হুমায়ুন আহমেদ , হিমু ও আমি
একটা অসম্ভভ দোটানা নিয়ে এই লেখা টা শুরু করছি|English না বাংলা কোনটা লেখা উচিত| প্রানের ভাষা কাজের ভাষা কে হারিয়ে দিলো | হুমায়ুন আহমেদ এক জন জনপ্রিয় বাংলা ভাষার সাহিতিক| অনেকে আপত্তি করতে পারেন “ছিলেন” কথাটা লেখা উচিত এক জন প্রয়াত মানুষ সম্পর্কে|
তাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাশীল হয়েও বলি দয়া করে একবার হুমায়ুন আহমেদের নন্দিত নরকে বা হিমু সমগ্রটা বার্ করুন; হুমায়ুন আহমেদ কে দেখতে পাবেন জীবন্ত আপনার পাশে; যদি না পান সুধী হুমায়ুন আহমেদ কোনো দিনও আপনার কাছে জীবিত ছিলেন না; শুধু একটা কাগজের বই ছিলেন| আমি ক্ষমা প্রার্থী কিন্তু এটাই সত্যি |
হুমায়ুন আহমেদ কে আমি চিনতাম না , ভারতের কলকাতা শহরে তখন দূরদর্শন ও বাংলাদেশ টিভি আসতো | একটি বিচিত্র বস্তু বুস্টার লাগাতে হতো এবং মাঝে মাঝে জাহাজের নাবিকের মতো এন্টেনা টাকে ঢাকা তাক করে ঘোরাতে হতো ভূগোলের ম্যাপের ঢাকা তখন হাতের মুঠোয় , ছাদের থেকে আমি ঘুরাতাম আর নীচে ৬ বছরের বোন চিত্কার করে বলতো “এখনো ঝির ঝির করছে রে দাদা”, “ডায়নি খালা”, আসছেনা | বন্ধু যারা “বহুব্রীহি” দেখেছেন তারা জানেন যে বাসার কাজের বুয়াকে বাচ্চাটা ডাইনি খালা বলতো | আবার বীরবিক্রমে ঢাকা তাক করে এন্টেনা ঘুরতে থাকতো| এক দিন বেশ জোর ঝটকা খেলাম তারে হাতদিয়ে, হিমু বিদ্যুত গতিতে ভিতরে ঢুকে গেল আর বের হলনা, আর হবেও না|
সেই শৈশবের দিন গুলো কেটে যেত “ঢাকায় থাকি”, “এইসব দিন রাত্রি” নিয়ে | গোলমালটা বাধতো উত্তম কুমার আর সুচিত্রা ও হুমায়ুন একই সময় এসে গেলে | তবে হুমায়ুন আপনি ভাববেন না যে এপার বাংলা সে সময় আপনাকে বাক সিটে পাঠিয়ে দিত, আপনার বহুব্রীহি ভিসিআর ই রেকর্ড থাকতো পরে যথাসময় আপডেট হওয়া যেত বার বার চালিয়ে দেখে| YouTube ছিলনা কিন্তু মনtube এ তোলা থাকলো আজীবন| হয়তো উত্তম হেরে গেলে আপনিও দুঃখিত হতেন |
কোনো দিন বিদ্যুত না থাকলে সেই দিন পশ্চিমবাংলার মূখ্যমন্ত্রীর গুষ্টির তুষ্টি হতো | এই করে কোন সময় এক দিন শিশু দুটো কিশোর কিশোরী থেকে যুবক যুবতী হয়ে গেল | হিমু কিন্তু রয়ে গেল | আজকের পাওয়া না পাওয়া আর শৈশবের দিন গুলোর মাঝে আর একজন হিমু বা মিশির আলী এখনো সেইসব দিন রাত্রি কে খোঁজে|
আমি নিজের জীবনে এক জন হিমু হতে চেয়ে ছিলাম পারলাম কিনা জানি না হয়তো আমার ঢাকার ছাত্র ছাত্রীরা বলতে পারবে আর পারবেন মাহবুব ভাই, নাজ আপা, নিউটন,সিদ্দিক,মশায়দুল বা সুদীপ্ত যারা আমাকে খুব কাছ থেকে দেখেছে ঢাকাতে বা কলকাতাতে|
আমার কর্ম সুত্রে ঢাকা যাওয়া কিন্তু হিমু Effect | ইচ্ছা ছিল একটা অটোগ্রাফ নেবো সুযোগও এলো ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর আপনি, বুলবুল আহামেদ ও আরো অনেকে কলকাতা থেকে ফিরছেন আমিও একই বিমানে তিনবার বিমানের ভিতরে চেষ্টা করলাম কিন্তু হলনা|৪৬ মিনিটের যাত্রা, ভাবলাম নেবে ঠিক নিয়ে নেবো,আপনিও কথা দিয়ে ছিলেন|
কিন্তু আপনাকে আর ধরা গেলনা অথচ আপনি বিমানের ভিতর কথা দিয়েছিলেন নেবে অটোগ্রাফ দেবেন, আমার খাতাটা আজো খালি আছে | আশা করি ওপরে যখন দেখা হবে আপনার এই অনুরাগীকে বঞ্চিত করবেন না|
আশায় থাকলাম অগ্রিম বুকিংটা সোশাল নেটে দিয়ে রাখলাম| ভালো থাকবেন আর রোজরাতে কথা হবে হিমু সমগ্রটা যখন হাতে থাকবে, কিম্বা জীবনটা নন্দিত নরকেই কেটে যাবে আপনা কে ছাড়া |
ইতি
আপনার আর এক হিমু (সুমন মুন্সী)
A Bangladeshi brother now a big shot in Australia Mahbub Siraz Tuhin wrote in reply:
তোমার মনে আছে?তুমি যখন প্রথম ঢাকা এলে,আমি Airport এ গিয়েছিলাম তোমাকে pick করতে………….আমি তখন তোমার profile দেখে অবাক হয়ে জিগ্যেস করেছিলাম তোমার USA আর UK এর job offer ফেলে ঢাকা আসার কারন কি?IT professional দের demand তো ওই সব দেশে অনেক বেশি।তুমি ছোট করে উওর দিয়েছিলে ”হিমু” হতে……..আর বাংলায় কথা বলতে পারবো এই জন্য…….এর পর তোমার হিমু হবার সে কি চেষটা……………….হিমু হওয়ার সপনো তোমার পূরন হোক আর না হোক,তুমি আমাদের একজন হয়ে গেলে……… এখনো আছো……… এ জন্যই ঢাকা তোমাকে এতো টানে…………. Suman Munshi
My reply to brother Mahbub by Suman Munshi
“মনে আছে মাহবুব ভাই ঢাকার প্রতিটা দিন প্রতিটা রাত্রি মনে আছে এই রমজান মাসের ইফতার আর আপনাদের সাথে রোজা রাখা সব মনে আছে | যেদিন ঢাকা মন থেকে মুছে যাবে সে দিন আমি ও মুছে যাব এই দুনিয়া থেকে | আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ প্রথম বলা কিছু কথা মনে রাখার জন্য| আমার জীবনের সেরা দিন গুলো ঢাকা তে ছেড়ে এসেছি|”