মিসেস হোলিস্টিক হেলথ এর খেতাব জিতলেন কোলকাতার প্রতিযোগী মেঘা সিনডে
কলকাতা,08 December 2021
কলকাতার গৃহিণী মেঘা সিনডে জিতে নিলেন২০২১ সালের মিসেস ইন্ডিয়া প্রাইড অফ নেশনের মিসেস হোলিস্টিক হেলথের শিরোপা।কলকাতার 118 জন প্রতিযোগীর মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় খেতাবটি উঠে উঠে এলো মেঘা মাথায় । ছোট থেকে বরাবর নিজেকে মঞ্চের পাদপ্রদীপের আলোয় দেখতে চেয়েছেন মেঘা । ছোট থেকেই মঞ্চ তাকে টানে , যদিও এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়াটা তার ক্ষেত্রে একেবারে অনিচ্ছাকৃত ছিল। বিবাহিত জীবনে দুই সন্তানের জননী হওয়ার পরও নিজের স্বপ্নকে ভুলে যাননি তিনি। বরং পরিবার ও সন্তানের দায়িত্ব সামলে নিজেকে কর্পোরেট দুনিয়ার যোগ্য করে তুলেছেন । কর্মক্ষেত্রে তিনি দুই বিপরীত মেরুর কাজকে একযোগে সামলান। একদিকে কর্পোরেট দায়িত্ব অন্যদিকে পিছিয়ে পড়া মেয়েদের জন্য কাজ করা – এই দুই ক্ষেত্রেই মেঘা সমান পারদর্শী ।তার এই পথ চলা আগামী দিনে অনেক কম বয়সী মেয়েকে স্বপ্ন দেখতে সাহায্য করবে বলে আশা করেন তিনি। একইসঙ্গে এই জয়কে তিনি নিজের স্বপ্ন সফলের জন্য বড় সোপান বলেও মনে করেন।
2012 সাল থেকে অবাঙালি মেঘা পাকাপাকিভাবে কলকাতায় বসবাস শুরু করেন। খেতাব জয় প্রসঙ্গে মেঘার বক্তব্য, ” আমি সবসময় চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসি। স্কুল-কলেজের দিনেও আমি একা এবং গ্রুপে অনেক কাজ করেছি যেগুলো আমাকে অনেকাংশে সাহস জুগিয়েছে। একজন মা , একজন গৃহিনী হিসাবে আমার আলাদা আলাদা ভূমিকা রয়েছে। আবার সমাজের পিছিয়ে পড়া মহিলাদের জন্য কাজ করতে গিয়ে আমার আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বেড়েছে।” অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিশিষ্ট অভিনেত্রী মধুরিমা তুলি বলেন , “এমন বুদ্ধিদীপ্ত সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা এবং সুন্দরীদের সান্নিধ্যে আসতে পেরে আমি আনন্দিত।”
মেঘা একেবারেই এই সময়ের এক নারী যিনি শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য নয় মানসিক তথা সার্বিক সৌন্দর্যে বিশ্বাসী। এবং ঠিক সেই জায়গা থেকেই এই সাবটাইটেল জয়।
তিনি প্রতিটি ক্ষেত্রে সবসময় তার পরিবারকে পাশে পেয়েছেন এবং সেই কারণে নিজেকে ধন্য মনে করেন ।কর্মসূত্রে দীর্ঘ সময় বাইরে থাকলেও তিনি টেলিফোনে সন্তানদের সঙ্গে সর্বক্ষণ যোগাযোগ রাখেন। তাদের সব বিষয় মেঘার কড়া নজরদারি চলে। তার সহকর্মীরা অন্তত তাকে সেভাবে দেখে অভ্যস্ত। কর্মজগৎ হোক কিংবা পারিবারিক ক্ষেত্র- কখনোই কোনো দায়িত্ব নিতে পিছপা হন না তিনি । দশভূজা হয়ে সামলান সবটাই- যা হয়তো তার বয়সি নারীদের ক্ষেত্রে দু দুর্লভ।
নিজের মেয়ের আগ্রহেই এই প্রতিযোগিতায় তার যোগ দেওয়া। জানিয়েছেন, “আমি একদিন একটি পত্রিকার পাতা ওল্টাচ্ছিলাম, হঠাৎ আমার মেয়ে আমায় বললো, মা তুমি কেন সুন্দরী প্রতিযোগীতায় অংশ নিচ্ছো না। আমি রাজি হইনি। তখন মেয়ে আমায় সাহস যোগায়। বলে হারজিত টা বড় কথা নয়। তুমি অংশ নিলে সেটা আমাদের কাছে বড় পাওনা হবে। তা ছাড়াও আমার পথ চলা আগামী দিনে আমার সংস্থার মেয়েদের উদ্বুদ্ধ করবে, সেটাও একটা কারণ ছিল প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার।” বিচারকদের চুলচেরা বিশ্লেষণের পর মেঘার এই খেতাব জয়। “আমার মনে হয় আমি যথাযোগ্য সম্মান পেয়েছি এবং আমি ভীষণ খুশি। একই সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতাও ভীষণ ভালো।” জানিয়েছেন মেঘা। গত 13 ই নভেম্বর গুরগাঁও এর লীলা এমবিএন্সে মিসেস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতার আসর বসেছিল। সারা বিশ্ব থেকে 17000 প্রতিযোগী অংশ নেন। চূড়ান্ত পর্বের 128 প্রতিযোগীর মধ্য থেকে সেরা 10 বেছে নেওয়া হয়।শেষে সেরা দশ থেকে সেরা তিন নির্বাচণ করা হয়। প্রতিযোগিতার জন্য কোরিওগ্রাফি করেন শী লোবো।