খোলা হাওয়া আর ফাল্গুনের পলাশ ছড়িয়ে আছে কলকাতা বই মেলার ২৯২ আর ২৫১ নম্বর স্টলে
সুমন মুন্সী
আদপ্রান্ত ব্যাস্ত শিশুর মতোই সহজ মানুষ শিশু চিকিৎসক পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায় আর তাঁর নেশায় আছে সাহিত্য ও দেশাত্মবোধ। কথা ছিল আজ ওনার স্টলে যাবো আর বই গুছিয়ে আমিও তাঁর লিমেরিক লাভার্স পাবলিশার্স এর একজন হয়ে সহযোগিতা করবো। অফিস থেকে বেরোনোর আগেই ফোন এলো ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিকাল ইন্সটিটিউটের ৫৬তম সমাবর্তন যেতেই হবে। পেশা সাংবাদিকতা নেশা বই পেশার কাছে আজ নেশা পরাজিত হলো। একটা অপরাধ বোধ কাজ করতে লাগলো কথা দিলে কথার খেলাপি হওয়া আমার পছন্দ নয়।
তাই এই চৌর্য্য বৃত্তি আর পলাশদার ভান্ডার থেকে তাঁরই অভিজ্ঞাতার কিছুকথা মাধুকরী করে নিলাম ।
কেমন হলো ২৯২ নাম্বার ষ্টল কেমন হলো আয়োজন । শোনা যাক সংস্থার প্রাণপুরুষের কণ্ঠে ।
“আজ আমাদের স্টলসজ্জা অনেক খানি শেষ হলো। আমরা মানে লিমেরিক লাভার্স পাবলিশার্স। কলকাতার ছোট খুদে প্রকাশনীগুলোর মধ্যে একটা যারা এতদিন যত না কেনাবেচার দিকে নজর দিয়েছে , তার থেকে অনেক বেশী মেতেছে আড্ডা, চা খাওয়া, গল্প আর কলকাতা বইমেলা নামের বার্ষিক পুনর্মিলন উৎসবে।
সকাল থেকে স্টলে বসে বসে বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ বেরোলাম মেলা প্রদক্ষিণে। এদিক ওদিক চাইতে চাইতে মন ভালো হয়ে গেল। অনুভব করলাম এবার তিনি ফ্লেভার ও মেজাজে নিকট অতীত মেলাগুলোর মতো নন। অতি ভালবাসার জনের সঙ্গে দীর্ঘদিন দেখা না হওয়ার পর আবার দেখা হলে যেমন নিজের অজান্তে তার সব ভালোলাগা টুকু নিংড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে পরস্পর এবার মানুষ ও মেলার দশা হয়েছে তাই। সাময়িক বিচ্ছেদের এটা বোধহয় এক সুফল।
আবার নতুন করে পাওয়া যায় সবকিছু। সব ভালবাসার ধনকে। আগামী কটা দিন আর আগামী বছরগুলোর জন্য নিশ্চিত নির্ভয়ে এ ভালো লাগার অবিচ্ছিনতা আশা করতে ইচ্ছা করে। সমৃদ্ধি ও বৈভবের মোহে আমরা সব ছোট ছোট ভালো লাগা হারাতে বসেছি। মুখোশহীন ডানা মেলা মুক্তির আকাশ এখন বড্ড মন টানে।”
ভালো বই বলতে কি বোঝায় ভালো লেখা কি নামি দামি প্রকাশনের বৃত্তের বাইরেও যে সুস্থরুচির প্রকাশ আছে তা জানতে আসুন ২৯২ নাম্বার স্টলে ।





এবার গেলাম কবি অভিজিৎ পালের সামাজিক মাধ্যমের দেয়ালে চুরি করতে আর “প্রতিবারই মিছিলে হচ্ছি বদনাম” বইটির খবর নিতে। অভিজিৎ আমার অনুজ প্রতিম তাই এই চুরির অত্যাচার ক্ষমারযোগ্য বলেই ধরে নিতে পারি । অসাধারণ কিছু কথা কবিতার বইয়ের আকারে প্রকাশিত হয়েছে । আর এই বলিষ্ঠ লেখনীকে বদনাম করে কে? সেটাই দেখার। পাঠকরা তো নয়ই এমনকি শত্রুও লজ্জা পাবে।
“প্রতিবারই মিছিলে হচ্ছি বদনাম” বইটির খবর নিতে সোজা চলে যান ২৫১ নাম্বার স্টলে।
তবে অভিজিৎ বলতে পারি একটা পুরোনো কথা, যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে চিন্তা করোনা একা মানেই পিছনে বিভীষণ ও নেই ।
,নেই মীরজাফরদের দল।
বাঙালি কি এখনো বোহেমিয়ান ফিলোজফি মেনে আজও চাঁদের পাহাড়ের শঙ্কর বা শ্রীকান্তের ইন্দ্রনাথ হতে চায়? যদি চায় তবে বইয়ের বিক্রি বাড়া উচিৎ । নাহলে আর এক সুমনের কথা বলতে হবে:
“হাল ছেড়োনা বরং কণ্ঠ ছাড়ো জোরে,
তোমায় আমায় দেখা হবে বইমেলার মাঠে।”





