১৫-১৭ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতির বাংলাদেশ সফর বিষয়ে মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন
ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর ২০২১:
বিশেষ সংবাদদাতা আনোয়ারুল হক ভুঁইয়া
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুরা, আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।
০২। শুরুতেই আজকে উপস্থিত সকলকে আমার পক্ষ থেকে বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তীর শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আজকে বিশেষ এই দিনে প্রথমেই আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে চাই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস রচয়িতা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সেই সাথে স্মরণ করতে চাই ৩০ লাখ শহিদদের যাদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা। শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি আমার ২ লাখের বেশি মা-বোনকে যাদের ত্যাগ আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করার আকাঙ্ক্ষাকে শাণিত করেছে এবং আমরা অর্জন করেছি এ স্বাধীনতা। আমি এই মাত্রই জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে আমাদের বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে এক মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ উপভোগ করে আসলাম। এবারের কুচকাওয়াজ অন্যান্য যে কোন বারের থেকে এক বিরল তাৎপর্য বহন করে। এবারের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে প্রথমবারের মত বাংলাদেশ এবং ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি একইসাথে কুচকাওয়াজ উপভোগ করলেন। আমাদের দেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে বিজয় দিবসে কুচকাওয়াজ উদ্যাপনে দুইটি দেশের রাষ্ট্রপতির অংশগ্রহণ এই প্রথম। সেজন্য আমি, ভারতের রাষ্ট্রপতির প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুরা,
০৩। আপনারা অবগত আছেন যে, বিজয়ের এই মাসে ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি শ্রী রাম নাথ কোবিন্দ তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গতকাল ১৫ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছেন। তিনি বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী, মুজিব বর্ষের সমাপনী দিন উদ্যাপন এবং বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এই সফর করছেন। এ রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতের ফার্স্ট লেডি এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতির কন্যা, ভারতের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, একজন সংসদ সদস্য, পররাষ্ট্র সচিব সহ বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাগণ তার সঙ্গী হিসেবে আছেন। উল্লেখ্য, ভারতের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি বাংলাদেশে তাঁর প্রথম সফর।
০৪। গতকাল ১৫ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ সকাল ১১:৩০ ঘটিকায় ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি সহ ভারতীয় প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশে পৌছালে মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং বাংলাদেশের ফার্স্ট লেডি হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে তাদের স্বাগত জানান। এসময় ভারতের রাষ্ট্রপতিকে বিমান বন্দরে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এরপর তিনি সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। একই দিন দুপুরে তিনি ধানমন্ডি ৩২-এ অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন এবং জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
০৫। গতকাল বিকেল ০৪:০০ ঘটিকায় আমি ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করি। প্রথমেই ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। ২০২১ সালকে বাংলাদেশের জন্য একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বছর হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী, মুজিব বর্ষের সমাপনী দিন উদ্যাপন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানান। এসময় আমি বাংলাদেশ সফরের জন্য ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানাই। ভারতের ‘Chief of Defence Staff’ জেনারেল বিপিন রাওয়াতের মৃত্যুতে আমি গভীর শোক জ্ঞাপন করি। পরবর্তীতে বাংলাদেশ এবং ভারতের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে তাঁর সাথে আমার আলোচনা হয়। আমি তাঁর সাথে আলোচনার সময়ে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের সামগ্রিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার উপর গুরুত্ব আরোপ করি। এসময় আমি তাঁকে আরো বলি যে, বাংলাদেশ এবং ভারতের সম্পর্কের মূল ভিত্তি হচ্ছে পারস্পরিক বিশ্বাস এবং আস্থা। ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি এসময় বলেন যে, ভারতের neighbourhood first তত্ত্বের অন্যতম ভিত্তি হচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এবং ভারতের আঞ্চলিক এবং বহুপাক্ষিক অঙ্গনে পারস্পরিক সহযোগিতা আরো সুসংহত করার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। দক্ষিণ এশিয়া একসময় ধনী অঞ্চল হিসেবে পৃথিবীর বুকে সমাদৃত ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন যে, আঞ্চলিক যোগাযোগ/কানেক্টিভিটি স্থাপনের মাধ্যমে পুরনো গৌরবময় অধ্যায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এসময় তিনি সহযোগিতার নতুন নতুন ক্ষেত্র যেমন, কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা, সবুজ অর্থনীতি, পারমানবিক শক্তি, বিগ ডাটা, তথ্য প্রযুক্তি ইত্যাদি বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা স্থাপনের বিষয়ে জোর দেন। এসময়ে আমি দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক আরো বেগবান হবে বলে তাঁকে আশ্বস্ত করি এবং “Forcibly Displaced Myanmar Nationals”-দের তাদের নিজ দেশ মায়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য ভারতের সহযোগিতা কামনা করি।
০৬। পরে, ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাথে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সৌজন্য সাক্ষাত করেন। সৌজন্য সাক্ষাতকালে ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী, মুজিব বর্ষের সমাপনী দিন উদ্যাপন এবং বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানসমূহে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভারতের ‘Chief of Defence Staff’ জেনারেল বিপিন রাওয়াতের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন। এসময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করোনা অতিমারীর মধ্যেও বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সফর করার জন্য তাঁকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। এ পর্যায়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে যখন ভারত বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় সেই সময়টি স্মরণ করেন। এসময় তিনি ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশকে সমর্থন এবং সহযোগিতা প্রদানের জন্য ভারতের জনগণ এবং সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এরপর বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদির উপর আলোকপাত করেন। তাঁরা গত ০৬ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে বাংলাদেশ এবং ভারত কর্তৃক মৈত্রী দিবস উদ্যাপনে সন্তোষ প্রকাশ করেন। ভারতের রাষ্ট্রপতি বলেন যে, দুই দেশের বন্ধুত্বের ভিত্তি হচ্ছে pluralism, secularism এবং democracy। এসময় তাঁরা দুইদেশের সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আলোচনার মাধ্যমে দুইদেশের বিষয়াদি সমাধানের উপর সন্তোষ প্রকাশ করেন। দুইদেশের মধ্যে সহযোগিতা দুইদেশের মধ্যে স্থিতিশীলতা আনবে বলে তিনি মত দেন। ভারতের রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা এবং সাম্প্রতিক আর্থ-সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণের প্রশংসা করেন। ভারতের রাষ্ট্রপতি দুই দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে Comprehensive Economic Partnership Agreement (CEPA) সম্পন্ন করার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন।ভারতীয় রাষ্ট্রপতি দুর্গাপূজার সময় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকার ব্যাপক প্রশংসা করেন। এপ্রেক্ষিতে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, বাংলাদেশে কোন সংখ্যালঘু নেই, সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। বাংলাদেশ ধর্ম নিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন যে, বাংলাদেশ ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ এই নীতিতে বিশ্বাস করে। এ পর্যায়ে, ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি আম পাঠানোর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল মিউজিয়াম প্রদর্শনী, বঙ্গবন্ধু-বাপু স্মারক ডাক টিকেট উদ্বোধন, বঙ্গবন্ধুর জীবনের উপর বায়োপিক নির্মাণ উদ্যোগসমূহ দুইদেশের সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করবেন বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
০৭। পরবর্তীতে, তিনি বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাথে বঙ্গভবনে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। এসময় ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালাম -এর বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করেন। এ পর্যায়ে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন সময়ে তাঁর ভারত সফরের কথা উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে মেঘালয়ের বালাত শহরে থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের স্মৃতি রোমন্থন করেন। ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি দুইদেশের দূর্লভ যোগসূত্রের ভিত্তি একই ইতিহাস, সংস্কৃতি, ভাষা, কৃষ্টি ও সভ্যতা থেকে উৎসরিত বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহিদ হওয়া বাংলাদেশী এবং ভারতীয় যোদ্ধাদের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ার পর এটিই তাঁর প্রথম বিদেশ সফর। এবছর বাংলাদেশের ০৪ জন বিশিষ্ট নাগরিককে ভারতীয় “Padma” পদক প্রদান করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ২০২০ সালে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর ১২২ জন সদস্য ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করেন বলে তিনি জানান এবং ২০২১ সালে বাংলাদেশের বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর উৎসবে সমান সংখ্যক ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য অংশগ্রহণ করবেন বলে তিনি বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন।
