কোভিড সেকেন্ড ওয়েভ প্রসঙ্গে ড: পলাশ বন্দোপাধ্যায় জানালেন কিছু দরকারি কথা
দেখুন, এ উপদেশগুলো হয়তো কাজে লাগতে পারে। চিকিৎসা শাস্ত্রের ব্যাপারটা নিয়ে নিজেরা তত্ত্ব বা তথ্য খাড়া করে অনর্থক চাপে না পড়ে এই ব্যাপারগুলো একটু মাথায় রাখুন।
ড: পলাশ বন্দোপাধ্যায়,5 May 2021,Kolkata:
■ কোভিড ভাইরাস ঘটিত রোগ। যার শরীরে যত ভাইরাস ঢুকবে,তার ভাইরাল লোড তত বেশি হবে।রোগের তীব্রতা তত বেশি হবার সম্ভাবনা হবে। অকারণে হাসপাতাল বা ক্লিনিকে যাবেন না।সেখানে ভাইরাস বেশি।টেলিমেডিসিন ভালো বিকল্প ব্যবস্থা।
■সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে কোভিড ভাইরাস হাওয়াতেও ভেসে থাকে।তার থেকেও মানুষ সংক্রমিত হতে পারে।সুতরাং জীবনদায়ী প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরোবেন না।
■সংক্রামক রোগ জীবাণু ঘটিত।আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে শরীরে ঢোকা জীবাণু জিতবে।উল্টোটা হলে জীবাণু অত সহজে জিততে পারবে না অথবা হারবে। তিনটি উপায়ে আপনি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারেন। সুষম খাদ্য খাওয়া এবং নিয়মিত শরীর চর্চা করা এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম।
■বয়স্ক মানুষ,বাচ্চা,ডায়াবেটিস, এডস,কিডনি ও ক্যান্সারের রোগীদের প্রতিরোধ ক্ষমতা কম।যাঁরা স্টেরয়েড নেন নিয়মিত এবং ইমিউনিটি সাস্প্রেসন এর ওষুধ খান তাঁদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।তাঁরা খুব সাবধানে থাকুন।তাঁদের খুব সাবধানে রাখুন।
■শ্বাস প্রশ্বাসের এক্সারসাইজ খুব ফলদায়ী।সরল প্রাণায়াম,অনুলোম বিলোম এগুলো বাড়িতে নিয়মিত করুন।উপকার পাবেন।
■হাত পরিস্কার রাখা,দূরত্ববিধি মেনে চলা এবং নাক ও মুখ ঢেকে মাস্ক পরা ভ্যাক্সিনের চেয়েও বেশি ফলদায়ী।
■একবার আক্রান্ত হওয়ার পর তিন মাসের মধ্যে আপনি আবার আক্রান্ত হতে পারেন।সুতরাং আপনার একবার করোনা হয়ে গেছে বলে মহানন্দে বাইরে বেরিয়ে পড়ার কিছু নেই।
■ দুটো ডোজ ভ্যাক্সিন নেওয়ার পরেও প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। ভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার দু মাস পর শরীরে এন্টিবডি ঠিকঠাক তৈরি হয়। ভ্যাক্সিন, রোগের তীব্রতা হয়তো কমায়,হয়তো নিউমোনিয়ার সম্ভাবনা কমায়।সুতরাং ভ্যাক্সিন হয়ে গেছে বলে বিরাট নিশ্চিন্ত হওয়ার কিছু নেই। একটু দায়িত্বশীল হন নিজের ও সমাজের ব্যাপারে।
■ অনেকের ধারণা আছে প্রচুর মানুষের একসঙ্গে সংক্রমণ হলে রোগটির বিরুদ্ধে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়।যেটা জানেন সেটা অর্ধসত্য জানেন।এক্ষেত্রে রোগের কারণে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি করতে গেলে জনসংখ্যার শতকরা আশি থেকে নব্বই ভাগকে সংক্রমিত হতে হবে।তাতে বিপন্নতা চরমতম হবে।তার থেকে ভ্যাক্সিন নিয়ে হার্ড ইমিউনিটির দিকে নজর দেওয়া বেশি বিজ্ঞানসম্মত ।বুঝুন।
■কোভিড আক্রান্তদের নব্বই শতাংশ বা তারও বেশি খুবই মৃদু উপসর্গযুক্ত এবং হোম কেয়ারে সেরে যায়। সুতরাং প্যানিক করাটা বন্ধ করুন।প্যানিক করলে শরীরে এড্রিনালিন ক্ষরণ অনেক বেশি হবে।আপনার হৃৎপিণ্ডের গতি, শ্বাসের গতি এমনি বাড়বে।মনে হবে আপনি খুব অসুস্থ।শান্ত থাকুন।টিভি দেখবেন না।নেট সার্চ করবেন না নেগেটিভ খবরের জন্য।হালকা বই পড়ুন।হালকা সিনেমা দেখুন।দয়া করে আউটডোর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন কিছুদিন।
■টেনশন না করে আপতকালীন ফোন নম্বরগুলো হাতের কাছে রাখুন।
■কোভিড বলে কিছু নেই।ওসব আন্তর্জাতিক মুনাফাখোরদের চক্রান্ত এসব ভাবার অধিকার আপনাদের থেকে কেউ কেড়ে নিচ্ছে না।তবে এগুলো কিছুদিন পরে ভাবতে অনুরোধ করি সেই ভাবনার অনুসারীদের প্ৰতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে। আগে ঘরের ও সমাজের লাগা ধ্বংসাত্মক আগুনটা নেভাতে হবে।বিবাদের দিন পড়ে আছে সমানে।সরকার প্রশাসন ও সমাজের সঙ্গে সহযোগিতা করুন।যৌথ লড়াই একা জেতা যায়না।দায়িত্বশীল হন।আপনার নির্বুদ্ধিতা বা দায়িত্বহীনতার কারণে অন্যের ক্ষতি না হয়ে যায়। ভালো থাকুন সবাই।

***Dr. Palash Bandopadhyay, popular pediatrics expert with Post Graduate of Pediatric Nutrition,(Boston University). Doctor, Author, Poet, and a beautiful mind. He, always a great content provider for the readers with value to the core of the subject.***