কারণে অকারণে কোরোনা আতংক – আমি কোন পথে যে চলি, কোন কথা যে বলি
ড:পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায় , কলকাতা , ১২ অক্টোবর ২০২০
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ পদ্ধতি নিয়ে নাগরিক সমাজ দ্বিধাবিভক্ত।একদল বিধি নিষেধ মানার পক্ষে।আর এক দলের মতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রচার বেশি ভীতিজনক ভাবে প্রচার করা হচ্ছে,যা ধনী দেশগুলোর বাণিজ্যিক লাভের গোষ্ঠীবদ্ধ চক্রান্ত।দুই দলই নিজেদের বক্তব্যের পক্ষে এবং বিরুদ্ধ বক্তব্যের বিপক্ষে যুক্তি পেশ করছেন।এমন নয় যে,যাঁরা বিধিনিষেধ মানার পক্ষে ,তাঁরা সবাই আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল,এবং যাঁরা বিপক্ষে তাঁরা সবাই অস্বচ্ছল।এও বাস্তব যে নাগরিক কুল খুব বিপন্নতায় আছেন।কষ্টে আছেন-কি আর্থিক কারণে,কি মানসিক হতাশার কারণে।জগতে এরকম আপৎকালীন পরিস্থিতি এসেছে কিনা জানা নেই।
শুধু সচেতন নাগরিক হিসেবে একটা কথাই বলার;আক্রান্ত হওয়ার এবং মৃত্যুর যে ঘটনাগুলো ঘটছে তার কোনোটাই অবাস্তব নয়।মিথ্যে নয়।সুতরাং একে অপরের সঙ্গে যুক্তি ও হারজিতের যুদ্ধে না মেতে চলুন সবাই একটু ধীরে চলি।একটু পরিণত মানুষের মতো আচরণ করি।দুই দলেরই কিন্তু একই উদ্দেশ্য এবং তা হলো আবার সুস্থ পৃথিবীর ছন্দে ফেরা।আপনি আক্রান্ত হলে তা যে কেবল আপনার একার ভোগান্তি তা কিন্তু নয়।আপনার বৃত্তের,আপনার সঙ্গে ওঠা বসা করা প্রতিটি মানুষের ভোগান্তি ও ঝুঁকি।কারণ এই রোগটির ‘সেকেন্ডারি এটাক রেট’ বা ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে থাকা একজনের থেকে আর একজনের সংক্রমণের সম্ভাবনার হার প্রায় একশো শতাংশের কাছাকাছি। সব বয়সের সব স্বাস্থ্যের মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা রোগের বিরুদ্ধে লড়ার ক্ষমতা এক নয়।আপনি হয়তো চব্বিশ বছরের নীরোগ স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ব্যক্তি,কিন্তু আপনার দাদুর বয়স নব্বই বছর।আপনার মা অসুস্থ।তাঁদের বিন্দুমাত্র লড়াই ক্ষমতা নেই।তাঁরা অসহায়।
সুতরাং হঠকারিতা নয়।শুধু নিজের কথা ভেবে নয়,বরং পদ্ধতি নির্ধারিত হোক অন্য বিপন্নদের কথা ভেবে,দেশের কথা ভেবে,বাড়ির ও সহনাগরিকদের কথা ভেবে।একা কিন্তু বাঁচতে পারবেন না।সরকার সব ক্ষেত্রে সব প্রতিশ্রুতি পালন করতে পারছেন না,বা করছেন না।হয়তো পরিষেবা দানের মধ্যেই পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতি।’আজকের যন্ত্রণা কালকের সুফল ফলার জন্য’ এ আপ্তবাক্য মেনে নিয়ে এসবের বিরুদ্ধেও সকল নাগরিক কে নিজ নিজ বিশ্বাস নির্বিশেষে সংঘবদ্ধ হতে হবে।চাপে রাখতে হবে সরকারকে।লড়াই একার নয়।
স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফেরার চেষ্টা হোক সুশৃঙ্খল ভাবে নিয়ম মেনে।বিনা চেষ্টায় কিই বা জোটে?না চাইলে কে’ই বা কি দেয়!চাওয়াকে মাঝে মাঝে ভালোবাসার দাবি অথবা কখনো চাহিদার বিদ্রোহ বলে,এই যা তফাৎ।ভালো থাকুন সবাই।
●●●●●●●●●●
#পলাশ_বন্দ্যোপাধ্যায়
১২.১০.২০২০