দয়ানন্দ সরস্বতীর দ্বিশতবর্ষে কলকাতার ঐতিহ্য ঘুরে দেখানোর উদ্যোগ আর্য সমাজের
পুলিশী প্রহরায় এই তিলোত্তমা কলকাতা মহানগরীর বুকে কোন ঘরে প্রথম বিধবা বিবাহ হয়েছিল অনেকের অজানা। ইচ্ছা করলেই সেই ঐতিহাসিক স্থান তথা কোথায় তা এবং স্মৃতি বিজড়িত ঘরটিও ঘুরে দেখা সম্ভব। পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর যখন বিধবা বিবাহ নিয়ে লড়াই করছেন তখন অধিকাংশ হিন্দু তাঁকে ঐ কাজের জন্য অপছন্দ ও বিরোধিতা করেছিলেন। তৎকালীন সময়েই তিনি পরাশর সংহিতার উল্লেখ করেন। অধিকাংশই এমন কথাও বলেছিলেন যে, সেটি তিনি নিজেই লিখে পরাশর ঋষির নাম করে প্রচার করছেন। সেই সময় যাঁদের পাশে পেয়েছিলেন তিনি তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী। এবার তাঁর জন্মের দ্বিশতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে।
সেই উপলক্ষে কলকাতার বেশ কয়েকটি ঐতিহ্যবাহী স্থান ঘুরিয়ে দেখানোর পরিকল্পনা ও আয়োজন করেছে আর্যসমাজ। অল্প কয়েক ঘণ্টাতে কলকাতার এমন সব দ্রষ্টব্য ও ঐতিহ্যবাহী স্থান খুব শীঘ্রই দেখানো হবে। উল্লেখ্য, প্রথম যেখানে বিধবা বিবাহ হয়েছিল, সেই জায়গা দিয়ে যাত্রার সূচনা। এরপর ছোট ছোট দলে ভাগ করে সাত কিলোমিটারের মধ্যে থাকা নানা জায়গা দেখার সুযোগ থাকবে পায়ে হেঁটে বা নিজের পছন্দের গাড়িতেই।
প্রসঙ্গতঃ একসময় ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী ছিল কলকাতা। স্বাধীনতা সংগ্রাম শহরে এতটাই তীব্র আকার ধারণ করেছিল যে বাধ্য হয়ে রাজধানী দিল্লিতে সরিয়ে নিয়ে যায় ব্রিটিশরা। উপমহাদেশের সাংস্কৃতিক রাজধানীও ছিল কলকাতা। আর এখান থেকেই শুরু হয়েছে একের পর এক সমাজ সংস্কারের লড়াই। সমাজ সংস্কারে বড় ভূমিকা ছিল দয়ানন্দ সরস্বতী প্রতিষ্ঠিত আর্যসমাজের। সেই সংস্কার কখনও কখনও মোড় নিয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের দিকেও। হিন্দু সমাজ সংস্কারের পাশাপাশি তিনি গোরক্ষা নিয়েও প্রচার শুরু করেন। সুতরাং বয়স কোনও বাধা নয়, যেকারণে ৮ থেকে ৮০, সকলকে এই যাত্রায় স্বাগত।
পথে পাবেন কালিগোদাম , একশো বছর পার করা এই দোকানে কড়া থেকে গরম বোঁদে তুলে আপনাকে পরিবেশন করা হবে। রসগোল্লা, পান্তুয়া, সন্দেশ, মিষ্টি দইয়ের মতো বাঙালির বোঁদের স্বাদেও নিজস্বতা আছে। সেই সুযোগ থাকছে।
যাঁরা হেঁটে ঘুরতে চান তাঁরা হাঁটতে পারবেন। যাঁর নিজের গাড়ি আছে তিনি তা নিয়ে আসতে পারেন। যিনি বাসে-ট্রামে ঘুরতে চান তিনিও স্বাগত এই হেরিটেজ ট্যুরে। এজন্য নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট স্থানে হাজির হলেই কেল্লা ফতে। আগামী ৩ মার্চ সকাল ৭টায় ১৯ নম্বর বিধান সরণী থেকে এই যাত্রা শুরুর ঘোষণা করা হয়েছে ।
কলকাতায় মোট ১৫টি জায়গা দেখানোর জন্য আর্য সমাজের ১০০ জন প্রতিনিধি থাকবেন। তাই আপনি কাউকে সঙ্গে নিয়ে নিজের মতো করে বা দলগতভাবে ঘুরতে পারেন। আবার ক্লান্ত হয়ে পড়লে কিছুক্ষণ ঘুরে বেড়ানোর পরে ফিরেও যেতে পারেন। সব স্বাধীনতা নিজের মতো করে আপনি উপভোগ করবেন। গন্তব্যের শেষে পৌঁছে বেলা ১১টা নাগাদ। হালকা জলখাবারের সঙ্গে ঘোরাঘুরির ফাঁকে এ নিয়ে ক্যুইজ প্রতিযোগিতা। বাধ্যতামূলক নয়, তবে পুরস্কারের ব্যবস্থা আছে। যোগদানকারীরা প্রত্যেকে একটি মেডেল পাবেন। যোগ দিতে আগ্রহীদের জন্য www.heritagehunt.in ওয়েবসাইটে মিলবে। ৮১০০৪৬৯১৩৮ নম্বরে ফোন করতে পারেন।