সাইড বেঞ্চার – পুরুষত্ব ও পূর্বত্তর ভারত
কলকাতা,৯ই শ্রাবণ, ১৪৩০।
ডাঃ ধীরেশ চৌধুরী, বার্ধক্য বিশেষজ্ঞ, কবি,সাহিত্যিক ও সমাজ কর্মী

তীব্র কিছু পুরুষ বিদ্বেষী শব্দ
কিংবা নারী দরদী কিছু শব্দের সমাহারে
কলম থেকে বেরোলো না কবিতা কিছুতে,
প্রশ্ন করছি বরং তথাকথিত আঁতেল কবিদের
যার মধ্যে আমিও একজন,
এসব মেকিপনা আর কতদিন চালাবো?
মলম লাগানোর চেষ্টা করবো
বিক্ষত রক্তাক্ত যোনি গুলোর ক্ষততে!
তার চেয়ে অপ্রিয় আরও একটা প্রশ্ন করি আজ,
যা শুনে অনেকেই উঠবেন রেই রেই করে,
দেশদ্রোহী কিংবা বিচ্ছিন্নতাবাদী তকমা ও
নামের সাথে যেতে পারে জুড়ে,
মনিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, অরুণাচল,
এসবতো কেমন যেন সতীনের সন্তানদের
মতন সাইড বেঞ্চার রাজ্য,
ভাবখানা আমাদের যেন দয়া করে ওদেরকে সাথে রাখা,
জনজাতি অধ্যুষিত বেশিরভাগ মানুষগুলো
ঠিক যেন শরণার্থী,
কিইবা তাই যায় আসে ওদের মা মেয়েদের শরীর বা যোনিগুলো হয় যদিও বা একটু রক্ত মাখা।
ওরাও যে আমাদেরই মতন সমান অধিকারে
এদেশের অধিবাসী,
একথা সত্যি মন থেকে মানি কতজন ভারতবাসী!
তাইতো চোখ, নাক, মুখমণ্ডল, জাতি,
এসব নিয়ে বক্রোক্তি, কটূক্তি, লাঞ্চনা সহ্য করে ওরা প্রতিনিয়ত,
সব কিছুতেই ঠিক যেমনটা ওরা আজও ব্রাত্য।
ভাগ্যিস প্রকৃতি ওদের প্রতি উদার,
সৌন্দর্যকে দুহাতে দিয়েছে করে তাই উজাড়,
নতুবা ভ্রমণের তাগিদে যেটুকুও বা আছে সংযোগ,
অথবা ছিটে ফোটা হয়েছে যা কিছু বিনিয়োগ,
তাতেও অবশ্যম্ভাবী পড়তো ছেদ,
ঠিক যেমনটা মূল আর সাইড বেঞ্চের মধ্যে স্ট্যাটাসে বিশাল ভেদ।
সেদিনই ওরা পাবে প্রাপ্য আত্ম মর্যাদা,
যেদিন তৃতীয় নয় অর্জুনের প্রথম স্ত্রীর
পরিচয় পাবে চিত্রাঙ্গদা…
©ডাঃ ধীরেশ।
৯ই শ্রাবণ, ১৪৩০।
সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া মণিপুরের ঘটনা নিয়ে উত্তাল সবাই। হবারই কথা। অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। কিন্তু এঘটনা তো আজ প্রথম নয়। কিছু কবি কিংবা তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা ঘটনার মোড়কে আবার নিয়ে যাচ্ছেন অন্যদিকে। পুরুষ বিদ্বেষী একটা বাতাবরণ। আমি একটা কথা জোর দিয়ে বলতে চাই এভাবে পুরুষ বিরোধী বাতাবরণ তৈরি এর কোনো সমাধান নয়। যারা এধরনের ঘটনা ঘটায় তারা কোনো মতেই পুরুষ নয়। শুধু মাত্র পুং লিঙ্গের অধিকারি মাত্র। যাদের মানুষ বলতেও লজ্জা লাগে। এটা যেমন ঘটনার একদিক, তেমনি অন্য আরও একটা দিক রয়েছে। উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলো কিন্তু আমাদের কাছে সবসময়ই একটা করুণার পাত্র হয়ে রয়েছে। বাকি অংশের একটা বিশাল অংশ কিন্তু ওই সব রাজ্যের অধিবাসীদের ভারতীয় মানতে মন থেকে নারাজ। কেমন যেন একটা উন্নাসিক মানসিকতা। ওরাও তাই কেমন যেন বিচ্ছিন্ন বোধ করে। এটা আজ নয় অনেকদিন থেকেই। তাই এসব রাজ্যে কোনো কিছু ঘটনা বাকি অংশের মানুষদের জন্য ঠিক পাতে দেওয়ার খবর হয়না। উদাসীন থাকে। খুব চাপে না পড়লে তাই কোনো প্রতিক্রিয়া দেওয়ার দায় বা প্রয়োজন বোধ করেনা। আমার এই কথায় কেউ যেন কোনো বিশেষ রাজনীতি খোঁজার চেষ্টা করবেন না। ব্যর্থ হবেন। কারণ এই উদাসীনতা আজ নয় বহু দিনের।
*** এই লেখা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারে প্রকাশিত এবং নির্লজ্জ্ব সমাজের মানবিক স্বত্তা প্রতিনিয়ত লাঞ্ছিত হবার প্রতিবাদ । আমরা আশা করবো সমাজ দ্রুত মণিপুরের যন্ত্রণা কে লাগভ করবে এবং সরকার ও নাগরিক সকলে মানবিক ভাবে আন্তরিক হবে শান্তি রক্ষায়।***