প্রসঙ্গ ১০ই মার্চ ধর্মঘট ও কাদের অনুপ্রেণায় আজ বাংলার শিক্ষা আজ অহংকার, দম্ভ আর নিম্নরুচির পরাকাষ্ঠা?
যাদবপুর,কলকাতা:
১০ই মার্চ ২০২৩ বাংলা দেখলো যৌথ মঞ্চের ঐক্যবদ্ধ রূপ আর তার ফলে চিন্তিত অপরপক্ষ। বাংলা যখন ন্যায্য দাবীর কারণে পথে, ঠিক তখনই যাদবপুর বিদ্যাপীঠ এ এক বিচিত্র দম্ভের প্রমান পেলো সংবাদ মাধ্যম। বিগত ধরেই ক্রমাগত পাঠন পাঠনের গুণগতমান আর আগের সুনামের উপযোগী নয় ।
প্রায় ৩০ হাজার মঞ্চের সামনে আর লক্ষ মানুষ যার যার অফিসের সামনে ধর্মঘটে সামিল, ঠিক তখন অনির্বান ভাবছেন কেন এই ধর্মঘট শুধুই কি ডিএ আর কয়েকটা টাকার লড়াই না কি অন্য কিছু? নানা অফিস ঘুরে যা বোঝা গেলো? এ শুধু ডিএ বা টাকার দাবি নয় বরঞ্চ কোথাও একটা পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। দিনের পরদিন অল্পশিক্ষিত বা অশিক্ষিত কেষ্টা, বিষ্ঠা দের চোখরাঙানি সহ্য করে সরকারি কাজ করতে তাদের বিবেক আর সায় দিচ্ছেনা । ঠিক এখান থেকেই শুরু অসন্তোষের আর প্রতিবাদী যুক্তমঞ্চের ডাকে প্রতীক ধর্মঘট। এখন প্রশাসন বুঝলেন না কোথায় মাটি সরে যাচ্ছে? মানুষ ধান্দা গোছানোর জন্য জিন্দাবাদ বলছে , সুযোগ পেলেই অন্য রঙের পতাকা দরে নেবে। ৩৪বছর যদি দমবন্ধ করা সময় হয়ে থাকে, তবে শেষ ১০বছর দুর্নীতির মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় আজ বাংলা।
মানুষ প্রতিবাদে এসেছেন জেলা থেকে, শহর তলি থেকে, না কোনো টাকা দেয়া গাড়ি বা ডিম্ ভাতের মিছিলে নয় । অথচ কোনো রাজনৈতিক দলের ডাকে নয় যৌথ মঞ্চ সবার।
এসএসসি ,টেট বা যেকোনো চাকরি বিক্রি হয়ে গেছে, বলতে পারেন কে দায়ী? আপনি দুর্নীতি যদি না করে থাকেন তবে আপনার প্রশাসন এই দুর্নীতি আটকাতে ব্যর্থ । আসুন দেখুন কি বিষ বৃক্ষ গত দশ বছরে তৈরী হয়েছে, ৩৪শের শীতঘুমের পর ।
আসুন দেখা যাক রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন অনিলায়ন পার করে কি পরম মমতায় বাংলাকে গ্রাস করেছে। ন্যূনতম সৌজন্য কি বিষয় সেটাই বোঝানোর ক্ষমতা যাদের নেই তারা কি শিক্ষা দেবে?
দেখুন এক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধির করুন অভিজ্ঞাতার কাহিনী যাদবপুর বিদ্যাপীঠ এর প্রাজ্ঞ প্রধান শিক্ষক এর কথা।
যাদবপুর বিদ্যাপীঠ এর প্রধান শিক্ষক মহাশয় বাছা সংবাদমাধ্যম ছাড়া কথা বলেন না,দেখাও করেন না। তবুও তার অনিচ্ছা সত্ত্বেও স্পেশাল করেস্পন্ডেন্ট এবং অল ইন্ডিয়া রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন এর পশ্চিমবঙ্গ এক্সিকিউটিভ সদস্য অনির্বাণ চক্রবর্তী র সাথে দুপুর ১২.৪৫ থেকে ১.১৫ মিনিট তার চেম্বারে অত্যন্ত অনিচ্ছার সাথেই কথা বলেন।বাইট নেওয়ার কথা বললে তিনি বলেন “বাছা মিডিয়া” ছাড়া তিনি বাইট দেননা। তিনি আরও বলেন এবিপি, ২৪ ঘন্টা র সাংবাদিক রা জানেন তাকে কি প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে হয়। তার উত্তরে অনির্বাণ চক্রবর্তী বলেন,সংবাদমাধ্যম তো কোনো কথা শিখে প্রশ্ন করে না।সংবাদমাধ্যম এর দুটো সত্ত্বা এক যা ঘটছে তা তুলে ধরা আর দুই কি ঘটছে তা বের করা। ১০/৩/২৩ বকেয়া ডি এর দাবীতে সমস্ত রাজ্যে চলছে কর্মবিরতি। সেই সুত্রে অনির্বাণ চক্রবর্তী পৌঁছে যায় যাদবপুর বিদ্যাপীঠ এর মতো কোলকাতার একটি সুনামধন্য স্কুলে।