ভারতীয় রাজনীতিকে সৌহার্দ্যের পথ শেখালেন উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পাটনায়েক
সুনন্দ মিত্র, কলকাতা,২৮ মে ২০২১:
বাপ্ ক্যা বেটা সিপাই ক্যা ঘোড়া, কুচ নাহি তো থোৱা থোৱা, প্রবাদগুলো কেন প্রচলিত তা আজকের এক বিরল ঘটনায় উড়িষ্যা তথা ভারতবাসী দেখতে পেলেন ।
বৃক্ষ তোমার নাম কি? ফলেন পরিচয়তে। হ্যাঁ কথাটা আবার কার্যক্ষেত্রে প্রকৃতপক্ষে প্রমাণ করলেন উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী মাননীয় শ্রী নবীন পট্টানায়ক মহাশয়|| যশ পরবর্তী প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর সরেজমিনে ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী দুর্যোগ কবলিত স্থান পরিদর্শনে গিয়ে উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে চান, যাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনুসারে রাজ্যকে ত্রাণ খাতে অর্থ সরবরাহ করা যায়।
যেকোনো মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সুবর্ণ সুযোগ বাড়তি কিছু চেয়ে নেবার, কিন্তু রাজধর্ম পালন করে মুখ্যমন্ত্রী মহাশয় জানান, এইমুহুর্তে কোভিড পরিস্থিতিতে দেশ এক সংকটময় সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তাই এইমূর্তে কোন কেন্দ্রীয় অর্থ সাহায্যের প্রয়োজন নেই ,সেই টাকা মানব সেবায় লাগুক, যদি দরকার লাগে, তাহলে অবশ্যই কেন্দ্রকে জানাবেন।
রাজ্য এই দুর্যোগ পরবর্তী সময়ের সংকট সামলে নেবার চেষ্টা করবে। না কেন্দ্রের রাজ্যের প্রতি কোন ঔদ্ধত্যের অভিযোগ আছে, না রাজ্যের কেন্দ্রের প্রতি বঞ্চনার কোন অভিযোগ, যদি কিছু থেকে থাকে তা হলো সৌহার্দ পারস্পরিক বোঝাপড়ার ও সন্মান প্রদর্শন ও যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যাবস্থায় পারস্পরিক সাহায্যের সদিচ্ছা । বাঃ অসাধারণ নজির গড়লেন উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি রাজনীতিক, কিন্তু কোন সস্তা রাজনীতি করলেন না,কিন্তু রাজনীতির ময়দানে সকলকে ছাড়িয়ে গেলেন অনায়াসে! রাজনীতির উর্দ্ধে রাজধর্মই শুধু পালন করলেন না, কেন্দ্র রাজ্যের সুসম্পর্ক তথা মানবিকতার এক অনন্য নজির গড়লেন।
পাঁচবারের মুখ্যমন্ত্রী এই উদারতা দেখতে পারলেন কারণ তিনি বিগত পাঁচবারে শিল্পবাণিজ্য ও পরিকাঠামোতে উড়িষ্যা কে গড়ে তুলেছেন প্রথম সারির রাজ্যে। দারিদ্র সীমা আর কালাহারীর বেদনাকে ভুলে উড়িষ্যা আজ কাজ দিচ্ছে বাংলা সহ গোটা দেশ কে । নেতাজীর জন্মভূমি যা পেরেছে, নেতাজীর কর্মভূমি কি তা করে দেখতে পারবে না কোনোদিন?
একটু পিছনে গিয়ে দেখা যাক মানুষটির পিতা কে এবং কেন তাঁর ডিএনএ এই উদার মানসিকতার ধারক করেছেন । প্রয়াত প্রেসিডেন্ট সর্বজন শ্রদ্ধেয় কালাম সাহেব তখন মিসাইল টেস্টিং জন্য নিরাপদ জায়গা খুঁজছেন , এক কথায় বিজু পাটনায়ক উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী হুইলার আইল্যান্ড ডিআরডিও কে দিয়ে দিলেন দেশের জন্য । তার আগে ১৯৪৬-৪৮ রয়েল এয়ারফোর্স এ থেকেও দেশের জন্য জীবন হাতে নিয়ে রুদ্ধশ্বাস এয়ার অপারেশন করে উদ্ধার করলেন ইন্দোনেশিয়ার সুকর্ণ সরকারের প্রধানদের সঙ্গে ছিলেন কোপাইলট তাঁর স্ত্রী জ্ঞানবতি আর ঘরে রইলেন নয় মাসের আজকের মুখ্যমন্ত্রী নবীনজি !! এরপর শ্রী বিজু পাটনায়েক রক্ষা করলেন শ্রীনগর এয়ারপোর্ট পাক হানাদারদের হাত থেকে । সেই পিতৃধারা যার রক্তে এই রাজোচিত ঔদার্য্য তাঁরই সাজে ।
না মুখ্যমন্ত্রী মহাশয় আপনাকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবনা, আপনিতো জীবন্ত উদাহরন হয়ে গেলেন সকলের জন্য, আশা করবো ভারতবর্ষের অন্যান্য মুখ্যমন্ত্রীরাও এই উদাহরণ অনুসরণ করে ভারতবর্ষকে প্রকৃত ভারতবর্ষ করে তুলতে সাহায্য করবেন বাংলা, বিহার মাদ্রাজ নানা প্রান্তে ভাগ না করে অখণ্ড ভারত গড়ে তুলতে সাহায্য করবেন।