পূর্ব ভারতেও এখন উপলব্ধ এনলার্জড প্রোস্টেটের সর্বাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি – রেজাম ওয়াটার ভেপার থেরাপি
Ø মিনিমালি ইনভেসিভ পদ্ধতি: কোনও কাটা-ছেঁড়ার প্রয়োজন নেই; এমনকি কোনও সাধারণ বা স্পাইনাল অ্যানেস্থেসিয়ারও দরকার হয় না; লোকাল অ্যানেস্থেসিয়ার ব্যবহার করেই এই চিকিৎসা সম্ভব।
Ø ইরেক্টাইল এবং মূত্রনালীর কার্যকারিতা সংরক্ষণ করে: অনেক সময় সার্জারীর কারণে কনজুগাল লাইফে প্রভাব পড়ে ও মূত্রনালীরও বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। কিন্তু এই পদ্ধতিতে রোগীর কনজুগাল লাইফে ও মূত্রনালী সংক্রান্ত কোন সমস্যা হয় না।
Ø দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফেরা: বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগী কয়েক দিনের মধ্যেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন ও নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে সক্ষম হন।
কলকাতা, ১৯ নভেম্বর ২০২৪: শহরের বিশিষ্ট ইউরোলজিস্টদের উপস্থিতিতে কলকাতা তথা সমগ্র পূর্ব ভারতে পথ চলা শুরু হল রেজাম ওয়াটার ভেপার থেরাপির মত একটি অত্যাধুনিক চিকিৎসার। রেজাম ওয়াটার ভেপার থেরাপি, বিনাইন প্রোস্ট্যাটিক হাইপারপ্লাজিয়া (BPH) এর জন্য বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত, মিনিমালি ইনভেসিভ প্রসেস। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সামারিটান মেডিকেল, সার্জিকাল এবং ক্রিটিক্যাল কেয়ারের কর্পোরেট কমিউনিকেশনস হেড শ্রীমতি বল্লরী চট্টোপাধ্যায়, ডাঃ অম্লান চক্রবর্তী, ডাঃ স্মরণজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ডাঃ কৌশিক সরকার, ডাঃ সুনির্মল চৌধুরী (Secratary, Bengal Urology Society), ডাঃ সৌভিক চট্টোপাধ্যায়, ডাঃ নীলাঞ্জন মিত্র সহ শহরের সেরা ইউরোলজিস্টরা ও অন্যান্য বিশিষ্ঠ ব্যক্তিরাও।
পরিসংখ্যা বলছে, শুধুমাত্র ভারতেই আনুমানিক 28.1 মিলিয়ন পুরুষ এনলার্জড প্রোস্টেটে আক্রান্ত এবং দেশের সবচেয়ে প্রচলিত ইউরোলজিকাল ব্যাধিগুলির মধ্যে এটি সাধারণত, 60 বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের প্রায় 50-60% এবং 70 থেকে 80 বছর বয়সের মধ্যে 90% পুরুষ এই রোগের শিকার। প্রোস্টেট বড় হওয়ার সাথে সাথে, ঘন ঘন প্রস্রাব, প্রস্রাবের প্রেশার কমে যাওয়া, অনিয়মিত প্রবাহ, স্ট্রেইন, প্রস্রাব করার জন্য রাতে বার বার জেগে ওঠা এই সব অস্বস্তিকর লক্ষণ দেখা দেয়। এই লক্ষণগুলি বয়সের সাথে সাথে মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যাহত করে এবং তখন উপযুক্ত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
