করোনাসেকেন্ড ওয়েভ – কিছুসাফ কথা
ড: পলাশ বন্দোপাধ্যায়
কলকাতা,১০ মে ২০২১
কোভিডের সেকেন্ড ওয়েভ আসা নিয়ে নাগরিক ক্ষোভ ও পারস্পরিক চাপানউতোরের মধ্যেও কতকগুলো ব্যাপার মাথায় রাখুন।সুবিধে হলেও হতে পারে। অবজ্ঞা করতে হলে করুন,সে অধিকার তো আপনার আছেই…
■কার মৃদু উপসর্গ হবে কার তীব্র উপসর্গ হবে তার উপর নির্ভর করে তিনি কতদিনে সারবেন।দুই তরফের থেকেই অন্য মানুষের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা সমান।সুতরাং মৃদু সংক্রমন বলে বীরত্ব করে রাস্তায় ঘুরে না বেরিয়ে বাড়িতে থাকুন উপসর্গ শুরু হওয়ার পর থেকে ন্যূনতম চোদ্দ দিন।
■আপনার উপসর্গ শুরু হয়েছে অথচ আপনার পরিবারের অন্যদের শুরু হয়নি সুতরাং তাকে অন্য জায়গায় পাঠিয়ে দিলেন,এ ব্যাপারটা অবৈজ্ঞানিক ও ক্ষতিকর।সকলে একসঙ্গে থাকুন।কারণ আপনি আপনার পরিবারকে তখনই সংক্রমিত করে দিয়েছেন যখন আপনার শরীরের ভাইরাস তাদের শরীরে ঢুকে তার বংশবিস্তার শুরু করে দিয়েছে।বরং তাদের অন্য জায়গায় পাঠালে তাদের থেকে অন্যদের সংক্রমনের সম্ভাবনা প্রবল।
■যে কোনো জ্বর বা সংক্রমণে শরীর বেশি ক্যালরি ও জল খরচ করে।সুতরাং খেতে ভালো না লাগলেও জল ও খাবার খেতে হবে।দরকারে অল্প করে বার বার।আলু,পাকাকলা,ডিম,ছানা,বাদাম,চকলেটএগুলোতে খুব ভালো ক্যালরি থাকে।
■নিয়মিত শরীরচর্চা করুন,যে কোনো মূল্যে ধূমপান ছাড়ুন, আনন্দে থাকুন।আপনি যে রোগে ভুগছেন তার ওষুধও নিয়মিত ভাবে খান।
■আপনি একবার ভুগে উঠেছেন মানে আপনার আর দ্বিতীয়বার করোনা হবেনা এরকম নয়।তিনমাসের পর থেকে আপনি আবার সংক্রমিত হতে পারেন।
■দুটো ডোজ ভ্যাক্সিন করার পরে আপনি দু মাস কাটিয়ে দিয়েছেন মানেই আপনি সেফ নন।ভ্যাক্সিন রোগের তীব্রতা কমাতে পারে।রোগ প্রতিরোধ করতে পারে না।
■সংক্রমিত হলেও ইতিবাচক মনোভাব রাখবেন।ভয় পেলে আপনার শ্বাসের গতি বাড়বে।হৃদযন্ত্রের গতি বাড়বে।বুক ধড়ফড় করবে।আপনার মনে হবে আপনার শ্বাসকষ্ট হয়েছে।আসলে যা হয়নি।এটিকে বলে হাইপারভেন্টিলেশন।শ্বাসকষ্ট মানে আপনি শ্বাস নিতেই পারছেন না।আপনার বুকে ব্যথা করছে এবং অবসন্ন লাগছে।
■শ্বাসকষ্ট মানে ফুসফুসে জব্বর সংক্রমণ।তখন আপনি অক্সিমিটার দিয়ে আপনার অক্সিজেন স্যাচুরেশন দেখতে পারেন।বিনা কারণে ঘন ঘন ম্যানিয়াকের মতো স্যাচুরেশন দেখবেন না।অস্থির হবেন না।
■উপুর হয়ে শুলে ফুসফুসে অক্সিজেন বেশি ঢোকে।অভ্যাস করুন সংক্রমিত হলে উপুর হয়ে ঘুমোতে।
■সংক্রমণের সময় আপনি কাশতে পারছেন,তার একটা ইতিবাচক দিকও আছে।কাশি কফ তোলার চেষ্টা করে।এমন কি ফুসফুস থেকেও।সর্দি শুকিয়ে গেলে স্টিম বা স্যালাইন নেবুলাইজেশনেও সর্দি তরল হয়ে আরাম পাওয়া যায়।
■সেলফ মেডিকেশন কখনো করবেন না।
ওষুধ খেতে হলে সর্বদা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।
■শুধু নিজে সুস্থ থাকবেন,অন্যদের কথা ভাববেন না,এভাবে কিন্তু করোনা দূর করা যাবেনা দেশ থেকে।সবাই মিলে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।নাগরিক দায়িত্ব প্রশাসনের দায়িত্বের থেকে কম নয়।সরকারকে দোষারোপ করার আগে নিজেদের দোষারোপ করে লজ্জিত হতে শিখুন।নয়তো ঈশ্বরের ঠাকুর্দাও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পারবে না।
■স্বাস্থ্যবিধি মানুন।এটাই নিরাপদ থাকার সহজতম উপায়।
পলাশ_বন্দ্যোপাধ্যায়,১০.০৫.২০২১
Dr. Palash Bandopadhyay popular pediatrics expert with Post Graduate of Pediatric Nutrition,(Boston University). Doctor, Author, Poet, and a beautiful mind. He, always a great content provider for the readers with value to the core of the subject.