ব্যাঙ্গালোরের মহাদেবপুরার বিজেপি বিধায়ক হোয়াইট ফিল্ড এলাকার টুব্রাহাল্লি বস্তির বাঙালিদের তাড়িয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করছেন – কলকাতায় তীব্র প্রতিবাদে ফেটে পড়লেন তরুণ তুর্কী জননেতা ফারুক আহমেদ
বিশেষ প্রতিবেদন
ব্যাঙ্গালোরের মহাদেবপুরার বিজেপির বিধায়ক হোয়াইট ফিল্ড এলাকার বস্তিবাসী বাঙালি কর্মচারিদের তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন এবং তাদেরকে উচ্ছেদ করতে উঠেপড়ে লেগেছেন। পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, ওরা বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী তার কোনও প্রমাণ নেই।
তিন ডিসেম্বর সোমবার কলকাতার প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে সমাজকর্মী ও উদার আকাশ পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদ তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন এই ঘটনার।
ফারুক আহমেদ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ জানান। বৈধতা আছে এবং যারা আদি ভারতবাসী সেইসব বাঙালি কর্মচারিদের তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্রের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে বিজেপি নেতা তথা বিধায়কের বিরুদ্ধে।
বিজেপির বিধায়ক টুইট করে বাঙালি কর্মচারিদেরকে বাংলাদেশের থেকে আসা অনুপ্রবেশকারী বলে যে মিথ্যা কথা বলেছেন তাঁর বিরুদ্ধে গোটা দেশের সুনাগরিকদের গর্জে ওঠার ডাক দিলেন পশ্চিমবঙ্গের ভূমিপুত্র তথা সর্বভারতীয় নবচেতনার সাধারণ সম্পাদক তরুণ তুর্কী নেতা ফারুক আহমেদ।
দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বিজেপি বিধায়ক অরবিন্দ লিম্বাভালি পশ্চিমবঙ্গের ১৭ হাজার বাঙালি মুসলমান কর্মচারিদেরকে ওই বস্তি এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষী মুসলিম কর্মচারিরা কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুর ‘হোয়াইট ফিল্ড’ এলাকার বস্তিতে থাকেন কাজের সূত্রে।
পশ্চিমবাংলার নদীয়া-মালদা-মুর্শিদাবাদ-দুই দিনাজপুর-হাওড়া-হুগলি-দুই চব্বিশ পরগনা সহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ঠিকা কর্মচারি।
এদের বেশির ভাগই কাজ করেন ওই হোয়াইট ফিল্ড এলাকায় নির্মাণ শিল্পের শ্রমিক হিসেবে।
দক্ষিণ ভারতের ব্যাঙ্গালোরে হাজার হাজার গরিব বাংলাভাষীকে ‘অবৈধ বাংলাদেশী’র তকমা দিয়ে উচ্ছেদ করার অভিযান শুরু করেছে শহরের পুর কর্তৃপক্ষ, যেখানে ক্ষমতায় আছে বিজেপি। কর্ণাটকের মহাদেবপুরার বিধানসভা আসনের বিজেপি বিধায়ক অরবিন্দ লিম্বাভালি মারাক্তক ও বেদনাদায়ক উদ্যোগ দেখে দেশব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এই অন্যায়ের প্রতিরোধ করতে মানুষ সজাগ হচ্ছেন। বিজেপি বিধায়ক অরবিন্দ লিম্বাভালি টুইটারেও যে বিবৃতি দিয়েছেন তাতেও এলাকায় প্রশাসন ও মানুষ বিভ্রান্ত হয়েছেন।
আরএসএসের এই প্রচারক কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদী নেতা হিসেবেই বরাবর পরিচিত, এমনকী তার নামে গান পর্যন্ত বাঁধা হয়েছে কীভাবে তিনি হিন্দুরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্নকে সফল করবেন।
তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে এই হুমকির সত্যতার কথা স্বীকার করে বলেছেন, “হ্যাঁ আমি ওই বস্তির শ্রমিকদের রাজ্য ছেড়ে যেতে বলেছি। কারণ ওরা সব বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী। দেশের নিরাপত্তার প্রশ্নে ওরা বিপজ্জনক।”
বাঙালি কর্মচারিদের ভারতের ভোটার পরিচয়পত্র আছে, আঁধার কার্ড সহ সহ অন্যান্য প্রমাণপত্রও আছে। নিজেদের ভারতীয়ত্ব প্রমাণ করার মতো পরিচয়পত্র তাদের সঙ্গে থাকলেও রাজ্যে বিজেপির নেতা-বিধায়করা অবশ্য বলছেন সেগুলো বেশির ভাগই জাল এবং তাদের কর্নাটক থেকে তাড়াতেই হবে।
তাড়ানোর জন্য শহরের সোনডেকোপ্পাতে ডিটেনশন সেন্টার তৈরি হচ্ছে বলেও জানিয়ে দেন।
এই হুমকির পর ওখানকার বাঙালিরা সাহায্য চেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সরকারের কাছে।
হোয়াইট ফিল্ড এলাকার পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল আহাদ বলেছেন, “ওই বস্তিবাসীরা যে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী তার কোনো প্রমাণ নেই।”