এই আধুনিক, মিনিমালি ইনভেসিভ চিকিৎসা পদ্ধতিতে প্রোস্টেট গ্রন্থিটিকে তার স্বাভাবিক আকারে সংকুচিত করে সঠিক আকার পুনরুদ্ধার করতে বাষ্প ব্যবহার করা হয়। আর এতে সময় লাগে মাত্র পাঁচ মিনিট। বিশেষ সূচ বা নিডলের সাহায্যে ১০৩ ডিগ্রি তাপমাত্রায় বাষ্প প্রয়োগ করা হয় এবং তার খুব অল্প সময়ের মধ্যেই প্রস্টেট গ্রন্থি আগের অবস্থায় ফিরেও আসে। রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি জেনারেটর হল এই থেরাপির প্রধান যন্ত্র – এর মাধ্যমে জলকে ১০৩ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ফুটিয়ে বাষ্পে পরিণত করা হয়। এছাড়া, আরও একটি যন্ত্রের সাহায্যে সূচের মাধ্যমে জলীয় বাষ্প প্রস্টেটে প্রবেশ করানো হয়। সাধারণ অবস্থায় মানব দেহে প্রস্টেট গ্রন্থির ওজন হয়ে থাকে ২০ থেকে ২৫ গ্রাম। কিন্তু, এর ওজন বেড়ে গেলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। যেমন- প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, ব্যথা করা, রক্তপাত হওয়া এছাড়াও আরও বিভিন্ন সমস্যা। যদিও প্রস্টেটের অস্ত্রোপচারের একাধিক পদ্ধতি রয়েছে। তবে চিকিৎসকদের দাবি, নতুন এই পদ্ধতিটি সবচেয়ে নিরাপদ। অস্ত্রোপচারের মাত্র ১০ মিনিট পরেই রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া যেতে পারে। ২০১৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম চালু হলেও, রেজাম ওয়াটার ভেপার থেরাপি, ভারতে শুরু হয় ২০২৪ সালের মার্চ মাসে। এতদিন, ভারতের বেশ কিছু জায়গাতে এই পদ্ধতি উপলব্ধ থাকলেও পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতে এই চিকিৎসা উপলদ্ধ ছিল না। আজ কলকাতার সামারিটান ডাইগনিস্টিক সেণ্টারে প্রথম চালু হল এই উন্নট। আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সামারিটান মেডিকেল, সার্জিক্যাল অ্যান্ড ক্রিটিক্যাল কেয়ারের কর্পোরেট কমিউনিকেশনস হেড শ্রীমতী বল্লরী চট্টোপাধ্যায় জানান, “রেজাম ওয়াটার ভেপার থেরাপি বিপিএইচে আক্রান্ত পুরুষদের জন্য সত্যিই গেম-চেঞ্জার। এই আধুনিক, উদ্ভাবনী থেরাপিটি মিনিমালি ইনভেসিভ প্রসেস এবং কোন রকম অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন ছাড়াই এনলার্জড প্রস্টেটের চিকিৎসা সম্ভব। কলকাতা সহ সমগ্র পূর্ব ভারতের রোগীদের এই যুগান্তকারী চিকিৎতসা দিতে পেরে আজ আমরা খুবই আনন্দিত ও গর্বিত।”
রেজাম ওয়াটার ভেপার থেরাপিতে সাধারণ অস্ত্রোপচারের থেকে জটিলতা ও ঝুঁকি অনেকটাই কম এবং রোগীর কনজুগাল লাইফে কোন প্রভাব পরে না ও মূত্রনালী সংক্রান্ত কোন সমস্যার সম্ভাবনাও অনেক কম। সাধারণত দুই সপ্তাহের মধ্যেই রোগী লক্ষণীয় উন্নতি বুঝতে পারেন। এই প্রসেসে ধীরে ধীরে প্রোস্টেটের পরিমাণ হ্রাস হয় এবং তার ফলে এনলার্জড প্রস্টেটের লক্ষণগুলি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এই কারণেই, রেজাম ওয়াটার ভেপার থেরাপি খুব দ্রুত BPH আক্রান্তদের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। দেশের অন্যান্য জায়গার অনেক বেশি টাকায় এই চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া গেলেও তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যে সাধারণ মানুষের কাছে এই চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে সামারিটান মেডিকেল, সার্জিক্যাল অ্যান্ড ক্রিটিক্যাল কেয়ার বদ্ধপরিকর।