Read Time:4 Minute, 40 Second
প্রাইভেট হাসপাতাল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর গড়া কমিশনের পক্ষে জনমত গঠনে আলোচনা সভা।
প্রাইভেট হাসপাতালগুলির চিকিৎসা পরিষেবা ও মাত্রাতিরিক্ত বিল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনেক অভিযোগ আসছিলো। এই জন্য মুখ্যমন্ত্রী গত বছর প্রাইভেট হাসপাতালগুলির কতৃপক্ষদেরকে ডেকে কলকাতার টাউন হলে এক বৈঠক করেন। সেই বৈঠকের খবর টিভিতে লাইভ সম্প্রচার হয়। তা দেখে সব মানুষ মুখ্যমন্ত্রীকে অনেক ধন্যবাদ জানান।
মুখ্যমন্ত্রী সেই বৈঠকে হাসপাতালগুলির কতৃপক্ষদের কে বলেছিলেন আপনারা বিনিয়োগ করেছেন, লাভ করুন কিন্তু চিকিৎসা পরিষেবার বিনিময় মাত্রাতিরিক্ত লাভ করবেন না। মুখ্যমন্ত্রী সেদিন বলেছিলেন প্রাইভেট হাসপাতালগুলির কতৃপক্ষ আরো মানবিক হোক। এরপর মুখ্যমন্ত্রী নতুন একটা আইন তৈরি করেন, কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীম রায়ের নেতৃত্বে দশ সদস্যের একটি কমিশন গঠন করেন। সেই কমিশনের কাজ চলছে ইতিমধ্যে কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসা পরিষেবার গাফিলতি ও মাত্রাতিরিক্ত বিল করার জন্য অভিযুক্তদের জরিমানাও করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর গড়া এই কমিশনের সমর্থনে জনমত গঠনের জন্য শনিবার ৪ঠা আগস্ট বিকালে এক আকর্ষণীয় সভা হয়।
এটি হয়েছিল দক্ষিণ কলকাতার বাইপাসের ধারে একটি হলঘরে, ভিড়ে ঠাসা এই সভায় রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন অনেক সময়ই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসকদের চাপ দেন বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল টেস্টের মাধ্যমে বিল বাড়ানোর এবং অযুক্তিক ভাবে বেশি বিল করে এইজন্য মানুষের অনেক ক্ষোভ আছে। সেইজন্য মুখ্যমন্ত্রীর এই কমিশন গড়ায় মানুষের সুবিধা হয়েছে, মানুষ দিশাও পেয়েছে। তবে কমিশন সম্পর্কে সবাই এখন অবগত নন এবং এও বলেন সব চিকিৎসক বা প্রতিষ্ঠান খারাপ নয় তাই সমাজটা সুস্থভাবে বেঁচে আছে।
শোভনদেববাবু উদ্যোক্তাদের বলেন এমন আলোচনা সভা আরো করতে এবং প্রয়োজনে কমিশনের কথা হোর্ডিং লাগিয়ে মানুষকে জানানো হোক।
রাজ্যের নারী, শিশুকল্যান ও সমাজকল্যান দপ্তরের মন্ত্রী ডাঃ শশী পাঁজা বলেন হাসপাতাল নিয়ে কখনো কোনো অভিযোগ থাকলে,মুখ্যমন্ত্রীর গড়া এই কমিশনে জানাবেন। কিন্তু কেউ নিজে হাতে আইন তুলে নেবেন না, হাসপাতালে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবেন না।
প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি শ্যামল সেন বলেন কিছু নার্সিংহোম এমন মাত্রাতিরিক্ত বিল করে যাতে রোগীর আত্মীয়দেরই হার্ট এট্যাক হবার উপক্রম হয়। অনেকসময় রোগীর মৃত্যুর পর বিরাট বিল যতক্ষণ না মেটাতে পারা যাচ্ছে ততক্ষন মৃতদেহ আত্মীয় স্বজনদের হাতে দেওয়া হয়না। এটা খুবই অমানবিক।
আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন দুই চিকিৎসক ডাঃ রবীন চক্রবর্তী ও ডাঃ পূর্ণেন্দু রায়। আলোচনার শুরুতে স্বাগত ভাষণ দেন পল্লব ঘোষ। আলোচনা সভাটি আয়োজন করেছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার জয়হিন্দ বাহিনী এবং সাপ্তাহিক সংগ্রামী মা মাটি মানুষ পত্রিকা।
প্রতিবেদন ও ছবি – রাজীব মুখোপাধ্যায়।
Advertisements