ও ডাক্তার, এতো পিশাচ কেন তুমি ?
সুমন মুন্সী
ও ডাক্তার, এতো পিশাচ কেন তুমি ?
মাঝ রাত হয়ে গেলো,
ভাত খাবে আর কখন ?
ভাতের থালা আগলে নিয়ে,
আমার হয় যে মরণ ।
মাঝ রাতেতে দরজা খুলে,
কপট রগে প্রশ্ন করে,
আমার কাজের সোনাদি ।
ভাড়া বাড়িতে থাকি আমি,
হাউস স্টাফ মেডিকেলে,
সকাল বেলা কেলাস চলে,আর,
বাকি দিন রোগীর সেবাতেই কাটে ।
কাঁদছে কেউ , বাপের জন্য, কেউ বা ছেলের তরে ।
কোনো মা উদাস বসে,ভাবছে কখন খোকা আসে।
লেবার রুমে যাওয়ার আগে,
মায়ের চোখে জল ছলছল করে,
কান্না ভেজা গলায় বলে ,
“ও ডাক্তার এবারও কি আমার, আবার মেয়েই হবে?
যদি দেখো মেয়ে হয়েছে,
গলায় মোদের ঢেলে দিও বিষ,
মেয়ের মায়ের জীবনে শুধুই যে বিষ।
এক বুড়ো, শুধুই খিটখিটে আর গল্ মন্দ করে,
ওষুধ গুলো বমি করে দেয়, যেন সে আর না বাঁচে,
হাতে পায়ে ধরে তাকে ওষুধ দেই খাইয়ে,
প্রতিদানে বুড়ো ফোকলা দাঁতে হাসে ।
আতঙ্কের গলায় কোনো মা এসে হাতে পায়ে ধরে,
ও ডাক্তার মেয়ে আমার মা হবে যে,
এ পাপ বিদায় করো,
ছেলেটা পালিয়েছে জানো,
এবার সবার সমাজে মুখ যে হবে কালো।
নেতার বাবার বুকে ব্যথা,
একশ ছেলে পাশে,
এক কোপাতে মুন্ডু কাটে,
এক চুল এদিক ওদিক হলে।
এতো কিছু সারা দিনে, ঝক্কি মেটার পরে,
খেয়াল হলো টিফিন খেতে ভুলেই গেছি,
ক্যান্টিনেতে গিয়ে।
ডিম্ টোস্ট বা ঘুগনি রুটি সাথে এক কাপ চা,
এই খেয়েই দৌড়ে যাই,
করতে অপুষ্টির সেবা।
এবার দিদি তুমি বোলো খাবার পাবো কি?
হেসে দিদি বলে , খাবে এস ,
এখনো মরেছি আমি কি ?
হেসে বলি বালাই ষাট, মরবে কেন তুমি?
ভাই যে তোমার ডাক্তার গো, জান নাকি তুমি?
ভাইয়ের বোনের সংসারেতে,
ডাক্তার ডে আসে,
যেদিন কোনো গরিব মানুষ,
বুক ভোরে আশীর্বাদ শুধু করে।
ডাক্তার আমিও মানুষ তোমাদেরই মতো,
পিশাচ ও নই , দেবতাও নই ,শুধুই মানুষ জেনো ।
কলের পুতুল নয়কো মোরা,
মানুষ বাঁচান কাজ,
পারিনা শুধু বাঁচাতে যখন, দেবতা রয় নারাজ ।
আজকে দিদি মাংস রেধেছে বেশ কষা করে,
এসে বললো “ডক্টর ডে খাও মজা করে”।
কাজের দিদি আমার নিজের দিদি, মাতৃসম মন,
এদের সেবায় জীবন দিয়ে,ধন্য আমার ডাক্তারের জীবন ।
সেই সকল ডাক্তার ও ডাক্তারি ছাত্রদের জন্য যাদের সেবায় ও ত্যাগে সমাজ আজও বুক ভোরে নিঃস্বাস নেয়। ড:রঘুপতি সারেঙ্গী , ড: পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায় , ড:অলকা গুপ্তা আমাদের পথ প্রদর্শক আপনাদের ডাক্তার ডে’র অভিনন্দন । আমার সকল ডাক্তারদের প্রণাম ।