Read Time:7 Minute, 7 Second
কল্যাণীতে আগস্ট আন্দোলনে মোদীর পতন চেয়ে স্লোগান উঠলো
এম এ হাকিম
কল্যাণী শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অরূপ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে “বিজেপি ভারত ছাড়ো” এই দাবীতে আজ বিশাল মিছিল শুরু হয় কল্যাণী সেন্ট্রাল পার্ক থেকে কল্যাণী মেন স্টেশন পর্যন্ত। ছাত্র-ছাত্রী থেকে কল্যাণী শহর তৃণমূল কংগ্রেসের বহু সদস্য ও কর্মীবৃন্দের উপস্থিত হয়ে আগস্ট আন্দোলন সফল করল। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে তৃণমূল কংগ্রেসের বহু সদস্য ও কর্মীবৃন্দের উপস্থিতি ছিল চোখে দেখার মতো।
কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সংগঠনের বলিষ্ট নেতা ড. গৌতম পালের নেতৃত্বে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও অফিসারদের একটা অংশ উপস্থিত ছিলেন। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষা বিভাগের সহ অধিকর্তা ফারুক আহমেদও এই মহা মিছিলে পা মেলান।
ভারতের অসমের ধাঁচে পশ্চিমবঙ্গে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) কার্যকর করে অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়নের দাবি জানিয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তারা অবশ্য হিন্দু শরণার্থীদের বিতাড়নের কোনো প্রশ্ন নেই বলে জানিয়ে তাদের নাগরিকত্ব দেয়ার পক্ষে সাফাই দিয়েছে।
সম্প্রতি সংগঠনটির রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে এনআরসি ছাড়াও ‘ঘর ওয়াপসি’, ‘লাভ জিহাদ’ ‘ল্যান্ড জিহাদ’ ইত্যাদি বিতর্কিত ইস্যুতে মাঠে নামার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
তাদের দাবি, রাজ্য সরকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে, এভাবে তারা গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি জম্মু-কাশ্মীরেও তারা পৌঁছে গেছে। রাজ্য সরকার আগুন নিয়ে খেলা করছে।
‘ঘর ওয়াপসি’ (বিভিন্ন কারণে যারা হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে অন্য ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন, তাদেরকে পুনরায় হিন্দু ধর্মে ফিরিয়ে আনা) বা ‘ঘরে ফেরানো কর্মসূচি’ রূপায়ণের জন্য দুর্গাবাহিনী ও বজরং দলের সদস্যদের নিয়ে একটি মঞ্চ গঠন করা হবে। এর পাশাপাশি কাজে লাগানো হবে মঠ-মন্দির ও ধর্মীয় সংগঠনগুলোকে।
তাদের অভিযোগ, এখানে হিন্দুদের দেবত্তর সম্পত্তি ও হিন্দুদের সম্পত্তি জোর করে দখল করে নেয়া হচ্ছে এবং কম দামে কিনে নেয়ার মধ্য দিয়ে ‘ল্যান্ড জিহাদ’ চলছে।
অন্যদিকে, তারা কথিত ‘লাভ জিহাদ’ (হিন্দু নারীদের ভালোবাসার ছলে ধর্মান্তরকরণ) রুখে দিতে মানুষজনকে বোঝাতে বাড়ি বাড়ি প্রচার চালাবে।
এইসব বিভাজন করে বাংলার সম্প্রীতি নষ্ট করতে পারবে না বিজেপি।
‘পশ্চিমবঙ্গে ওরা সফল হবে না’ এসব প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ‘উদার আকাশ’ পত্রিকার সম্পাদক ও কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষা বিভাগের সহ অধিকর্তা ফারুক আহমেদ গতকাল মঙ্গলবার সংবসদ মাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে ওরা একবিন্দুও সফল হতে পারবে না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য ছোটখাট দাঙ্গার মধ্য দিয়ে মানুষকে বিভক্ত করার চক্রান্তে এখনও সফল হয়নি বিজেপি। বাংলার মানুষ সম্প্রীতি চায়। দেশের বৈধ নাগরিকদের অন্যায়ভাবে বিদেশি বানিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে দেশবাসী সোচ্চার হচ্ছেন, এটাই আশার আলো। আমরা আগে দেখেছি বিজেপি সাম্প্রদায়িক সুড়সুড়ি দিয়ে বিভাজন করে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চেয়েছে। অসমে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি থেকে লাখ লাখ বৈধ নাগরিকদের নাম বাদ দেয়ার ষড়যন্ত্র কোন উদ্দেশ্যে তা আমরা বুঝতে পারছি। এভাবে অসম থেকে বাঙালী মুসলিম ও হিন্দুদের খেদিয়ে দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না কেন্দ্র ও অসম সরকার।’
তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস ভারতকে ওরা ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ বানাতে পারবে না। ভারতের সংবিধান, ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান। সংবিধানকে কলঙ্কিত করার উদ্যোগ মিশ্র সংস্কৃতির দেশ ভারতের অমর্যাদা প্রকৃত ভারতবাসীরা মেনে নেবে না। ভারতকে যারা অপবিত্র করছে তারা মানুষ নয়, মানুষ নামের অন্য কিছু। ভারত আমাদের মাতৃভূমি। যেভাবে ওরা বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিচ্ছে তাতে ভারত গভীর সঙ্কটের মধ্য দিয়ে দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে অন্য দেশের থেকে।’
ফারুক আহমেদ বললেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে কোনোরকমভাবে ওরা দাঁত ফোটাতে না পেরে এখন একেকটা ইস্যু তোলার চেষ্টা করছে। এখানে সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বদা সব ধর্ম, সব বর্ণের মানুষের পাশে থেকে কাজ করছেন। যেজন্য গোটা ভারতের বিরোধীশক্তি মমতা বন্দোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী করতে চাচ্ছেন। সেই ভয়ে বিজেপি এখন পশ্চিমবঙ্গে আশান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। মহান ভারতকে ওরা আর কত নীচে নামাবেন! ভারতবাসী আগামী লোকসভা নির্বাচনে (২০১৯ সাল) বিজেপির পতন সুনিশ্চিত করবে বলেও ফারুক আহমেদ মন্তব্য করেন।
দলিত ও সংখ্যালঘুদের কল্যাণে ফারুক আহমেদ নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করছেন। বিজেপির পতন সুনিশ্চিত করতে পারবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমাতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Advertisements