যদিও বিগত কিছু বছর ধরে এই স্কুলের আশানুরূপ ফল হচ্ছেনা তথাপি একবার নাম হলে তার ফল সুদুরপ্রসারি হয়। স্কুলে ঢোকার আগেই স্কুল নিকটস্থ চায়ের দোকানে শিক্ষক শিক্ষিকাদের সমাগম দেখা যায়। তাদের মধ্যে একজন শিক্ষিকার সাথে কথা বলে জানা যায় স্কুল এই প্রতিবাদ এর পক্ষেও আছে বিপক্ষেও আছে। বিষয়টি খুবই গোলমেলে তাই সাংবাদিক পৌঁছে যায় সোজাসুজি প্রধান শিক্ষক মহাশয় এর চেম্বারে। অবশ্য যাওয়ার আগে অনেক বাধা তাকে পেরোতে হয়। স্কুলের বাইরে কোলকাতা পুলিশের একজন অফিসার সহ চারজন ফোর্স।এবং স্কুলের চারদিকে ছড়িয়ে শিক্ষক শিক্ষিকা কিন্তু ছাত্র ছাত্রীদের দেখা নেই। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে নাকি সমস্ত স্কুলের ঘর গুলি নেওয়া হয়েছে তাই ছাত্র ছাত্রীদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানার জন্যে অনির্বান চক্রবর্তী অপেক্ষা করার পর প্রধান শিক্ষক মহাশয় তার বিলাসবহুল, শীততাপনিয়ন্ত্রক চেম্বারে আসেন এবং প্রথম কথা জিজ্ঞেস করেন,আপনি কোন চ্যানেল? অনির্বানের নিজের ব্যক্তিগত পরিচয় দেওয়ার পর তিনি কথা বলা শুরু করেন,
মিডিয়ার কাজ নিজের বুম আর ক্যামেরা টা বের করা। সাথে সাথে তিনি বলেন আমি বিশেষ কিছু মিডিয়া ছাড়া বাইট দেইনা।
..বিশেষ বলতে?
..এবিপি, ২৪ ঘন্টা এইসব আর কি।
..কিন্তু আপনি প্রেস কে এভাবে না করতে পারেন কি?
..হ্যা আমি পারি, আপনি শুনে নেবেন অন্যদের কাছ থেকে।
..আপনার স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের সাথে বাইরে কথা হলো, যারা চায়ের দোকানে বসেছিলো। তারা এই বন্ধের ব্যাপার সমর্থন অসমর্থন দুটোই জানাচ্ছে।আপনার বক্তব্য কি?
..আমি এই ব্যাপারে কোনো কথা বলতে পারবো না।
…আপনি বিশেষ কিছু প্রেস ছাড়া কথা বলতে চাননা বিষয়টি কি ঠিক?আমাদের এটাই তাহলে লিখতে হবে।
..সে আপনি যা ইচ্ছে করতে পারেন। যারা আমার বাইট নেয় তারা জানে আমাকে কি প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে হবে।
প্রশ্ন -মানে আপনি বলতে চাইছেন আপনাকে প্রশ্ন কি জিজ্ঞেস করবো সেটাও পূর্বনির্ধারিত করে আসতে হবে?
.. সে আপনি যা ভালো বোঝেন।এটা যাদবপুর বিদ্যাপীঠ।এই স্কুলের দায়িত্বে আমি আছি অন্য কোনো স্কুল নয়।
(প্রমান- মাননীয় প্রশান শিক্ষক মহাশয়ের চেম্বারের সি সি টিভির ফুটেজ,সময় আনুমানিক ১২.৪৫ থেকে ১.১৫)
দাম্ভিকতা, ক্ষমতার হাতছানি এই রাজ্যে কি এতো দুর যেতে পারে যেখানে প্রেস মিডিয়াও আটকে যায়? যদি যায় তাহলে গনতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভের কাজ কি? এই রাজ্যে গনতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ কি মেরুদন্ড হীন নপুংসকতায় পরিনত হয়েছে? তাহলে এইসব ভোট, প্রতিবাদ, প্রিকেটিং এসবের মূল্য কি? এক ঘনটা র চ্যানেল বা দু ঘন্টার আলোচনা সবই কি পূর্বনির্ধারিত?? কে দেবে এই প্রশ্নের উত্তর?
এই প্রতিবেদন অনির্বাণ চক্রবর্তীর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞাতার কথা, লেখক নিজে দীর্ঘদিন স্কুল পরিচালন ব্যাবস্থার সাথে জড়িত ছিলেন, তাই তাঁর এই অভিজ্ঞাতা কে সমালোচনা না ধরে, ব্যাবস্থার ত্রুটিমুক্ত করার কিছু পথ হিসাবে ধরলে আদতে শিক্ষার হাল ভালো হতো ।
Author: Anirban Chakraborty, Head Media at Door for IBG NEWS Editorial Team.