গণতন্ত্র ও প্রতারিত জনগণ – যোগ্যের অনুপস্থিতিতে নোটা হোক প্রতিনিধি
আজ রাজ্য বিজেপির নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশিত হল| অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এই রাজ্যের নির্বাচনে সমস্ত ভোটারকে আকর্ষিত করার জন্য, সকল রাজনৈতিক দল একটি পরিষ্কার প্রকাশ করবেন, এর মধ্যে নতুনত্ব কিছু নেই, এবং নির্বাচনী গণতন্ত্রের প্রতি অবশ্য কর্তব্য যার ভিত্তিতে জনগণ সিদ্ধান্ত নেবেন, আমরা আগামী দিনে কাদেরকে আমাদের সরকারে নিয়ে আসবো |
কিছুদিন আগে তৃণমূল কংগ্রেস ও তার নিজস্ব ইশতেহার প্রকাশ করেছে | সময়ের অগ্রগতির সাথে সাথে অন্যান্য দলের ম্যানিফেস্টো প্রকাশ করবে বা করেছেন এবং আজ বিজেপি প্রকাশ করেছে, যদি এগুলি একটি সততার দলিল হয় এবং যদি তার ভিত্তিতে নির্বাচন পরবর্তী নির্বাচিত দল অক্ষরে মেনে চলে,,তবে স্বাধীনতার 70 বছর পরেও কেন ভারত অনাহারে দিন কাটায়? বিনা ছাদের নিচে থাকে? রোগী বিনা চিকিৎসায় মেঝেতে পড়ে থাকে?
বিগত যতগুলো কেন্দ্র,রাজ্য,কর্পোরেশন বা পঞ্চায়েতের ভোট হয়েছে ভারতে, তার মিলিত খরচকে যদি এক জায়গায় করা হয় তবে তা ভারতের অন্তত পাঁচ বছরের বাজেটে সমান এই বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে ভারতের সত্তিকারের প্রকৃত নায়ক কে পেল? পেল কি সেই দেশ গঠনের কারিগর, যারা মানুষ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ালেন? আমি তো কাউকে খুঁজে পাইনি, আমাদের বর্তমান সমাজে| অতীত যুগের কয়েকজন নেতা বা নেত্রী কে বাদ রাখলে, সকল দলের থেকে বর্তমানে কোন দলের কোন নেতা, নেত্রীর সেই গ্রহণ যোগ্যতা নেই, যা কিনা তাদের দেশনায়ক নেতাজি সুভাষচন্দ্রের ছায়ার বাস্তবায়ন বলা যায়|
কন্যাশ্রী , যুবশ্রী, বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও, কৌশল বিকাশ যোজনা ইত্যাদির রাজনীতি করে গেলেন, সরকার ডান-বাম মধ্যপন্থী যে দলেরই হোক না কেন, প্রতিবারই হেরেছে অসহায় ভারতবাসী |
ভারতের গণতন্ত্র বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র, কিন্তু বৃহত্তম পাপ, অত্যাচার আর বৃহত্তম ষড়যন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা কি তাকে কলুষিত করছে না ?
