শতরূপা তোমাকে কিছু বলার ছিল সুমনের (দ্বাদশ ভাগ) – রাজনৈতিক দীনতা না দীনতার রাজনীতি

0
854
Politics In India
Politics In India
0 0
Azadi Ka Amrit Mahoutsav

InterServer Web Hosting and VPS
Read Time:24 Minute, 5 Second

শতরূপা তোমাকে কিছু বলার ছিল সুমনের (দ্বাদশ ভাগ) – রাজনৈতিক দীনতা না দীনতার রাজনীতি

সুমন মুন্সী,কলকাতা

(আগে যা হয়েছে জানতে ক্লিক করুন প্রথম ভাগ , দ্বিতীয় ভাগ, তৃতীয় ভাগ, চতুর্থ ভাগ,পঞ্চম ভাগ,ষষ্ঠ ভাগ, সপ্তম ভাগ, অষ্টম ভাগ, নবম ভাগ, দশম ভাগ , একাদশ ভাগ, দ্বাদশ ভাগ, ত্রয়োদশ ভাগ, চতুর্দশ ভাগ)

“হ্যালো বিবি দা, সুমন বলছি, আজ একবার দেখা করা যাবে?”

“সন্ধ্যে ৭টা নাগাদ চলে এসো, খিচুড়ি বানাচ্ছি রাত্রে সাথে তোমার প্রিয় লাবড়া আর আমের চাটনি “, বললেন বিবি দা। বিবি দা মানে বিভূতিভূষণ ব্যানার্জী এক্স ডিরেক্টর জেনেরেল অফ রেভেন্যুয়ে ইন্টেলিজেন্স। সত্তরোর্ধ অকৃতদার মানুষ,স্বপাক রান্না করে খান, বাঙালি রান্নার মাস্টার। ভীষণ রকম বাঙালি আভিজাত্যের ধ্বজাধারী। অনেক বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করতে ভালো বসেন ১৯৬৯ ব্যাচ আইআরএস। সুমন কে পুত্র তুল্য স্নেহ করেন ।

কয়েক বছর আগের কথা সুমন তখন গুরগাঁও ।

আজ ৩১ অক্টোবর ২০০৮, কেজিএস এর সাউথ ইস্ট এশিয়া প্যাসিফিকের রিজিওনাল হেড সুমন সান্যাল। কেজিএস বিশ্বের বৃহত্তম থার্ডপার্টি ইন্সপেকশন টেস্টিং এন্ড ভেরিফিকেশন কোম্পানিদের অন্যতম। সেই খানে ল্যাবরেটরি ইনফরমেশন সার্ভিসেস ডিভিশন এর এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওন এর দায়িত্বে। এত অল্প বয়সে এই পোস্ট সকলের আনন্দের থেকে হিংসার কারণ বেশি।

কাজের গুরুত্ব অপরিসীম। যেকোন জিনিসের কোয়ালিটি এন্ড প্রিশিপমেন্ট ইন্সপেকশন রিপোর্ট ছাড়া পোর্ট থেকে কোনো জিনিস আমদানি রপ্তানি করা যায় না। প্রচুর আন্ডার দি টেবিল অ্যাডজাস্টমেন্ট হয় । কালো টাকার কুমির এক একটা ম্যানেজার । বলতে গেলে কালো মানিকদের দুনিয়া। কয়লা, লোহা , চা থেকে শুরু করে কাপড়, খাদ্য যেকোন জিনিসের দুনিয়ার টেস্ট সেখানে ২০০০০ এর ওপর টেস্টিং স্ট্যান্ডার্ড এক এক তা দেশের এক একটা অথরিটি আর তাদের স্পেসিফিকেশন।

অনেকটা ভিজিলেন্স ডিপার্টমেন্টের মতো কাজ । সব স্ট্যান্ডার্ড অনুসারে রিপোর্ট ম্যাচ করতে হবে, অটোমেটেড মেশিনে টেস্ট হবে, কিছু ম্যানুয়াল ডাটা ফিড হবে। সরকারি দপ্তরের সাথে কোর্ডিনেশন, এনএবিএল আপ্রুভাল ইত্যাদি ।

বিবি দা তখন চিফ ভিজিলেন্স কমিশনার , ঝগড়ার মধ্যে দিয়ে প্রথম দেখা।।

১০ই অগাস্ট ২০০৮ সবে কেজিএস জয়েন করেছে সুমন, এর আগে ১২ বছর তথ্য প্রযুক্তির সেরা এমএনসি গুলোতে একেবারে নিচু থেকে শুরু করে ডিভিশন হেড হয়েছে। দিন পনেরো হলো কেজিএস এ জয়েন করেছে, এমডি নিউজিল্যান্ডের মানুষ,জন এম. পল অত্যন্ত ভালো মানুষ। সেই অস্ট্রেলিয়াতে আলাপ হয়েছিল ল্যাবরেটরি কনফারেন্স ছিল। সেই সুমন কে ধরে নিয়ে আসে কেজিএস এ ।

এক নতুন দুনিয়া আইটির থেকে অনেক বেশি বাস্তবের দুনিয়া, অনেক বেশি অন্ধকার দুনিয়া।

যাক সে কথা।

“স্যার আপনাকে, ভিজিলেন্স কমিশিনার দেখা করতে বলেছেন,”সতর্কতা ভবন,জিপিও কমপ্লেক্স নিউ দিল্লী” আজ দুপুর ২টর এক নিঃশ্বাসে কথা বলে ফেললো অরিন্দম সেন জিএম অপারেশন্স। চৌখশ ছেলে প্রথম দিনেই আলাপ আর ভালো লাগা, কারণ রবীন্দ্রনাথ । ছেলেটি অসাধারণ রবীন্দ্রসংগীত গায় ।