এ পর্যায়ে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতির ভাই কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করায় তিনি গভীর শোক প্রকাশ করেন। তিনি আরো বলেন যে, বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যারা ভারত থেকে প্রথম কোভিড-১৯ এর টীকা পেয়েছে এবং কিছুটা সময় টীকা হস্থান্তর বন্ধ থাকার পর বর্তমানে ভারত বাংলাদেশের কাছে পুনরায় টীকা হস্থান্তর শুরু করেছে। ভারত বাংলাদেশের সাথে ব্যবসা বাণিজ্যে আরো সম্প্রসারণ করতে আগ্রহী বলে ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি অভিমত প্রকাশ করেন। এছাড়াও, দুই দেশের জাতীয় সংসদের মধ্যে সহযোগিতা আরো জোরদার করা জরুরী বলে তিনি মত দেন। তিনি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নিরসনে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি এসময় ভারতের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মার্চ ২০২১ সালের বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করেন। এছাড়াও, তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতিকে তাঁর পরিবারের সদস্যদের বাংলাদেশে সফর সঙ্গী করার জন্য ধন্যবাদ জানান। কোভিড-১৯ এর নতুন ভ্যারিয়েন্টের প্রাদুর্ভাব বাংলাদেশ এবং ভারত একসাথে মোকাবেলা করবে বলে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এসময়ে ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালীন সময়ে বাংলাদেশ থেকে প্রয়োজনীয় ঔষধ এবং অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রী প্রেরণ করার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সৌজন্য সাক্ষাতের পর ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত একটি টি-৫৫ ট্যাংক এবং একটি মিগ-২১ যুদ্ধ্ব বিমান বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষণ এবং প্রদর্শনের জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে উপহার হিসেবে প্রদান করেন। এরপর ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক আয়োজিত নৈশভোজে অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ভারতের রাষ্ট্রপতির সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শ্রদ্ধেয় শেখ রেহানা, মন্ত্রিবর্গসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। নৈশভোজের পূর্বে সকলে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
০৮। সফরের দ্বিতীয় দিন আজ ১৬ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ‘গেস্ট অব অনার’ হিসেবে বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। আজ বিকেলে তিনি জাতীয় সংসদ ভবনের সাউথ প্লাজাতে বাংলাদেশের বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর ঐতিহাসিক মুহূর্তে জাতির পিতার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং রক্তস্নাত বিজয়ের আবেগ ও আনন্দ উদ্যাপনের জন্য আয়োজিত “মহাবিজয়ের মহানায়ক” অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন। উক্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় স্পিকারসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থাকবেন।
০৯। সফরের তৃতীয় দিন ১৭ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ঢাকার রমনাস্থ কালী মন্দিরের সদ্য সংস্কারকৃত অংশের উদ্বোধন করবেন এবং মন্দিরটি পরিদর্শন করবেন। এসময়ে তিনি মন্দির সংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্যদের সাথে সংক্ষিপ্ত পরিসরে মত বিনিময়ের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। একই দিনে রাষ্ট্রীয় সফর শেষে দুপুর বেলায় তিনি দিল্লীর উদ্দ্যেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন।
১০। আপনাদের অবগতির জন্য জানাতে চাই যে, বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে ভারতের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের জনগণের জন্য শুভেচ্ছাবার্তা প্রেরণ করেছেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শংকর তাঁর এক টুইটে বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তীতে আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। আপনাদের মনে আছে যে ২০২১ সালের ২৬-২৭ মার্চ তারিখে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, মুজিব বর্ষ উদ্যাপন এবং বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাংলাদেশ সফর করেন। একই বছরে ভারতের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর যে কোন দেশে রাষ্ট্রীয় সফর একটি বিরল দৃষ্টান্ত, যা দুইটি প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বিদ্যমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কেরই প্রতিফলন। ১৯৭১ সালে আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের জনগণ এবং সরকার আমাদের দেশের প্রতি বন্ধুত্বের যে হাত বাড়িয়েছিল, ৫০ বছর পরেও বন্ধুত্বের সেই বন্ধন আজও অম্লান।
আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।