ফরাসি দার্শনিক বলেছিলেন যেরকম সমাজ গড়বেন, ঠিক সেরকমই সরকার পাবেন,ফরাসি দার্শনিক উক্তি আজ আরো বেশি করে আমাদের বুঝিয়ে দেয়, আমরা মানুষ হিসেবে অতি নিকৃষ্ট; তাই প্রশাসনে, সরকারের সেবায়, মৃত্যুর যন্ত্রনায় সমস্ত জায়গায় দালাল এবং ধান্দাবাজ ছাড়া আর কাউকে পাওয়া যায় না | বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, নেতাজি সুভাষচন্দ্র, চিত্তরঞ্জন দাস, সত্যেন্দ্রনাথ বোস, জগদীশচন্দ্র বোস পেতে হলে সেই পিতা-মাতাদের মতো উপযুক্ত তৈরি হতে হবে| চন্দন থেকে চন্দন তৈরি হয় আর আমড়া গাছে আমড়া |
কোন দলকে সে যে ধর্মেরই হোক না কেন, অভিযোগ করার আগে ,একবার আমরা নিজের দিকে, নিজের পরিবারের দিকে তাকিয়ে দেখি আমার বাড়ির ছেলেকে আমি কি পেরেছি সুনাগরিক তৈরি করতে? যদি না পেরে থাকি, তবে আজ আর আফসোস করবেন|
প্রশ্নের উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তবে আমার নিজের কোনো অধিকার জন্মায় না, | তাই এই নির্বাচনে এত সুন্দর সুন্দর কথা দেখে মোহিত হয়ে দাগরাজি মারা কোন নেতাকে নির্বাচিত করবেন, যেখানে আপনার মত, পথ দলের সাথে মিল হবে না নিশ্চিত| উপযুক্ত মানুষ না পেলে কাউকে নয় এবং এই ভাবেই আপনার প্রতিবাদকে রেজিস্টার করুন, এটা আপনার গণতান্ত্রিক অধিকার ।
সুন্দরী নায়িকা, নায়কদের নাচ, গান ডায়লগ নয়, দিনের শেষে চাই কর্ম। দিনের শেষে চাই সঠিক পরিষেবা।সব শেষে চাই একটা সুশৃংখল সমাজ, যেটা না পেলে সমস্ত সমাজ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। আর তা ওই নৌটাঙ্কি বা যাত্রায় হবে না, ধান্দাবাজদের দিয়ে হবে না,২রা মে যে দলই ক্ষমতায় আসুক, হারবে জনতা ।
তার কারণ আবার পাঁচ বছরের জন্য প্রতারিত হওয়া তার ভাগ্যরেখা। যে কোনো প্রার্থী সিলেকশন তার দল করেছেন, তাদের প্রতি 100 জনে 10 থেকে 15 জন ছাড়া বাকিদের এক্সিকিউটিভ ডিউটি পালন করার মতন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, কর্মের অভিজ্ঞতা বা সেই নেতৃত্বগুণ যা সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে, আছে কিনা? সে বিষয়ে আমার ব্যক্তিগত স্তরে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
যদি কারো আমার এই কথায় আপত্তি থাকে দল-মত-নির্বিশেষে দয়া করে আদালতের দরজা না নাড়িয়ে, নিজের মনের দরজা খটখট করে দেখুন, যে কথাগুলো আমি বলছি ,সেই কথাগুলো সত্যি কিনা? কিন্তু এই আশা করাটাও আমার আপনাদের কাছে প্রতারণা, যেখানে চোর-ডাকাত, গুন্ডা, বদমাইশ এবং সমাজবিরোধীদের সমাজটা ভরে গেছে, সেই সমাজ থেকে ভালো যোগ্য ব্যক্তির আসাটাই হচ্ছে সন্দেহজনক খাও দাও বগল বাজাও এই হলো মিশন এ বেঙ্গল ।
34 বছর খেলো বাম, তার আগে 32 খেয়ে গেলেন কংগ্রেসী সরকার তার পরবর্তী দশ বছর দিদি , এবার যদি জামানা পাল্টায় , এখনই বলে দিতে পারি মিলিয়ে নেবেন পরিবর্তন হচ্ছে না । তাই অপদার্থ দেখলে সেই স্থানে কাউকে ভোট না দিয়ে নোটা কে ভোট দিন ,অন্তত বিবেক পরিষ্কার থাকবে ।
সমাজের অন্তর্জলীর যাত্রা বা কালনেমির লঙ্কা ভাগ কোনোটাই কাম্য নয় । প্রতি পাঁচ বছর অন্তর আগের ইস্তাহার মিলিয়ে দল ও তার আধিকারিক সকলকে ক্রেতাসুরক্ষা আইনে জেল দেয়া হোক । মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে ভোটে নেয়া ক্রিমিনাল একটিভিটি বলে নির্দেশিত হোক ।
শেষে আশা করবো নতুন প্রজন্ম প্রবঞ্চকদের দূর করে আসল নেতাকে দায়িত্ব দেবে । প্রকৃত গণতন্ত্রে আরো যোগ্য মানুষ আসুক , আরো যোগ্য ব্যাবস্থা গড়ে উঠুক আর আমার দেশ সকল দেশের রানী হয়ে উঠুক ।
জয় গণতন্ত্রের জয় ।