গতকাল ফোন করে কৃষ্ণদা বললো কাল দেখবি “গাঁড়ের জ্বালায় ঘরে জনতা”- “জনতা কারফিউ ভারতের একতা না ধান্দাবাজ জনতার প্রাণের দায়ে সরকারের নির্দেশ মানা” । এক সময় অতিবাম রাজনীতির উপাসক বর্তমানে ক্যাপিটালিস্ট ব্যাবসায়ী কৃষ্ণ দা মানুষটা রাখঢাক ছাড়াই কথা বলেন ।
প্রথমেই ভারতের সকল অধিবাসী কে অভিনন্দন আর তার সাথে জীবন বাজি রেখে যে সকল ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মী আজ লড়ছেন করোনার বিরুদ্ধে তাঁদেরকে অন্তরের প্রণাম।
আজ জনতা কারফিউ ডাক দিয়েছেন সায়ং প্রধানমন্ত্রী ও সকল রাজ্যের প্রশাসকরা তাতে যোগ দিলেন এবং বাড়িয়ে দিলেন সহযোগিতার হাত । প্রশংসা প্রাপ্য শাসক বিরোধী সকলের করোনার চেন ভাঙার জন্য এই উদ্যোগে ।
১৯৪৬ এর দাঙ্গা বা বাংলাদেশ যুদ্ধের ১৫ দিনের ব্ল্যাকআউট বা কাশ্মীরের কারফিউ ,সবাই কে পিছনে ফেলে দিয়ে করোনার কারণে জনতার কারফিউ । কলকাতা থেকে কান্ডলা কি কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী সবাই আজ গৃহবন্দী । এই ভাবে সরকারি নির্দেশ সকলে মানলে তিন মাসের মধ্যে দেশ এক নম্বর হবে সকল ক্ষেত্রে এ বিষয়ে যেকোনো বাজি রাখতে পারি ।
তবে সত্যিই কি আমরা জাতি হিসাবে জাপানী বা জার্মান দের মতো জেগে উঠলাম ?
সারা ভারতে খোঁজ করলাম এই বিষয়ে ,কিছু মত উঠে এলো :-
১. সরকার স্যাটেলাইটের মধ্যে দিয়ে এন্টিভাইরাস ছাড়বে করোনা মারার জন্য । বাইরে থাকলে পুরুষত্ব নষ্ট হবে !!!
২. ঘরে থাকলে এনআরসি বা সিএএ লিস্ট এ নাম থাকবে !!!
৩. সরকারি চাকরির পরীক্ষায় এক্সট্রা নম্বর দেবে !!
৪. করোনা ভাইরাস ঘরের চৌকাঠ পার করতে পারবে না , যদি দরজার ওপর দেবদেবীর ছবি বা কোরানের বাণী থাকে !!!
৫. যারা বাড়ি থাকবে তাদের স্কুলের বা সিভিক ভলেন্টিয়ারের চাকরি হবে !!!
৬. মাইনে কাটার ফন্দি !!!
ইত্যাদি মন্ত্যবের থেকে বুঝুন আমাদের সচেতনতার হাল!
সকলে বলবেন নিশ্চয় ভারত ও পারে এবং করে দেখালো । আমিও বলছি সত্যি ক্ষেত্র বিশেষে ভীতুরাও দারুন বীরত্ব দেখায় ।
মোদীজি বা মমতা দি অযথা খুশি হবেন না, এই অপদার্থ জাতি দেশের জন্য নয়, নিজের জন্য গৃহবন্দী । আপনাদের কপাল ভালো যে মৃত্যু ভয় এই ক্লীব জাতিকে চেপে বসেছে , তাই এই জনতা কারফিউ সফল হচ্ছে । কিন্তু যদি মৃত্যু ভয় না থাকে, আর কোনো দেশ হিতের জন্য কি আমরা একই ভাবে এগিয়ে আসবো? পারবো কি নিজস্বার্থ ত্যাগ করে দেশ হিতে স্বাধীনতা প্রেমীদের মতো জীবন দিতে ? উত্তর গোটা কয়েক “বেকুব” (যদিও এরা আমার কাছে প্রণম্য ) ছাড়া আজ আর কেউ সেই চিন্তাও করেন না ।
আমার কথা যদি বিশ্বাস না হয়, একটি ছোট ঘোষণা করুন জনতা কারফিউ চলা কালীন কেউ পায়ে হেঁটে নিকটবর্তী ডিএম অফিস বা সিএম অফিস এলে সরকারি চাকরি কি কোটি টাকা পাবে । দেখুন সারা ভারত পথে নেমে আসবে এমনকি করোনা আতঙ্ক ভুলে যাবে ।
অথবা বলুন নিজের বিষ্ঠা গায়ে মাখলে করোনা হবে না কিছু উচ্চ শিক্ষিত তাই করবে ।
আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি এখন লোভ আর প্রাণের ভয় দেশভক্তি বা নেতা নেত্রীদের প্রতি শ্রদ্ধা নয় । এ সব ওপরের মুখোশ আসল মুখটা কদর্য, তাই আজ আয়না দেখতে ভয় করে , আমিও যে এই জনতার অংশ ।
সুতরাং করোনা এক অর্থে ভারতের জন্য আশীর্বাদ মৃত জাতি ,মৃত্যু ভয়ে জেগে উঠেছে ।
ভুল তথ্য দিয়ে জিএসটি গায়েব , কালোবাজারি ,ব্যাঙ্ক ফ্রড বা রায়োট কিংবা খুন জখম ধর্ষণ যে জাতির নিত্য কর্ম তাদের কাছে আর কি প্রত্যাশা করা যায় ।
জনতার কারফিউ জিন্দাবাদ , ধান্দাবাজ জনতা জিন্দাবাদ, আসুন ভাই এই সুযোগে কিছু করে খাই ,দুনিয়া যায় ভাঁড় মে ,দুনিয়া কে মাল ডালো জেব মে । মাস্ক ,ওষুধ আর নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের কালোবাজারী মদের ডিএনএ সুতরাং করোনার করুনায় কারো সর্বনাশ কারো পৌষমাস ।
খুব সুখী হবো যদি আমার এই আশঙ্কা গুলো মিথ্যা প্রমাণিত হয় আর জাতি হিসাবে আমরা সত্যি যদি জেগে থাকি ।
জয় হিন্দ ।