বুলবুলকে সামনে রেখে অস্তিত্বহীন ৩ লাখ কাঁচাবাড়ি পাকা করার গল্প ফেঁদে ৯ হাজার কোটি টাকা কাটমানি খেতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী : দিলীপ ঘোষ
এম রাজশেখর (১৬ নভেম্বর ‘১৭):- “বুলবুলকে সামনে থেকে অস্তিত্বহীন ৩ লাখ কাঁচাবাড়ি পাকা করার গল্প ফেঁদে ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে ৯ হাজার কোটি টাকা কাটমানি খেতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী,” বলে আজ আশঙ্কা প্রকাশ করলেন মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ তথা ভারতীয় জনতা পার্টি-র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য শাখার সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
আজ ভারতীয় জনতা পার্টি-র প্রদেশ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে তিনি এই কথা জানান।
অঙ্কের হিসেব পেশ করতে গিয়ে দিলীপবাবু জানান, “রাজ্য সরকারের তথ্যই বলছে বুলবুলের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মিথ্যাচার করছেন”।
দিলীপবাবু বলেন, “গত ৯ নভেম্বর রাজ্যে বুলবুলের তাণ্ডব চলার পর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমে বললেন রাজ্যে ২ লাখ কাঁচা বাড়ি ভেঙেছে , পরে তিনি সেটা বাড়িয়ে বলেন ৫ লাখ কাঁচা বাড়ি ভেঙে গেছে এবং আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকা।
যদিও ১১ নভেম্বর দিল্লীতে গিয়ে জনৈক সরকারী আমলা জানিয়ে আসেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে মোট ১ লাখ কাঁচা বাড়ি ভেঙেছে ও ৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।’ এ থেকেই পরিষ্কার তথ্য লুকোনোর প্রচেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী।”
এখানে থেমে না থেকে দিলীপ ঘোষ আরো জানিয়েছেন, “একসময় সারা দক্ষিণ ২৪ পরগণা জুড়ে কাঁচা বাড়ি ছিল ৪,০৭,১৭৫ টা। এর মধ্যে বুলবুলের তাণ্ডব পীড়িত জয়নগর ১ এবং ২, বাসন্তী, গোসাবা, সাগর, কাকদ্বীপ, নামখানা পাথর পাথরপ্রতিমা অঞ্চলে কাঁচা বাড়ি থাকার কথা ছিল ২,১৩,০০০ হাজার। কিন্তু ২০১৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মাধ্যমে এই তাণ্ডব পীড়িত অঞ্চলে ১,২৯,০০০ পাকাবাড়ি তৈরি হয়েছে। তারমানে অঙ্কের নিয়ম মেনে (৪,০৭,১৭৫ – ২,১৩,০০০ – ১,২৯,০০০) ৬৫ হাজার কাঁচা বাড়ি থাকার কথা।
এর সাথে উত্তর ২৪ পরগণা জেলার হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি ১ এবং ২, হাসনাবাদ ও বারাসাত ১ অঞ্চলে কাঁচা বাড়ি থাকার কথা ছিল ৭৫ হাজার।
তার পাশাপাশি তাণ্ডব পীড়িত পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে কাঁচা বাড়ি থাকার কথা আরো ৩০ হাজার।
সব মিলিয়ে কাঁচাবাড়ি ধ্বংস হতে পারে ১,৭০,১৭৫। এটাকে হিসেবের সুবিধার জন্য ২ লক্ষ্য কাঁচাবাড়ি ধরলেও মুখ্যমন্ত্রীর ৫ লাখের হিসেবের ধারে কাছে যাওয়া যাচ্ছে না।
আমরা বুঝতে পারছি না রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে তিনি রাজ্যবাসীর সাথে এতো মিথ্যাচার কেনো করছেন ?”
সাংবাদিক সম্মেলনে আশঙ্কা প্রকাশ করে দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, “মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন ৫ লাখ ক্ষতিগ্রস্ত কাঁচাবাড়ি তিনি সরকারী খরচে তৈরী করে দেবেন।
এখন এক একটা বাড়ি তৈরি করতে যদি কম করে ৩ লাখ টাকা খরচ ধরা হয়, তাহলে সহজেই অনুমেয় ৩ লাখ অস্তিত্বহীন বাড়ি তৈরীর কথা শুনিয়ে তিনি কত কোটি টাকা কাটমানি খাবেন!”