পঞ্চায়েত নির্বচনের বুদ্ধির খেলা ও আত্ম তৃপ্তি এবং হাতে হইলো পেন্সিল
সুনন্দ মিত্র , সমাজকর্মী, রাজনৈতিক সচেতন লেখক ও কবি
কিভাবে শুরু করবো ভেবে পাচ্ছিনা, আসলে লিখতে বসেছি কিছুটা আত্মতৃপ্তি থেকে। কারণ আজ যা দেখছেন এর একটা আগাম আভাস অনেক আগেই দিয়েছিলাম, সেটা প্রায় মিলে যাওয়ায় তৃপ্তি তো থাকবেই।
যাইহোক বেশি ভ্যান্তারা না করে সোজা সাপ্টা প্রসঙ্গে ঢুকে পড়ি। বিহারে বসে লিট্টি চোখা আর এখানে এসে,,,,, আরে রাম রাম এসব কি বলতে আছে! হুঁ ঠিক এই কারণেই লিখতে বসেছি। যারা আমায় ব্যক্তিগত পর্যায়ে জানে তারা জানে এই বিষয়ে অনেক আগেই আভাস দিয়েছিলাম। স্ক্রিপ্টটা অনেক আগেই লেখা হয়ে গিয়েছিল আজ তো শুধু মঞ্চস্থ হলো। লিখছি আরও একটা কারণে, কারণ এইযে এতো বড় বড় রাজনীতিবিদ আজ এত বিপ্লব প্রতিবাদ করছে তারা কি জানতো না? তাহলে তো তাদের মেরিট of politics নিয়েই প্রশ্ন উঠে যায়, সত্যিই কি তারা রাজনীতিটা বোঝে? নাহ, তাদের merrit of politics is zero, কেন তার ব্যাখ্যা কি আর দিতে হবে! অনেকদিন আগেই বলেছিলাম যখন কোন প্রতিবাদ ছাড়াই সব কিছু সুস্থভাবে হচ্ছে তখন law of average হিসেবে ধরে নেওয়াই যেতে পারে যে somthing is happening, হ্যাঁ ঝড়ের পূর্বাভাস। সেই রাজনীতিবিদদের দূরদৃষ্টিতা নিয়ে তো প্রশ্ন উঠবেই যারা আগাম পূর্বাভাস অনুধাবন করতে পারেনা। এবার যেটা হবে সেটাকে বলে dammage control। বিরোধী সরকার দুপক্ষই মাঠে নেবে পড়বে। সরকার পক্ষের বুদ্ধির তারিফই করবো। কারণ স্ক্রিপ্টটা তারা আগেই তৈরি করে রেখেছিলেন।
স্ক্রিপ্টটা কেমন ছিল, এইবার সেই ব্যাখ্যাই দেবো। গত পঞ্চায়েত electionএ একটা কথা উঠে এসেছিল এরাজ্যে বিরোধীদের nominationই জমা দিতে দেওয়া হয়না, ঠিক আছে এই অভিযোগ দাও, যতো পারো জমা দাও, খুচখাচ কিছু ঝামেলা ছাড়া বিরোধীরা কিন্তু নির্বিঘ্নে nomination জমা দিয়ে ভাবলো, ব্যাস বাজি মেরে দিয়েছি। এতে একটা প্রচ্ছন্ন বার্তাও দিয়ে গেলো, যারা প্রতিনিয়ত চেঁচামেচি করছিল পশ্চিমবঙ্গে গনতন্ত্র নেই, তাদের ভুল প্রমাণ করা। নিঃসাড়ে কিন্তু সরকার পক্ষ as per script সব কাজ ঠিকঠাক করে গেলো এমন কি শেষ দিনে তারা অভাবিত nominatio জমা করিয়েও পরোক্ষে একটা বার্তা দিল সিস্টেমটা কিন্তু আমাদের হাতেই আছে। বিরোধীরা সেই বার্তাও ধরতে পারলো না। এ প্রসঙ্গে পূর্বনির্ধারিত স্ক্রিপ্টের ব্যাপারে একটা উদাহরণ তুলে দিচ্ছি “সাই বাড়ি হত্যা কান্ড” পরে কি বলা হয়েছিল সেটাও নিশ্চয় মনে আছে, “জনরোষ”!
