
যোগচর্চার উন্নয়ন ও প্রসারে অসামান্য অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার
By PIB Kolkata
কলকাতা, ২০ জুন ২০১৯
যোগচর্চার উন্নয়ন ও প্রসারে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি-স্বরূপ গুজরাটের লাইফ মিশন প্রতিষ্ঠানের স্বামী রাজর্ষি মুনি, ইতালির শ্রীমতী অ্যান্তোনিয়েত্তা রজ্জি, মুঙ্গেরের বিহার স্কুল অফ যোগা এবং জাপানের জাপান যোগা নিকেতন ২০১৯ – এর প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার পাচ্ছেন। এবার এই পুরস্কারের জন্য ৭৯টি মনোনয়নের মধ্যে থেকে এদের বেছে নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০১৬-র ২১শে জুন দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী চন্ডীগড়ে যোগচর্চার প্রসার ও উন্নয়নে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি-স্বরূপ এই পুরস্কারের কথা ঘোষণা করেছিলেন। কেন্দ্রীয় আয়ুষ মন্ত্রক পুরস্কারের নিয়মাবলী ও নীতি-নির্দেশিকা রচনা করেছে। পুরস্কার প্রদানের জন্য দুটি কমিটিও গঠন করা হয়েছিল। সর্বসমক্ষে বিজ্ঞাপন প্রকাশের মাধ্যমে পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন আহ্বান করা হয়। আয়ুষ মন্ত্রকের সচিবের নেতৃত্বে গঠিত স্ক্রিনিং কমিটি জমা পড়া ৭৯টি মনোনয়নের মধ্য থেকে একটি ছোট তালিকা তৈরি করেন। এরপর, ক্যাবিনেট সচিব, প্রধানমন্ত্রীর অতিরিক্ত মুখ্য সচিব, বিদেশ মন্ত্রকের সচিব (পূর্ব), আয়ুষ মন্ত্রকের সচিব ও অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে গঠিত বিচারক মণ্ডলী স্ক্রিনিং কমিটির সুপারিশগুলি খতিয়ে দেখে পুরস্কারের জন্য প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি-বিশেষের নামের তালিকা তৈরি করে। প্রাসঙ্গিক সমস্ত বিষয় ও অন্যান্য তথ্য বিবেচনা করে বিচারক মণ্ডলী ২০১৯ – এর প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কারের জন্য উপরোক্ত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি-বিশেষকে মনোনীত করেন।
গুজরাটের লাইফ মিশন প্রতিষ্ঠানের স্বামী রাজর্ষি মুনি বিগত কয়েক দশক ধরে যোগচর্চা করেছেন। যোগচর্চার প্রসারে তিনি ১৯৯৩ সালে লাকুলিশ ইন্টারন্যাশনাল ফেলোশিপ এনলাইটমেন্ট মিশন (লাইফ মিশন) – এর প্রতিষ্ঠা করেন। যোগচর্চার মাধ্যমে স্বামীজী বহু মানুষের জীবন ছুঁয়ে গেছেন। এমনকি, প্রাচীন যোগজ্ঞানের বার্তা ও বাণী মানবতার স্বার্থে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করেছেন। যোগচর্চার উপকারিতা নিয়ে বহু বইয়ের রচয়িতাও তিনি। লালুকিশ যোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান তথা প্রধান আধ্যাত্মিক গুরু হিসাবে স্বামীজী দায়িত্ব পালন করছেন।
ইতালির লিরিচির যোগ প্রশিক্ষক ও শিক্ষক শ্রীমতী অ্যান্তোনিয়েত্তা রজ্জি চার দশকেরও বেশি সময় ধরে যোগচর্চার সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে রয়েছেন। তিনি পরম্পরাগত ভারতীয় যোগের প্রচার ও প্রসারে ইতালি ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কাজ করছেন। এজন্য তিনি সর্ব যোগ ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। তাঁর যোগা থেরাপি ইউরোপের বিভিন্ন অংশের মানুষের আরোগ্য লাভের ক্ষেত্রে অভিনব উপশম হয়ে উঠেছে।
২
শ্রী স্বামী সত্যানন্দ সরস্বতী ১৯৬৪ সালে মুঙ্গেরে বিহার স্কুল অফ যোগা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যোগ শিক্ষার এই প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন ধরণের যোগচর্চা পদ্ধতি প্রণয়ন করেছে। এই পদ্ধতি সমসাময়িক শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হচ্ছে। এমনকি, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যোগচর্চা সংক্রান্ত বিভিন্ন কর্মসূচিগুলি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি ক্ষেত্র, হাসপাতাল, প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি শিল্প ক্ষেত্র সহ ব্যক্তি-বিশেষের ক্ষেত্রেও কাজে লাগানো হচ্ছে।
জাপান যোগা নিকেতন ১৯৮০-তে প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই সেদেশে যোগচর্চার প্রসার ও প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ভারতে ঋষিকেশে যে যোগ নিকেতন রয়েছে, তার শাখা সংগঠন হিসাবে জাপানে এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠেছে। সেদেশে এই প্রতিষ্ঠানটি একাধিক যোগ প্রশিক্ষণ ও থেরাপি কোর্স পরিচালনা করে থাকে। জাপানে যোগচর্চার সঙ্গে যুক্ত পেশাদারদের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতিদানের ক্ষেত্রেও এই প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব অপরিসীম। এই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রকাশিত ‘যোগা থেরাপি থিওরি’ সর্বস্তরের মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য সমাদৃত হয়েছে।
পুরস্কার হিসাবে প্রাপকদের একটি ট্রফি, মানপত্র এবং নগদ ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়।