কেন এতো বিতর্ক
সুনন্দ মিত্র
বিতর্কিত বিষয় কাকে বলে? আর কেনইবা বলে? কোন বিষয় নিয়ে যখন যখন সত্য ও মিথ্যার মাঝে একটা দোদুল্যমান পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় হয় বা কোন সত্য ঘটনাকে চাপা দেওয়ার জন্য অলীক গল্পের অবতারণা করা হয় তাকে বা সোজা কথায় যে সত্য ঘটনা উদঘাটনের ফলে কোন ব্যক্তি, সম্প্রদায় জাতির কলঙ্কময় দিকগুলো যেন জনসমক্ষে বেরিয়ে না পড়ে। ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের এই সত্য গোপনের চেষ্টাকেই বিতর্কিত বিষয় বলে। মানে করলে কোন দোষ নেই তবে বললে পড়ে দোষ।
আর ভারতবর্ষে এই বিতর্কিত বিষয়ের কোন শেষ নেই, যেমন দেশ ভাগ, গাঁধী হত্যা, গডসে হত্যা, কাশ্মীর, কাশ্মীরি হিন্দুদের বিতরণ ও হত্যা, অনশন অনশন খেলা, (সব ক্ষেত্রে নয় তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে) দ্বিতীয় পরমাণু পরীক্ষা, মরিচ ঝাঁপি হত্যা কান্ড বা আনন্দ মার্গী হত্যাকাণ্ড, আর এখন “দ্য কাশ্মীর ফাইল” নামক সিনেমা নিয়ে, কেন? সেই ভয়, এতদিন ধরে নিপীড়িত a অত্যাচারিত মানুষ গুলোর নির্মম ঘটনা যদি সবাই জেনে যায়, তাহলে যে আর ক্ষমতা ফিরে পাওয়া যাবেনা, এদের ন্যায্য দাবিগুলো যে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে। স্বাধীনতার পচাত্তর বছর পর যদি এইভাবে পোল খুলতে থাকে তাহলে পালানোর পথ থাকবেনা।
নেতাজি সুভাচন্দ্র বসের অন্তর্ধান, তাকে দেশে ফিরতে না দেওয়া আর সব কিছুকে ছাপিয়ে ধর্মের নামে দাঙ্গা, যদিও আমি মনে করি হিন্দু মুসলিম দাঙ্গটা আসলে ধর্মের আড়ালে মৌলবাদীদের সাম্রাজ্যবাদের বিস্তার ও রাজনৈতিক ক্ষমতা হস্তান্তরে একটা সহজ উপায়।
এক্ষেত্রে বিবেক অগ্নিহত্রীকে অবশ্যই কুর্নিশ জানাই তার এই সাহসী পদক্ষেপের জন্য, কারণ তার লড়াইটা শুধু কোন রাজনৈতিক ক্ষমতাবান ব্যক্তি বা সপ্রদায়ের বিরুদ্ধেই শুধু নয়, বোম্বে সিনেমা জগতের রথি মহারথী ও কিছু ক্ষমতাবান পদলেহনকারি ব্যক্তির রক্ত চক্ষু অগ্রাহ্য করে এগিয়ে যাওয়া, যা সত্যিই প্রশংসনীয়। তার এই “দ্যা কাশ্মীর ফাইল” যেন তীব্র ধিক্কারের সাথে এই বার্তাই দিচ্ছে, দাদাগিরির জমানা শেষ। এবার হবে বিচার হবে সব বিতর্কের অবসান। তবে আপনার সিনেমা নিয়ে আরেক দিন লিখবো, আজ নয়।
“যজ্ঞের পুত অগ্নি যে ব্রাহ্মণ সংরক্ষণ করে রাখেন, সেই অগ্নিহোত্রী নামের অধিকারী, বিবেক “দ্যা কাশ্মীর ফাইলসের” মাধ্যমে কাশ্মীরের মানুষদের সেই যন্ত্রণার আগুন, তিনি সযত্নে রক্ষা করেছেন আগামী প্রজন্ম কে অনুভব করার জন্য আর তাই তিনি স্বার্থক নামা “অগ্নিহোত্রী” বংশের ধারক।”~ সুমন মুন্সী