কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকাকরণ এক শক্তিশালী হাতিয়ার; আসুন আমরা টিকাকরণের গতি ও পরিধি সম্প্রসারণে আরও নিবিড় অভিযান চালাই : ডঃ মনসুখ মান্ডভিয়া
By PIB Kolkata
“আমরা কোভিড-১৯ টিকাকরণের শেষ পর্যায়ে। আসুন, আমরা সকলেই আরও নিবিড় অভিযান গ্রহণ করি, যাতে টিকাকরণের গতি ও পরিধি বাড়ানো যায়”। ‘হর ঘর দস্তক’ অভিযানের আওতায় রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে কোভিড-১৯ টিকাকরণ পরিস্থিতি সম্পর্কে আজ ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে মণিপুর, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড ও পন্ডিচেরীর স্বাস্থ্য সচিব তথা স্বাস্থ্য দপ্তরের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে এক পর্যালোচনা বৈঠকে ডঃ মান্ডভিয়া একথা বলেন। উল্লেখ করা যেতে পারে, এই তিনটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত পন্ডিচেরীতে টিকাকরণের গতি মন্থর বলে জানা গেছে। সারা দেশে যেখানে প্রথম ডোজ টিকাকরণ হয়েছে ৮২ শতাংশ ও দ্বিতীয় ডোজ ৪৩ শতাংশ, সেখানে পন্ডিচেরীতে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ যথাক্রমে ৬৬ শতাংশ ৩৯ শতাংশ। নাগাল্যান্ডে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ যথাক্রমে ৪৯ শতাংশ ও ৩৬ শতাংশ। মেঘালয়ে এই হার যথাক্রমে ৫৭ শতাংশ ও ৩৮ শতাংশ। অন্যদিকে, মণিপুরে কেবল ৫৪ শতাংশ প্রথম ডোজ এবং ৩৬ শতাংশ দ্বিতীয় ডোজ টিকাকরণ হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এই তিনটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল টিকাকরণের নিরিখে জাতীয় গড়ের তুলনায় অনেক পিছিয়ে রয়েছে।
কোভিড-১৯ মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকাকরণকে সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার হিসাবে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সবপক্ষকে যোগ্য ব্যক্তিদের সম্পূর্ণ কোভিড টিকাকরণের লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রয়াস গ্রহণের আহ্বান জানান। ‘আসুন, আমরা সমবেতভাবে এটা নিশ্চিত করি যে, দেশে কোভিড-১৯ টিকার সুরক্ষা কবচ থেকে যেন একজন যোগ্য ব্যক্তিও বাদ না পড়েন। সেই সঙ্গে, সততা, যাবতীয় অপপ্রচার ও কুসংস্কারের মতো সমস্যাগুলি নিরসন করতে পারি।
ডঃ মান্ডভিয়া সপ্তাহে অন্তত একদিন সমস্ত রাজ্য সরকারি আধিকারিকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করা এবং সম্পূর্ণ টিকাকরণের লক্ষ্যে তাঁদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য রাজ্যগুলির প্রতি আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী সম্পূর্ণ টিকাকরণের লক্ষ্যে ‘হর ঘর দস্তক’ নামে যে অভিযানের কথা ঘোষণা করেছেন, তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে গ্রামগুলিতে ‘প্রচার টোলি’ বা সচেতনতা প্রচারের উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলেন। তিনি রাজ্যগুলিকে ‘ভ্যাকসিনেশন টোলি’ বা ভ্রাম্যমাণ টিকাকরণ ইউনিট কর্মসূচি গ্রহণ করে প্রত্যেক যোগ্য ব্যক্তিকে প্রথম বা দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া সুনিশ্চিত করতে বলেন। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি অরুণাচল প্রদেশ সফরে গিয়ে তিনি ‘সম্পূর্ণ টিকা গ্রহীতা পরিবার’ স্টিকার দেখেছেন। এরকম প্রয়াস তিনি অন্য রাজ্যগুলিকেও গ্রহণের পরামর্শ দেন। সম্পূর্ণ কোভিড-১৯ টিকাকরণের জন্য শিশু ও পড়ুয়াদের দূত হিসাবে কাজে লাগানো যেতে পারে বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।
ডঃ মান্ডভিয়া রাজ্যগুলিকে জেলা-ভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণের পাশাপাশি, পর্যাপ্ত সংখ্যায় টিকাকরণ দল মোতায়েন এবং যে জেলাগুলিতে টিকাকরণের গতি মন্থর, সেখানে দৈনিক অগ্রগতি নিয়মিত পর্যালোচনার পরামর্শ দেন। সাধারণ মানুষের মধ্যে কোভিড টিকা সম্পর্কে যাবতীয় বিভ্রান্তি ও কুসংস্কার দূর করতে তিনি বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি প্রচারের উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রী ‘হর ঘর দস্তক’ অভিযানের আওতায় টিকাকরণের ক্ষেত্রে বাধা-বিপত্তিগুলির কথা রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির কাছে জানতে চান। এই পর্যালোচনা বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব শ্রী রাজেশ ভূষণ, স্বাস্থ্য বিষয়ক অতিরিক্ত সচিব ডঃ মনোহর অগ্নানি, স্বাস্থ্য পরিষেবা বিষয়ক মহানির্দেশক ডঃ সুনীল কুমার সহ মন্ত্রকের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।