আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল মিশন সহজে ব্যবহারযোগ্য এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবে, যেটির ডিজিটাল স্বাস্থ্য ইকোসিস্টেমের মধ্যে অন্যান্য স্বাস্থ্য সম্পর্কিত পোর্টালগুলির সঙ্গে সমন্বয় থাকবে
জন ধন – আধার ও মোবাইল – এই ত্রিমুখী ব্যবস্থার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের কোথাও এত বড় মাপের পারস্পরিক সম্পর্ক যুক্ত পরিকাঠামো নেই
রেশন থেকে পুষ্টি সর্বত্রই ডিজিটাল পরিকাঠামো দ্রুত ও স্বচ্ছতার সঙ্গে সাধারণ মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দিচ্ছে
টেলিমেডিসিন ক্ষেত্রেও অভাবনীয় অগ্রগতি হয়েছে
আয়ুষ্মান ভারত – পিএমজেএওয়াই দরিদ্র মানুষের জীবনে একটি বড় সমস্যার সমাধান করেছে। এখনও পর্যন্ত ২ কোটিরও বেশি দেশবাসী, যাঁদের অর্ধেক মহিলা এই কর্মসূচির সুবিধা নিয়েছেন
আয়ুষ্মান ভারত – ডিজিটাল মিশন সারা দেশে হাসপাতালগুলির সঙ্গে ডিজিটাল স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে পারস্পরিক যোগসূত্র গড়ে তুলবে
সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যতের লক্ষ্যে বড় বিনিয়োগ
আমাদের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো যখন সংহত ও শক্তিশালী হবে, তা পর্যটন ক্ষেত্রের বিকাশ ঘটাবে
by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল মিশনের সূচনা করেন।
এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য পরিষেবা পরিকাঠামোকে মজবুত করে তোলার লক্ষ্যে গত সাত বছর ধরে যে অভিযান চলছে, আজ তা এক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করছে। “আজ আমরা এমন এক মিশনের সূচনা করছি, যার ফলে ভারতের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসার সম্ভবনা রয়েছে” বলে প্রধানমন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৩০ কোটি আধার, ১১৮ কোটি মোবাইল গ্রাহক, প্রায় ৮০ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এবং প্রায় ৪৩ কোটি জন ধন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিয়ে যে পরিকাঠামো গড়ে উঠেছে, তা বিশ্বের আর কোথাও নেই। বিশ্বে এত বড় মাপের ডিজিটাল পরিকাঠামো সাধারণ মানুষের কাছে রেশন থেকে পুষ্টি সব পরিষেবা দ্রুত ও স্বচ্ছতার সঙ্গে পৌঁছে দিচ্ছে। “প্রশাসনিক ক্ষেত্রের সংস্কারে যেভাবে আজ প্রযুক্তির প্রয়োগ হচ্ছে, তা অভাবনীয়” বলে প্রধানমন্তী মন্তব্য করেন।
আরোগ্য সেতু অ্যাপ করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী নিঃশুল্ক টিকাকরণ অভিযানের আওতায় রেকর্ড প্রায় ৯০ কোটি টিকার ডোজ দিয়ে যে সাফল্য অর্জিত হয়েছে, তার পেছনে কো-উইন ব্যবস্থার ভূমিকার প্রশংসা করেন।
স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, করোনার সময় টেলিমেডিসিন ক্ষেত্রে অভাবনীয় অগ্রগতি হয়েছে। তিনি জানান, ই-সঞ্জিবনী ব্যবস্থার মাধ্যমে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১২৫ কোটি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে ই-সঞ্জিবনী ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ বাড়িতে থেকেই শহরগুলির বড় হাসপাতালের চিকিৎসকদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আয়ুষ্মান ভারত – প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা (পিএমজেএওয়াই) দরিদ্র মানুষের জীবনে একটি বড় সমস্যার সমাধান করেছে। এখনও পর্যন্ত দেশের ২ কোটিরও বেশি মানুষ এই কর্মসূচির সুবিধা নিয়েছেন। সুবিধাপ্রাপকদের অর্ধেকই মহিলা বলেও তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, অসুস্থতা এমন একটি বিষয়, যা পরিবারকে নিদারুণ দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দেয়। আর এর সর্বাধিক প্রভাব পড়ে পরিবারের মহিলাদের ওপর। আসলে মহিলারা সর্বদাই নিজেদের স্বাস্থ্যের বিষয়টিকে অবহেলা করেন। শ্রী মোদী আরও বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে আয়ুষ্মান ভারত কর্মসূচির কয়েকজন সুফলভোগীর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাঁদের মুখ থেকে এই কর্মসূচির সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে জেনেছেন। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে এ ধরনের উদ্যোগ দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যতের নিরিখে বড় বিনিয়োগ।
শ্রী মোদী আরও বলেন, আয়ুষ্মান ভারত – ডিজিটাল ভারত এখন থেকে দেশের হাসপাতালগুলির ডিজিটাল স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যোগসূত্র গড়ে তুলবে। এমনকি, এই ব্যবস্থার ফলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ও চিকিৎসা পরিষেবা ব্যবস্থা আরও সহজ হয়ে উঠবে। পক্ষান্তরে, সাধারণ মানুষ লাভবান হবেন। ডিজিটাল স্বাস্থ্য মিশনের মাধ্যমে প্রত্যেককে ডিজিটাল পরিচয়পত্র দেওয়া হবে এবং তাঁদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে সুরক্ষিত থাকবে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।
ভারতে একটি সার্বিক এবং সুসংহত স্বাস্থ্য মডেল গড়ে তোলার কাজ চলছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ব্যবস্থার মাধ্যমে রোগ প্রতিকারের উপর গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি, অসুস্থতার ক্ষেত্রে সহজে ও সুলভে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া যাবে। স্বাস্থ্য-শিক্ষা ক্ষেত্রে অভাবনীয় সংস্কারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ৭-৮ বছরের তুলনায় এখন চিকিৎসক ও আধা-চিকিৎসকদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। দেশে এইমস্ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য আধুনিক স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে সুসংবদ্ধ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। এমনকি, প্রতি তিনটি লোকসভা কেন্দ্রে অন্ততপক্ষে একটি করে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের কাজ চলছে। গ্রামে স্বাস্থ্য পরিষেবা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও রোগী কল্যাণ কেন্দ্রগুলির পরিষেবার মান বাড়ানো হচ্ছে। সারা দেশে গ্রামগুলিতে এ ধরনের ৮০ হাজারেরও বেশি কেন্দ্র চালু রয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।
বিশ্ব পর্যটন দিবসে ডিজিটাল স্বাস্থ্য মিশন কর্মসূচির সূচনা হচ্ছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পর্যটনের সঙ্গে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। “তাই, আমাদের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো সংহত ও শক্তিশালী হয়ে উঠলে, তা পক্ষান্তরে পর্যটন ক্ষেত্রের বিকাশেও সহায়ক হবে” বলে শ্রী মোদী অভিমত প্রকাশ করেন।