দুয়ারে সাংবাদিক – দূর্গা পূজার কার্নিভাল বন্ধ থাকবে – ১১ দফার প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা জারি পশ্চিমবঙ্গের
সুমন মুন্সী,কলকাতা
দুয়ারে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব আর সাথে করোনার তৃতীয় ওভের হাতছানি এই অবস্থায় কোভিড পরিস্থিতিতে কীভাবে হবে রাজ্যের দুর্গাপুজো।
৫ই অক্টোবর মঙ্গলবার তা নিয়ে ১১ দফা নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য সরকার । এবারও হবে না সরকারি রেড দুর্গাপূজা কার্নিভাল। শিল্পীদের দুর্দশার শেষ নেই কিন্তু নিরুপায় হয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি রইল মণ্ডপ চত্বরের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উপরও। নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, ভিড় এড়াতে খোলামেলা রাখতে হবে পুজো মণ্ডপ এবং নিয়ন্ত্রণ করা হবে সমাবেশ।
করোনা পরিস্থিতিতে ২০২০ সালে জৌলুসহীন দুর্গাপুজো হয়েছিল। প্রতিমা দর্শনের গণ অনুমতি ছিল না। এবার যদিও করোনার প্রকোপ গতবারের মতো নয় তবুও সতর্কতা ভালো ।
এক নজরে কি,কেন,কিভাবে হবে এবারের পূজা :
১) ক) মণ্ডপ হবে চারদিক খোলা।
খ) পৃথক প্রবেশ এবং প্রস্থান পথ ।
গ) শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য মণ্ডপে যথেষ্ট খোলা জায়গা রাখতে হবে।
২) ক) মণ্ডপে স্যানিটাইজার এবং মাস্কের ব্যবস্থা রাখা বাধ্যতামূলক, কোনো অবহেলা নয় ।
খ) যত বেশি সম্ভব স্বেচ্ছাসেবক মণ্ডপে রাখতে হবে নিয়ন্ত্রণের জন্য । মাস্কে মুখ ঢাকতে হবে তাঁদেরও সাথে করোনার বিধি নিষেধ মানতে হবে । দর্শনার্থীদের পাশাপাশি তাঁদেরও মানতে হবে শারীরিক দূরত্ব।
৩) ক) পুজোর সময় অঞ্জলি, সিঁদুরখেলা বা দেবীবরণের মতো রীতিনীতি পালন করা যাবে। তবে তা করতে হবে ছোট ছোট দলে নিয়ম মেনে ।
খ) মন্ত্রোচ্চারণের সময় পুরোহিতদের মাইক্রোফোন ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যাতে দূর থেকে সেই মন্ত্র শুনতে পান দর্শনার্থীরা এবং দূরত্ব বজায় থাকে ।
গ) অঞ্জলির ফুল বাড়ি থেকে আনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, সংক্রমণ এড়াতে।
৪. জনসমাগম এড়াতে হবে তাই পুজো মণ্ডপে কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা চলবে না।
৫. শারদ পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে বিচারকরা ভিড় করে মণ্ডপে প্রবেশ করতে পারবেন না। সর্বোচ্চ দু’টি গাড়ি নিয়ে মণ্ডপে ঢুকতে পারবেন তাঁরা। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩ পর্যন্ত মণ্ডপে প্রবেশ করতে পারবেন বিচারকরা, করোনা বিধি মেনে চলতে হবে ।
৬. ভিড় কমাতে পুজো কমিটিগুলিকে বৈদ্যুতিন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় লাগাতার প্রচারের পরামর্শ দিয়েছে রাজ্য।
৭. ক) পুজো উদ্বোধন কিংবা বিসর্জন জাঁকজমকপূর্ণ করা চলবে না। সম্ভব হলে ভারচুয়ালি সারতে হবে পুজো উদ্বোধন।
খ) নদী বা পুকুরে বিসর্জনের ক্ষেত্রে সময় বেঁধে দেওয়া হবে। নির্দিষ্ট টাইম স্লট মেনেই প্রতিমা নিরঞ্জন করতে হবে। মণ্ডপ থেকে প্রতিমা সরাসরি ঘাটেই আনতে হবে। মাঝে অন্য কোথাও দাঁড়ানো চলবে না।
৮. পুজো সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় অনুমতি নিতে হবে অনলাইনে।
৯. এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের তরফে দূর্গা পূজা কার্নিভালের আয়োজন করা হচ্ছে না।
১০. ভিড় কমাতে তৃতীয়া থেকে দর্শনার্থীদের জন্য পুজোমণ্ডপ খুলে দেওয়া হবে।
১১. রাজ্যের তরফে পুজো কমিটিগুলিকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে।
হিন্দু বর্ষপঞ্জী অনুসারে, অক্টোবর মাসের ব্রত- উৎসবের দিন
- ৬ অক্টোবর – মহালয়া/ আশ্বিন অমাবস্যা/ পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে মাতৃপক্ষের সূচনা
- ৭ অক্টোবর – নবরাত্রি শুরু
- ১১ অক্টোবর – মহাষষ্ঠী
- ১২ অক্টোবর – মহাঅষ্টমী
- ১৩ অক্টোবর – মহানবমী
- ১৪ অক্টোবর – বিজয়া দশমী/ দশহরা
- ২০ অক্টোবর – লক্ষ্মীপুজো
- ২৪ অক্টোবর – করভা চৌথ
অক্টোবর মাস শেষ হলে, নভেম্বর মাসেও রয়েছে হিন্দুদের বেশ কয়েকটি উৎসব। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় হল কালী পুজো, দীপাবলি, ভাতৃ দ্বিতীয়া, রাসযাত্রা ও কার্তিক পুজো
বর্তমান সংকট কালে কেন মানবো? এই প্রশ্ন না করে কি করে আরো সচেতন হয়ে সমাজ কে সুস্থ্য করা যায়, এটাই সময়ের দাবি ।
আইবিজি নিউজ সকলকে শারদ শুভেচ্ছা জানিয়ে আবেদন জানায়, বিধি নিষেধ পালন করে সকলে সুস্থ্য থাকুন ।
সঠিক বিধি জানার জন্য সরকারি নির্দেশ দেখুন ।