
সিওপি-২৭-এ ভারতের জাতীয় বিবৃতি
By PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১৫ নভেম্বর ২০২২
সিওপি-২৭-এ আজ কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দর যাদব ভারতের জাতীয় বিবৃতি প্রদান করেছেন।
“মাননীয়গণ,
সিওপি-২৭-এর সভাপতিত্বকারী এবং আয়োজক রাষ্ট্র মিশরকে তাদের অপরিমেয় প্রচেষ্টা এবং অসাধারণ আতিথেয়তার জন্য প্রথমেই আমি আমার কৃতজ্ঞতা জানাই।
এক বছর পূর্বে গ্লাসগো-তে বিজ্ঞানের আবেদনে সাড়া দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সঙ্কল্প এবং দায়বদ্ধতা নিয়ে আমরা এগিয়ে এসেছি।
এ বছর শর্ম আল-শেখ-এ আয়োজিত এই সম্মেলন আমাদের কাছে কাজ করে দেখানোর একটি মঞ্চ এবং মিশরের সভাপতিত্ব যথাযথভাবে এই সিওপি সম্মেলনকে দায়বদ্ধতা রূপায়ণের ক্ষেত্র হিসেবে নির্বাচিত করেছে।
মাননীয়গণ,
২০৭০-এর মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার ভারতের লক্ষ্যের কথা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গ্লাসগো-তে ঘোষণা করেছিলেন। এক বছরের মধ্যে ভারত কার্বন নিঃসরণ নিম্নমুখী করার কৌশলগত দিক নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি উপস্থাপন করেছে যাতে মূল আর্থিক ক্ষেত্রগুলিতে তা কমিয়ে আনার পন্থাপদ্ধতির উল্লেখ রয়েছে।
২০৩০ সালের মধ্যে জলবায়ু সংক্রান্ত লক্ষ্যের বিষয়ে সাড়া দিয়ে ২০২২-এর আগস্টে ভারত জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদানগুলিকে আধুনিক করে তুলেছে। পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি, ই-মোবিলিটি, ইথানল মিশ্রিত জ্বালানি এবং বিকল্প শক্তিসূত্র হিসেবে গ্রিন হাইড্রোজেনের ক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারী নতুন উদ্যোগের পথে আমরা পা বাড়িয়েছি।
ভারতের দ্বারা সূচিত এবং লালিত আন্তর্জাতিক সৌর জোট এবং বিপর্যয় নিরোধক পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে সমাধান-নির্ভর জোট-এর ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রসার লাভের দিকে আমরা আগ্রহী।
এটি হল বিশ্বের মঙ্গলের জন্য আমাদের যৌথ কর্মপ্রচেষ্টার প্রমাণস্বরূপ।
সারা বিশ্বে সার্বিক কার্বন নিঃসরণের ক্ষেত্রে যেখানে ভারতের অংশ ৪ শতাংশেরও নিচে এবং বার্ষিক মাথাপিছু নিঃসরণ বিশ্ব গড়ের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ, এই বাস্তব পরিস্থিতি সত্ত্বেও ১৩০ কোটি জনসংখ্যাবিশিষ্ট দেশ ভারত কার্বন নিঃসরণ আরও কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে নানাবিধ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
নিরাপদ পৃথিবীর স্বার্থে ভারতের দৃষ্টিকোণ এক কথায় বর্ণনীয় – লাইফস্টাইল ফর এনভায়রনমেন্ট বা পরিবেশ-বান্ধব জীবনশৈলী যা আমাদের প্রধানমন্ত্রী সিওপি-২৬-এ আমাদের জাতীয় বার্তায় হিসেবে সামনে রেখেছিলেন। ২০২২-এর ২০ অক্টোবর রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব মাননীয় আন্তোনিও গুতারেস-এর উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘মিশন লাইফ’-এর সূচনা করেন।
অবিবেচক এবং বিধ্বংসী ভোগের পথ থেকে সুচিন্তিত এবং বিবেচনাধর্মী ব্যবহারিক জীবনশৈলীর পথ গ্রহণের জন্য সারা বিশ্বের দৃষ্টিভঙ্গিগত আমূল পরিবর্তন দরকার। এই গ্রহকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। সুস্থায়ী জীবনশৈলীর মাধ্যমে সম্পদের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে বর্জ্যকে যথাসম্ভব কমিয়ে আনার লক্ষ্য আমাদের রাখতে হবে।
ভারত বিশ্বের সর্বাধিক জনবহুল গণতন্ত্র এবং উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপনের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নিতে চায় এবং ব্যক্তিগত স্তরে, পরিবার এবং গোষ্ঠীগত কর্মপ্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে এই ‘মিশন লাইফ’-এর অঙ্গ হিসেবে বিশ্ব সম্প্রদায়কে আমন্ত্রণ জানাতে চায়।
মাননীয়গণ,
‘এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’ – এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ২০২৩-এ ভারত জি-২০-র সভাপতিত্ব নিতে চলেছে। মানবতার স্বার্থে নিরাপদ পৃথিবী গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা যে পথের দিশারি তা কোনো একটি দেশ এককভাবে অর্জন করতে পারে না। এটা এক সম্মিলিত যাত্রা। এই সম্মিলিত যাত্রার মূলমন্ত্র সাম্য এবং জলবায়ুর প্রতি ন্যায়বিচার।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে আমাদের এই লড়াই সারা বিশ্বকে এক পরিবার হিসেবে গড়ে তুলবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।”