নন্দিত নরকে আমরা সবাই উলঙ্গ রাজা
সুমন মুন্সী, কলকাতা
জন্মে ছিলাম এই বঙ্গে , কয়েক দশক আগে,
সমাজ তখন বদলে দেবার ডাক দিত, সকলে মিলে।
জনগণের দাবিতে ভাই, মিটিং মিছিল করে খাই,
লেখাপড়া নাইবা জানি, কিন্তু গান্ধী,সুভাষ বা মার্ক্স আউড়ে যাই।
ভাবের ঘরে চুরি করে রামকে পাঠাই বনবাস,
সীতা যদি প্রশ্ন করেন, লক্ষণ ভাই রেখা কই ?
প্রশ্ন শুনে নেতা হেসে বলে,
রাবণ আর ঘরের বাইরে কই?
গণতন্ত্রের দরজা খোলা, কালোবাজারে পথে,
বিক্রি হয় জনতা দেখো, কয়েক মুঠো চাল পেতে।
বিদ্যা শিক্ষা, স্কুল কলেজ নামেই শুধু আছে,
শিক্ষা ছাড়া সেসব ব্যাস্ত আছে, অন্য কোনো কাজে ।
জাতি যখন খুঁড়িয়ে চলে, সমাজ যায় ঝুঁকে,
জাতির পিতাও কি তাই দাঁড়িয়ে, লাঠি হাতে ঝুঁকে ?
চোরের হাতে দেশ তুলে দিয়ে, দরজায় দাও তালা,
কারখানাতে পরালে তালা, ভাগ্য কি আর যায় খোলা ?
গণতন্ত্রের হত্যা দেখে চুপ থাকে যে জাতি,
তার জীবনে জ্বলবে না, কোনো দিনই আর বাতি।
সমাজ বদলের বৃথা ডাক দাও, সমাজ যে আজ মমি,
কফিনেতে, শুয়ে ভবিষ্যৎ , তবু স্বপ্ন দেখে মরা জাতি ।
আবার যদি মানুষ আসে উলঙ্গ এই রাজার দেশে,
সে মানুষও উলঙ্গই থাকবে, নৈতিক না হলে ।
রং দেখে আর ঢং করো না, সবই ফাঁকিবাজী,
দেশকে বেঁচে, প্রাসাদ গড়ি , খেলি কানামাছি ।
উলুবনে মুক্তা ছড়ায়, আজব বেকুব এক সুমন,
মোড়ের মাথায় দাঁড়িয়ে আছে নানা রঙেরই দুশমন।
দেশের কথা আজও ভাবে, এমনই বোকা মানুষ,
গণতন্ত্র বোবা কালা, অন্ধই তো কানুন ।
শেষ বিচারে কিন্তু মানুষই জিতবে,
বিশ্বাস রাখো সবাই মজবুত।
তাই মরার আগে মরবো না,
উলঙ্গ রাজা তোমায় কিন্তু ছাড়বো না,
দিন বাদলের গান গাই,
সমাজ তোমায় সাথে চাই ।
তাই যতদিন না জাগছে মানুষ,
লক্ষ কথার জ্বলছে ফানুস।
সেই ফানুশের মেকি আলোয়,
তাকিয়ে দেখ নাচে নির্বোধ মানুষ।
উলঙ্গ রাজা, উলঙ্গ প্রজা,
ঠগ বাছতে, গাওঁ বাঁচা ।
কবি, শিশু আর কবে বলিবে?
রাজা, তোদের কাপড় কোথায়?