আইএএস/আইপিএস/আইএফএস (ক্যাডার) বিধির সংশোধনের জন্য মূল তথ্য
আইএএস/আইপিএস/আইএফএস অল ইন্ডিয়া সার্ভিসেস ১৯৫১র এআইএস আইনের অধীন। এই পরিষেবার অভিনব বৈশিষ্ট্যটি হল এঁদের নিয়োগ করে কেন্দ্রীয় সরকার এবং তাঁদের সার্ভিস বিভিন্ন রাজ্য ক্যাডারে বিভক্ত করা হয়। এই সার্ভিসের সদস্যদের দায়িত্ব রাজ্য এবং কেন্দ্রের অধীনে কাজ করা।
কেন্দ্রে আইএএস অফিসারদের সেবা নিশ্চিত করতে ১৯৫৪-র আইএএস (ক্যাডার) বিধিতে যথোপযুক্ত সংস্থান রাখা হয়েছে। সেগুলি হল নিম্নরূপ :
• ১৯৫৫র দি ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিসট্রেটিভ সার্ভিস (ফিক্সেসন অফ ক্যাডার স্ট্রেংথ)বিধিতে সংস্থান আছে কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনের জন্য রিজার্ভ রাখা যাবে একজন ক্যাডার বা জয়েন্ট ক্যাডারের অনুমোদিত ডিউটি পোস্টের ৪০ শতাংশ পর্যন্ত।
• ১৯৫৪-র আইএএস (ক্যাডার) বিধির ৪ নম্বর বিধি অনুযায়ী ২৪.০৩.১৯৬৬ তারিখের ভারত সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রয়োজনে রাজ্য ক্যাডার থেকে কেন্দ্রে ডেপুটেশনে ভারত সরকারের অংশ স্থির করা আছে। সব মিলিয়ে ভারত সরকারের ডেপুটেশনের সীমা এই কোটা থেকেই নির্ধারণ হয়।
সেইমতো যেকোন ক্যাডারের মোট বিধিবদ্ধ ক্ষমতা গণিত হয় সেন্ট্রাল ডেপুটেশন রিজার্ভকে অন্তর্ভুক্ত করে (এসডিপি-র ৪০ শতাংশ) যা ব্যবহার করা হয় ক্যাডারের শূন্যস্থান নির্ধারণেও। এছাড়া যেকোন ক্যাডারে পদোন্নতির গণনায় আইএএস-এর কোটায় অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে সিডিআর (এসডিপি-র ৪০ শতাংশ)কেও হিসাবে রাখা হয়।
তবে ভারত সরকারের যুগ্ম সচিব পর্যায় পর্যন্ত আইএএস আধিকারিকদের সংখ্যা কমার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে কারণ বেশিরভাগ রাজ্যই তাদের সিডিআর বাধ্যবাধকতা মানছে না এবং ভারত সরকারের হয়ে রাজ্যের অফিসারদের কাজ করার সংখ্যা সিডিআর-এর থেকে অনেক কম।
• সিডিআর-এ আইএএস আধিকারিকদের সংখ্যা ২০১১য় ছিল ৩০৯ আর এখন কমে দাঁড়িয়েছে ২২৩।
• সিডিআর ব্যবহার করার হার ২০১১য় ছিল ২৫ শতাংশ আর এখন কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ শতাংশে।
• যদিও আইএএস-এ ডেপুটি সেক্রেটারি/ ডিরেক্টর স্তরে আইএএস আধিকারিকদের সংখ্যা ২০১৪র ৬২১এর তুলনায় ২০২১এ ১১৩০ হলেও কেন্দ্রে ডেপুটেশনে সেইসব আধিকারিকদের সংখ্যা ওই সময়ে ১১৭ থেকে কমে ১১৪ হয়েছে। সেইজন্য ভারত সরকারের প্রয়োজন মেটাতে কেন্দ্রে ডেপুটেশনে যথেষ্ট সংখ্যক আধিকারিক পাওয়া যাচ্ছে না।
ভারত সরকারের যথেষ্ট সংখ্যক আধিকারিক না থাকায় কেন্দ্রীয় সরকারের কাজকর্ম প্রভাবিত হচ্ছে কারণ কেন্দ্রের প্রয়োজন নীতি নির্ধারণ এবং কর্মসূচি রূপায়ণে নতুন তথ্য পেতে এইসব আধিকারিকদের সেবা। ভারত সরকারে নীতি পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যোগানের মাধ্যমে তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা ব্যবহার করা প্রয়োজন কেন্দ্রের। এছাড়া রাজ্য থেকে কেন্দ্রে বা কেন্দ্র থেকে রাজ্যে আধিকারিকদের যাতায়াত কেন্দ্র এবং রাজ্য দুয়ের জন্যই উপকারী কারণ এতে আধিকারিকদের পেশাদারি দক্ষতা বৃদ্ধি পায় এবং কর্মসূচির যথাযথ রূপায়ণের জন্য রাজ্যগুলির সঙ্গে আরও ভালো সমন্বয় গড়ে তোলা যায়।
নিয়মমাফিক সিডিআর-এ প্রয়োজনীয় সংখ্যক আধিকারিক না পাঠানোর যে কারণ দেখানো হয় তা হল রাজ্য ক্যাডারে আধিকারিকদের ঘাটতি। বিষয়টি বিবেচনা করে এবং ক্যাডারে এআইএস আধিকারিকদের ঘাটতি যদি থাকে তা কেন্দ্র এবং রাজ্যকে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে ভাগ করে নিতে হবে। সেইমতো প্রস্তাব করা হয় রাজ্য ক্যাডারকে সিডিআর-এ অংশ হিসেবে সেই সংখ্যক আধিকারিকই পাঠাতে হবে যা ক্যাডারে প্রাপ্তব্য আধিকারিকদের সংখ্যার আনুপাতিক।
এতে কোনো নির্দিষ্ট ক্যাডারে আধিকারিকদের প্রকৃত ঘাটতির বিষয়টির মোকাবিলা করা যাবে। এটা উল্লেখ করা যায় যে কেন্দ্রে যথেষ্ট সংখ্যক আধিকারিক পোস্টিং-এর জন্যই শুধুমাত্র রাজ্যগুলি থেকে আধিকারিক চাওয়া হয়। রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে আলোচনা করেই কেন্দ্রীয় সরকারে ডেপুটেশন দেওয়া হবে নির্দিষ্ট সংখ্যক আধিকারিককে।
এছাড়া গুরুতর বিপর্যয়, জাতীয় নিরাপত্তা ইত্যাদির মতো নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে একজন এআইএস আধিকারিকের সেবা কেন্দ্র চাইতে পারে। একই রকমভাবে কোনো একটি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ একজন এআইএস আধিকারিকের দক্ষতার প্রয়োজন হতে পারে ভারত সরকারের কোনো গুরুত্বপূর্ণ সময় বাঁধা ফ্ল্যাগশিপ কর্মসূচি বা প্রকল্পের জন্য। চলতি ক্যাডার বিধিতে এই ধরনের পরিস্থিতির মোকাবিলা করার মতো নির্দিষ্ট সংস্থান নেই। তাই এই সংশোধনীগুলির মাধ্যমে সেটি প্রস্তাবিত হয়েছে।
Source : As found from Central Govt offiials