“বৃহস্পতি আড্ডায় একই সাথে পালিত হল “বৃহস্পতি গল্প সংকলন” “উদার আকাশ” এর প্রকশনা উৎসব”
কলমে- সোনিয়া তাসনিম খান
গত ৯ই জুন ২০২২, সন্ধ্যেবেলা মিরপুরের ডরপ ভবনে অনুষ্ঠিত হল বৃহস্পতির আড্ডা কতৃক আয়োজিত “মুক্ত সাহিত্য আড্ডা” র। দেশ বরেণ্য লেখক, কবি, সাহিত্যিক এবং দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের খ্যাতিমান ব্যক্তিবর্গের পদচারণা ও স্বতঃস্ফূর্ত আলোচনায় মুখরিত ছিল প্রকাশনা উৎসবের আয়োজনের গোটা সময়। করোনা প্রাদুর্ভাব কাটিয়ে দীর্ঘ দু বছর পর ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম থেকে পুনরায় গরম ধূমায়িত চায়ের কাপে আবারও দারুণ ভাবে জমে গিয়েছিল সাহিত্যালাপ।
উদার আকাশ এবং বৃহস্পতির আড্ডা যেন একই সূত্রে বাঁধা। উদার আকাশ ২১ বছর ধরে প্রকাশনা অব্যহত রেখেছে। উদার আকাশের সম্পাদক ফারুক আহমেদ যদিও এখনও বৃহস্পতির আড্ডায় পদার্পণ করেন নি, তার সম্পাদিত পত্রিকায় বাংলাদেশের লেখকদের লেখা নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে, এ এইচ এম নোমান উদার আকাশ পদকে ভূষিত হয়েছেন কয়েক বছর আগে।
যাদের লেখা এখনও উদার আকাশে প্রকাশিত হয় নাই এমন কয়েকজন লেখকও উদার আকাশের জন্য কলম ধরতে আগ্রহী।
আড্ডার সাথে অনুষ্ঠানটির মূল আকর্ষণ ছিল, বৃহস্পতি আড্ডার “গল্পসংখ্যার” মুক্ত উন্মোচন এবং একই সাথে পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রকাশিত পিয়ার রিভিউ রিসার্চ জার্নাল “উদার আকাশ”-এর প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হওয়া। উল্লেখ্য, বৃহস্পতি আড্ডা এবং উদার আকাশের অবারিত এই প্রান্তরের সাথে যুক্ত রয়েছেন দুই বাংলার অসংখ্য নবীন-প্রবীণ গুণী লেখকবৃন্দ। যাদের সৃজনশীল শৈল্পিক মননের বুননে দুই বাংলার আত্মিক টান গ্রথিত হয়ে রয়েছে একই সুঁতোয়।
বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক ও ডি পি ডি সির এজিএম নূর কামরুন্নাহারের সাবলীল উপস্থাপনা অনুষ্ঠানটিকে প্রাণবন্ত করবার সাথে সাথে এর গতি সুন্দর ভাবে ত্বরান্বিত করে তুলেছিল। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন, কবি ও সাংবাদিক নাসির আহমেদ উপস্থিত শ্রদ্ধেয় লেখক, সাংবাদিক সহ সমাজের আরো অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ কথা বলেন বিভিন্ন বিষয়ে।
উপস্থিত ছিলেন
বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক ও প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের চেয়ারম্যান রোকেয়া ইসলাম, গীতি কবি নাহার আহমেদ, বিশিষ্ট কবি নীলুফা জামান, তাহমিনা কোরাইশি, কবি নাসির আহমেদ বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক সোনিয়া তাসনিম খান, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও কবি বাবুল আনোয়ার, লেখক কামরুল হাসান কবি আবদুর রাজ্জাক কবি মিনা মাসরাফি সংগঠক মুসতারি বেগম, কবি বান্দা হাফিজ, কবি কবিতা, কথা সাহিত্যিক কাজী লাবণ্য, সংগঠক শওকত মাহবুব, উপ নির্বাহী পরিচালক যুবায়ের হাসানসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন আলোকিত এই সাঁঝে। গল্প, গান, কবিতার পাশাপাশি আলোচনায় উঠে আসে সমাজের বিভিন্ন আলোচিত প্রসঙ্গ। মঙ্গার থেকে কী করে আমরা আজ স্বাবলম্বী জাতি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি সেটি অত্যন্ত সুচারুরূপে তুলে ধরেছেন ডি এম ডি পি কে এস এফ শ্রদ্ধেয় জনাব ডঃ জসীমউদ্দিন সাহেব। সমৃদ্ধ বক্তব্য প্রদাণ করেন আন্তর্জাতিক পদক প্রাপ্ত সকলের শ্রদ্ধাভাজন জনাব এ এইচ এম নোমান। অপরদিকে কবি ও বন সংরক্ষক মোল্লা রেজাউল করিম ওনার প্রাঞ্জল বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের বনজ সম্পদের গুরুত্ব এবং এর রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সকলের সামনে তুলে ধরেন।
“অর্থনৈতিক মঙ্গার পাশাপাশি কী করে মানসিক মঙ্গা থেকে জাতিকে মুক্তির পথ দেখানো সম্ভব?” অনুষ্ঠানের উপস্থাপক এবং লেখক নূর কামরুন্নাহারের এমন বলিষ্ঠ প্রশ্ন একপর্যায়ে উপস্থিত সকলকে দারুণ ভাবে ভাবিয়ে তুলতে সক্ষম হয়। উপস্থিত গুণীভাজনদের এমন নানা মত বিনিময় প্রশ্নোত্তর পর্বের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ তিন ঘন্টা ব্যাপী চলা এই অনুষ্ঠানটির সার্থক ইতি টানা হয়।