অন্য অন্ন ,অন্য্ চিন্তা
সুমন মুন্সী, কলকাতা
বাবু খিদা লাগিছে বলে দ্বারে,দ্বারে ভিক্ষা করিব?
মানুষ হয়ে মানুষের সামনে সম্মান বিক্রি করব?
দুমুঠা ভাত দিবি বলে লাইনে বাসায়ে ছবি তুলিস,
কত বড় দাতা হোলি সেই ছবি দেখায়ে, ভোট চাস?
তা বাবু সত্তর বছর তো দিলাম তুদের,
লাল, সবুজ ,নীল বা গেরুয়া কতো রং পাল্টালি,
জীবন থিকে জীবন চুরি করাই বুঝি রাজনীতি?
সুলেমানের মা আমায় ভাত খাইয়েছিল বলে, আমি একঘরে।
আর তিন দিনের খিদার জ্বালায় যখন কাতর,
এক থালা ভাতের বিনিময়ে, আমার ইজ্জ্বত নিলি,
তখন কি আমি ছিলাম না এক ঘরে?
তুদের সোহাগের ফসল যখন পেটে ধরলাম,
সালিশী সভায় বিচার করে বেশ্যা বানালি সবাই মিলে ।
কি সোন্দর বিচার তুদের, যে বানাইলো পোয়াতী মোরে,
সেই অপবাদ দেয় কলঙ্কিনী বলে ?
এক মুঠো গরম ভাত আজ ঈশ্বর বটে,
মন্দির, মসজিদ বা গির্জায় কেউ নাই,
ঈশ্বর থাকে কাঙালী ভোজের পংতিতে।
আবার তোদের শখ জেগেছে,
রোগের বাহানায়, সব বন্ধ করে দে,
ক্ষুধা কেও বাবু দে না বন্ধ করে,
কেনে রোজ রোজ খুঁজি অপমানের দুমুঠো ভাত,
আর খুঁজতে নারাজ দিনরাত অপমানের ভাত।
সম্মানের ভাতের জোগাড়ের রাস্তা বন্ধ করে,
সমাজ কেন দেয় আগায়ে ভাত দয়ার নাম করে?
বাবু এ এক অন্য্, অন্ন চিন্তা,
সম্মানের সাথে পেলে আশীর্বাদ,
না হলে গড়ল সম অভিশম্পাত।
আজ ভুখা হাতে হাতিয়ার চাই,
তাই কি কলমের কারখানা হলো বন্ধ,
চেতনার রঙে কি আর রাঙা নয় দিগন্ত?
আবার সবাই মানুষ হও,সব হাতে কাজ চাও ,
দোয়ার অন্ন ছেড়ে,অধিকারের অন্ন চাও।
বিপ্লবের কোনো রং হয়না,
সম্মানের কোনো দাম হয়না,
দেশ কে বেচে কি দাম নেবে,
দিনের শেষে তিন হাত মাটিই পাবে।
পেশায় শিক্ষক অরূপ মিত্র ছুটে চলেন জীবনের খোঁজে, চলেন মানুষের খোঁজে , ঘুরে দেখেন মানুষের কান্নার কারণ আজও পাঠালেন জীবনের এক নির্মাণ ছবি মুর্শিদাবাদের রেজিনগর থেকে ।
সুদূর মুর্শিদাবাদ অঞ্চলের রেজিনগর গ্রামের কিছু শিশুর চিত্র।সত্যি অন্নই যে ঈশ্বর এদের চোখগুলো কে যখন দেখি তখন হৃদয়ের মধ্যে তা অনুভব করি।এই গ্রামের অবস্থা খুব সঙ্কটজনক।এই রকম কত শিশু আমাদের সমস্ত ভারতবর্ষে ছড়িয়ে আছে।
যখন ঠান্ডা ঘরে সাদা ধবধবে টেবিলের ওপরে বসে বসে আমরা মুরগির ঠ্যাং চিবই তখন ভারতবর্ষের কোনো এক কোনে একটা শিশু হয়তো দুটো ভাতের জন্য কাঁদে। কতো খাবার আমরা ডাস্টবিনে ফেলে দি আর অন্যদিকে দুটো খাবারের জন্য কতো মানুষ কাঁদে।
অরূপের পাঠানো এই খবরের উত্তরে আমার একটি ছোট্ট প্রয়াস ।