দুয়ারে সাংবাদিক – বাংলার বৈষ্ণব তীর্থ মায়াপুর যাওয়ার রাস্তা যেন নরকের দ্বার
দুয়ারে নির্বাচন আর বাংলা খুব চিন্তিত কি হবে ভবানীপুরে?
এর মধ্যে আমরা দুয়ারে সাংবাদিক দলের ৪জন চললাম কলকাতা থেকে দূরে কৃষ্ণনগর হয়ে মায়াপুর। সকল ৮র সময় গাড়ি ছেড়ে দিলাম মাত্র ১৫০ কিমি পথ ঘন্টা ৩ খুব বেশি হলে লাগবে ১১ নাগাদ পৌঁছে যাবো । মসৃন পথ NH ৩৪ গাড়ি উড়ে চললো পথ পেরোতে লাগলো মাইলের পর মাইল নির্ঝঞ্ঝাটে। ১:৩০ ঘন্টায় কৃষ্ণনগর পৌঁছে গেছি চারি দিকে উন্নয়নের বন্যা মানুষের হাতে হাতে কাজ, কলকারখানায় সাইরেন পরছে। এক জমজমাট দেশ। সরপুরিয়া আর সরভাজা আজও সমান জনপ্রিয় অধরের দোকানে। হাই স্পিড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে নর্থ বেঙ্গল ৬-৮ ঘন্টায় চলে যাচ্ছে সবাই।
কি ভাবছেন স্বপ্ন? ঠিকই ধরেছেন বাংলায় এ দৃশ্য স্বপ্নেই পাবেন, বাস্তবে কি পাবেন, শুনুন তবে । বারাসাত পার করলেই শুরু হবে সেই রাস্তা যা কোনো রকম ট্রেনিং ছাড়াই আপনাকে সম্মানীয় উদয়শঙ্করের নৃত্য কৌশল শিখিয়ে দেবে অল্প সময়ে। কম করে আধ হাত, এক হাত করে গর্ত, তারপর যদি বৃষ্টি পরে, তবে তো সোনায় সোহাগা। কোনটা পুকুর, কোনটা এমনি জল জমেছে, বুঝেতে হলে সোনার রাডার ইত্যাদি লাগবে ।
৬ ঘন্টায় পৌছালাম কৃষ্ণনগর। সকালের প্রাতরাশ নিয়ে বসে থাকা বন্ধু পত্নী, দুপুর ২:৩০ তে সেই খাবার যখন দিলেন, গায়ের ব্যাথায় সরভাজা আর সরপুরিয়া যেন স্বাদ হারালো ।
এবার চললাম মায়াপুর খুব বেশি হলে ১ ঘন্টার পথ, এক পরিচিত স্বামীজিকে ফোন করলাম বললেন ২ ঘন্টা পরে তিনি বেরিয়ে যাবেন, আমরা বললাম আসছি। এবার কৃষ্ণনগর থেকে মায়াপুর রাস্তায় কি হলো । তবে এককথায় দুয়ারে পুকুর বা রাস্তায় পুকুর প্রজেক্ট বাস্তবায়িত হয়েছে ।
বাংলার নাগরিক হিসাবে জানতে চাই, মায়াপুরের মতো একটি আন্তর্জাতিক টুরিস্ট লোকেশনের রাস্তা যদি যানচলাচলের অযোগ্য হয়, তবে কোন উন্নয়নের ছবি আমরা তুলে ধরছি বিশ্বের দরবারে? বামুনপুকুর অঞ্চলের অংশে রাস্তা বলে আর কিছু নেই । শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর দেশে কীর্তনের সাথে না নাচলেও, এই রাস্তায় গর্ভবতী মায়েদের নিয়ে গেলে, রাস্তায় যে নাচ নাচতে হয় তাতে বিপদ অনিবার্য্য, এমনকি কোনো গুরুতর অসুস্থ্য রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।
ইস্কন থেকে বহুবার ডিএম অফিস কে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। গালভরা উন্নয়ন সমগ্র জাতির মাথা হেট্ করে দিচ্ছে।
আমাদের নিজেদের দেখে আসা রাস্তা যদি এমনি থাকে, তবে সকলকে অনুরোধ নবান্নে মন্ত্রীদের নিয়ে শক অবসার্ভার ছাড়া গাড়িতে রোজ সকাল বিকেল মায়াপুর ঘুরিয়ে আনুন রাস্তা ভালো হোক আর নাই হোক, উন্নয়নের ছবি এমআরআই করে সকলে দেখতে পাবেন নিজের শিরদাঁড়ায়, অবশ্য এখনো যদি মেরুদণ্ডী কেউ থেকে থাকেন বাংলায় ।
এই নির্লজ্জ প্রচার সর্বস্ব রাস্তার চিত্র খুবই বেদনাজনক, দ্রুত রাস্তার উন্নয়ন হোক ও টুরিস্ট স্পট গুলির রাস্তা ঠিক করে লক্ষীর ভান্ডার উপচে পড়ার প্রকৃত ব্যাবস্থা হোক । অথচ কালনা হয়ে ডানকুনি এলে রাস্তা কিন্তু মতের ওপর ভালো। একই রাজ্যে কেন এই বৈমাত্রী সুলভ আচরণ পাবে কৃষ্ণনগর মায়াপুর নবদ্বিপের মানুষ?
হেলিকাপ্টারে রাজ্য ভ্রমণ করলে রাস্তার উন্নয়ন পুকুর চুরি হয়েই থেকে যায় ।