারা দেশের কাছে ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর বার্তা পাঠানো হয়েছে, এর জন্য শ্রী সোনোওয়াল , শ্রীমতী সীতারমণকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
আসামের অর্থ মন্ত্রী ডঃ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, সরকার চা বাগানের শ্রমিকদের উন্নয়নের জন্য সব সময় তাঁদের পাশে রয়েছে। এই সব শ্রমিকদের জীবন যাত্রার মানোন্নয়নে সব সময় সক্রিয়ভাবে কাজ করা হয়। চা বাগানের স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে প্রাতরাশ দেওয়া হয়। চা বাগান সংলগ্ন কলেজগুলিতে বাগানকর্মীদের সন্তানদের জন্য ১০% সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়াও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও মেডিক্যাল কলেজেও ১০% সংরক্ষণ রয়েছে। রাজ্য সরকার শীঘ্রই চা বাগিচার শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি সহ নানা সুখবর জানাবে।
কেন্দ্রীয় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ প্রতিমন্ত্রী শ্রী রামেশ্বর তেলী, চা শ্রমিক কল্যাণ মন্ত্রকের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী শ্রী সঞ্জয় কিষাণ, রাজ্যসভার সাংসদ শ্রী কামাখ্যা প্রসাদ তাসা সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।