তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের জন্য একুশের মঞ্চ থেকে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উল্লেখযোগ্য ২১ টি বার্তা
ফারুক আহমেদ
সালটা ১৯৯৩ সাল। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার জন্য ভোটার কার্ডের দাবিতে ২১ জুলাই মহাকরণ অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও এই কর্মসূচি করার কথা ছিল ১৪ জুলাই। কিন্তু সে বছর ওই সময় প্রাক্তন রাজ্যপাল নুরুল হাসানের প্রয়াণের জন্য কর্মসূচি পিছিয়ে ২১ জুলাই করা হয়। ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই মমতার ডাকে মহাকরণ অভিযান কর্মসূচিতে কলকাতার রাজপথে রক্ত ঝরেছিল। পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন ১৩ জন কংগ্রেস কর্মী, এমন অভিযোগই করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। এ ঘটনায় রীতিমতো উত্তাল হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। এ ঘটনার পর থেকেই প্রতিবছর এদিন শহিদ দিবস হিসেবে পালন করে তৃণমূল কংগ্রেস।
ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিভেদকামী শক্তিকে প্রতিহত করতে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির উত্থান জরুরি।
দেশবাসীকে বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত শিক্ষা দিতে এবং তাদের পতন সুনিশ্চিত করতে তাদের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধভাবে ভোট দিয়ে সম্প্রীতির ভারতকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসতে হবে।
বাংলার মানুষ ইতিহাস তৈরি করবেন ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে।
২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে ইভিএম মেশিনে নয় ব্যালট পেপারে ভোট করানোর জোরালো আবেদন করলেন এবং বিভেদকামী শক্তির পতন ঘটিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির জয় সুনিশ্চিত করার ডাক দিলেন বাংলার প্রিয় দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০২১ বিধানসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস বিপুল সংখ্যক মানুষের আর্শীবাদ নিয়ে পুনরায় সরকার গড়বে। সেইকথাও দৃঢ়ভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দিলেন ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান মুখ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও মমতা বন্দ্যোপধ্যায়। দুজনেই প্রতিজ্ঞাবদ্ধবাক্য ব্যবহার করেন।
একুশের মঞ্চ থেকে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উল্লেখযোগ্য ২১ বার্তা।
” ১। আজকে সূর্য হাসছে। তেজ দিচ্ছে তেজ। আরও তেজদৃপ্ত হও। উঠে দাঁড়াও, রুখে দাঁড়াও। জাগো জাগো জাগো।
২। ১৮টা পেয়েছে। তিন চারটে আসনে দু হাজার, তিন হাজার ভোটে জিতেছে। আবার ভোট হলে টোটালটাই উল্টে ঠাবে।
৩। বিজেপি নেতারা কান খুলে শুনুন। আপনাদের নেতা বলছে, বাস থেকে টেনে নামাবেন। তৈরি থাকুন। আগামী দিন মিটিং মিছিল করবেন তো, এর পাল্টা যদি আমাদের লোকেরা দেয়, পারবেন তো!
৪। বিজেপি-কে ভোট দিলে ভাটপাড়া হয়। বুঝতে পারছেন।
৫। তুই সবচেয়ে বড় ডাকাত। ৩৪ বছর ধরে সিপিএম কত টাকা ফিরিয়েছে। আর বড়লোকের দল হলে প্লেনেও ধাক্কা দেয় না।
তৃণমূল গরিবের দল। তাতে টিকটিকিতে ঠোকায়।
৬। কত গুলো কুচো চিংড়ি আর কতগুলো ল্যাঠা মাছেদের বড় বড় কথা। ২৬ তারিখ প্রোগ্রাম দিচ্ছি। ব্ল্যাক মানি ফিরিয়ে দাও আন্দোলন হবে। চোরেদের সর্দার, ডাকাতদের সর্দার বলছে কাটমানি ফিরিয়ে দাও। ইলেকশনে কত টাকা একেক জন নিয়েছে।
৭।যাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের সমান মাইনে চান, তাঁরা কেন্দ্রে চলে যান। কেন্দ্রে করলে কেন্দ্রের মতো, রাজ্যে করলে রাজ্যের মতো।
৮। সিপিএমের যারা হার্মাদ, তারা আজ বিজেপি-র ওস্তাদ। এরা এখন নতুন বোতলে পুরনো মদ।
৯। বিজেপি একটা পরগাছা এখানে। কিচ্ছু নেই। কখনও সিপিএমের কানে কানে। কখনও কংগ্রেসের কানে কানে।
১০। শতাব্দী রায় বলছিল, দিদি দেখো ভোট হয়ে গেছে, আমাকে ইডি ডেকেছে। ডেকেই বলছে তুমি বিজেপি-র ওমুক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করো। না করলে তোমার সুদীপের মতো, তাপসের মতো হবে।
১১। এতো ভোট পেয়েও তোমার এখনও লোভ যায়নি। গোয়া ভাঙতে হবে, কর্নাটক ভাঙতে হবে, এতো ভাঙতে ভাঙতে তোমার কোমর ভেঙে যাবে।
১২। কখনও সংখ্যালঘুদের উপরে অত্যাচার, কখনও দলিতদের উপরে অত্যাচার। আমার কাছে এক ভিডিও রয়েছে। এক বিজেপি নেতা বলছে, হিন্দুদের মরতে দাও, তবেই আমরা জিতব।
১৩। ইভিএম চাই না, ব্যালট চাই। আমাদের এখানে যত ভোট হবে সব ব্যালটে করুন। পুরসভা, পঞ্চায়েত ভোট ব্যালটে হবে।
১৪। আমি সব সহ্য করতে পারি। কিন্তু বাংলা মায়ের অসম্মান সহ্য করতে পারি না।
১৫। তৃণমূল কংগ্রেস উন্নততর চরিত্র তৈরি করুক। আদর্শ দল হয়ে উঠুক।
১৬। কংগ্রেস আর সিপিএমকে বলছি যে ডালে বসে আছো, সেই ডাল কেটে ফেলো না। আজ তোমার সাইনবোর্ড বিজেপি নিয়ে নিয়েছে।
১৭। কমিশন বলছে, তোমার ন্যাশনাল স্টেটাস থাকবে না। আমি ইন্টারন্যাশনাল স্টেটাস করব। তোর ন্যাশনাল স্টেটাস আমার চাই না।
১৮। যারা যারা টাকা নিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তাদের আইডেনটিফাই করুন।
১৯। পে কমিশন যতটা পারব করব। ১২৩ পারসেন্ট ডিএ দিয়েছি।
২০। কেউ কেউ আমার মৃত্যু কামনা করে। কিন্তু আমি মৃত্যুকে ভয় পাই না।
২১। সহযোগিতা চাইলে সহযোগিতা করব। ধমকে চমকে কিছু হবে না। ধমকালে আমি গর্জাই, চমকালে আমি বর্ষাই।”