আর এইযে chaos এটাও game প্ল্যানের একটা অঙ্গ। যাক না কিছু প্রাণ, ক্ষতি কি, উদ্দেশ্য তো সফল। কাজের কাজটা কিন্তু সুকৌশলে হাসিল করে বেরিয়ে গেলো।
এবার আসি নির্বাচন কমিশনের কথায় “কোথায় কে গুলি করবে,,,,,” একদম ঠিক কথা। আচ্ছা বলুনতো কোনো সিনেমায় যখন কাউকে খলনায়কের ভূমিকায় অভিনয় করার জন্য চুক্তিবদ্ধ করা হয়, দোষটা কি সেই অভিনেতার? সেতো সেই চরিত্রটা অভিনয়ের জন্য পারিশ্রমিক পায়। কাউকে ডিফেন্ড করছিনা শুধু পরিস্থিতিটা তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
এবার আসি সংবাদ মাধ্যমের বিষয়ে এটাতো ইতিমধ্যেই প্রমাণিত যে এদের বেশির ভাগই buyers। খোলা বিতর্ক সভার আয়োজন করে সাদা কে কালো আর কালো কে সাদা করতে নেবে পড়বে। সব কিছু গুলিয়ে দিয়ে এটাই প্রমাণিত করার চেষ্টা করবে যে এটা এমন কিছু নয় “ছোট ঘটনা” সহজ সত্য এটা তো ছাপ্পা নয় পুরোটাই ধাপ্পা। কিছু মাথামোটা বক্তাকে কে নিয়ে এসে আটভাট বকে একটা কমেডি শোয়ের উত্থাপন।
আর শেষে একটা বলি মাথা কামিয়ে বা sex পিয়ারের বুলি আওড়ালেই রাজনীতিবিদ হওয়া যায়না। সমস্ত সংবাদ মাধ্যমের কাছে অনুরোধ করব রাজনীতির মত এইরকম serious ফিল্ডে এইধরনের ভাঁড়দের দয়া করে উৎসাহিত করবেন না। কারণ হাজার চেষ্টা করেও গাধা পিটিয়ে ঘোড়া করা যায় না। প্রকৃত রাজনীতিক হতে গেলে মেরিট’এর প্রয়জন আছে। আর রাজনীতি হচ্ছে game of brain।
শেষ করবো এই পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফলের আগাম পূর্বাভাস দিয়ে। এতো কিছুর পরেও বিজেপি কিন্তু যথেষ্ট ভালো ফল করবে কারণ “মানুষ”।
যদিও এটা লেখার প্রয়জন এখানে তেমন নেই তবুও যতদিন যাচ্ছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মহাশয় নিজেকে একজন অপ্রতিদ্বন্দ্বী, প্রকৃত এবং প্রাগ্য রাজনীতিবিদ হিসেবে তুলে ধরছেন।
কারণ একটা সময় বামেদের অত্যাচারে মানুষ tmcকে জেতায়নি বামেদের হারিয়ে ছিল। এবারেও কিন্তু আসতে আসতে সেই ছবিই উঠে আসছে। তবে বিজেপি ভালো ফল করলেও সেইসব মূর্খদের সাথে একমত নই যারা ভাবছে বিজেপি প্রথম স্থান অধিকার করবে। আর বাম ও কংগ্রেসের ব্যাপারে কিছু না বলাই ভালো কারণ একমাত্র মুর্শিদাবাদ ছাড়া এমন কিছু দাগ কাটতে পারবে না। তবে সেই কৃতিত্বটাও বেশিরভাগ কংগ্রেসের। একক ভাবে বাম তথা cpm নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে। আর এখন তো বাম কংগ্রেস tmc সবাই একই ছাতার তলায়। তাই বাম কংগ্রেসের নিরপেক্ষতা নিয়ে মানুষের মনে আজ আর কোন প্রশ্ন নেই তারা নিশ্চিত। ভোটে ভালো ফল করতে না পারলেও নবান্নে কাটলেটের নিমন্ত্রণ তারা পাবেই।
তাই মানুষের কাছে একমাত্র বিরোধী optionএর জায়গা বিজেপি। তবে অপশন থাকলেই তো আর হবেনা রাজনৈতিক বুদ্ধি, দূরদৃষ্টিতা ও মানুষের বিশ্বাসভাজনও হতে হবে। এখনও পর্যন্ত বিরোধী হিসাবে ভালো ফল করলেও বঙ্গ বিজেপিকে কিন্তু এই সফলতার পূর্ন নম্বর দিতে পারছিনা।
*** লেখকের বাকস্বাধীনতার অধিকারের ভিত্তিতে প্রকাশিত , বক্তব্য লেখকের নিজস্ব channel লেখার সাথে সহমত বা বিরোধিতা কোনোটাই জ্ঞাপন করে না।***