“কেন হঠাৎ?”, সুমন জিজ্ঞাসা করে ।

“জানিনা স্যার , মনে হলে খুব রেগে আছেন, সাবধানে হ্যান্ডেল করবেন, খুব কড়া মানুষ আর কোনো রকম ফেভার নেন না, সে চেষ্টাও করবেন না “। বললো সেন ।

“এই ঘুষ জিনিসটা, আমার একেবারে না পসন্দ। আমি নিও না, দিও না, তোমার বিবি বাবুকে বলে দিও”, বললো সুমন। বাস্তবিক ওর এই বাঁকা রাস্তায় সোজা চলার মূল্য প্রতি ক্ষেত্রে দিতে হয়। কোনো অফিসে ২-৩ বছরের বেশি এডজাস্ট করতে পারেনা।

দুপুর ১:৩০ এ সেন কে নিয়ে পৌছালো বিবি দার অফিস , সাহেবের বাড়িঘরই বলা চলে, পথে সেন বললো “স্যার লোকটা কাজ পাগল উন্মাদ মাইনের বাইরে একটাকাও ধরেনি, এমনকি ইন্দিরা গান্ধীর পরিচিতের পরিবারের কেস ও একই রকম কড়া হাতে ম্যানেজ করেছেন।

সায়ং রাজীব গান্ধী এই কারণে এডমায়ার করতেন খুব, এমন কি পিএমও তে জয়েনও করার অফার দিয়েছিলেন । কিন্তু সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করেন। বাজপেয়ীজির ও পছন্দের মানুষ ছিলেন, মনমোহন জির ও, কিন্তু এ সবই তাঁর ডু নট বেন্ড এটিচুডের জন্য।

ঠিক দুটো।

“মে আই কাম ইন স্যার”, দরজা হালকা খুলে সেন বললো ।
“সেন বাবু আসুন”, ভিতর থেকে একজন রাশভারী গলায় ডাকলেন।

“স্যার আমারদের নতুন রিজিওনাল হেড মিস্টার সুমন সান্যাল”, আমাকে দেখিয়ে বললো সেন ।

হাত তুলে নমস্কার করলো সুমন।

“বসুন, তুমিও বসো সেন”, বললেন বিবি দা।

“স্যার আপনি ডেকেছিলেন, কি হয়েছে একটু বলবেন”, বললো সেন ।

BB Banerjee Office
BB Banerjee Office

ততক্ষনে সুমন দেখে নিয়েছে টেবিলে রামকৃষ্ণ,মা সারদা আর বিবেকানন্দ সাথে নেতাজি সুভাষের ছবি। বেশ ভালো লাগলো, তার মানে লোকটার কোথাও একটা নৈতিক মেরুদন্ড আজও কাজ করে। নইলে বেশির ভাগই কোরাপ্ট ।

“কাজের কথায় আসি, আই ডোন্ট হ্যাভ মাচ টাইম টুডে,মিটিং আছে ২:৩০তে “, বললেন বিবি দা ।
একটু সজাগ হয়ে বসলো সুমন ও সেন ।

“:আপনাদের টেস্ট রিপোর্ট কনফিডেনটিয়ালিটি কম্প্রোমাইজ হচ্ছে, তিন তিনটা হাই প্রোফাইল কেস এ , ভিক্টিমদের ফেভোরে রিপোর্ট ইসু হয়েছে, অথচ কন্ফার্ম এভিডেন্স ছিল পেস্টিসাইড ইন সফটড্রিংকস। আপনাদের ১৫ ডেজের মধ্যে ইনভেস্টিগেট করে ডিটেলস দিতে হবে।”, বললেন বিবি দা ।

“স্যার আমাদের সব স্ট্যান্ডার্ড ফলো করে কাজ হয়, কোনো ডাটা লিক এর জায়গা নেই”, বললো সুমন ।খেয়াল করলো সেন চুপ ।

“সুমন আপনি সবে জয়েন করেছেন। ছিলেন আইটিতে এই জগৎ কে আগে চিনুন টের পাবেন খাতা আর বাস্তব কত তফাৎ”, অর্থপূর্ণ মুচকি হেসে বললেন বিবি বাবু ।

পিত্তি জলে গেলো সুমনের, বিশ্বের সেরা ল্যাবগুলোতে কাজ করে এসেছেন । আর এই আধ বুড়ো সরকারি আমলা, তাকে বোঝাবে ল্যাব কি, কি ভাবে কাজ করে ?

“আই নো মাই জব, সেটা আমায় দেখতে দিন”, বললো সুমন এবং স্পষ্টতই অসন্তোষ ফুটে উঠেছে গলায়।

এবার পাঁচ মিনিটের শুধু বিবি দা সুমনের শুরু থেকে শেষ [পর্যন্ত ইতিহাস বলে বললেন ” আমি কখনো বলিনি তুমি অযোগ্য, বোঝাতে চেয়েছি তুমি সোজা হাঁটা মানুষ এই অন্ধকার গলিতে প্রতিপদে হোঁচট আর ধাক্কা খাবে। যত না বাইরে থেকে তার থেকে বেশি নিজেদের থেকে। সাবধানে কাজ করবে ভাই।”

সুমন অবাক এতো রীতিমতো তার এক্সরে করে, তবে বসে আছে ।

সুমনের অবাক করা মুখ দেখে হেসে বললেন “মাই বয় আগামী অক্টোবরে অবসর নেবো, শেষ দিন পর্যন্ত কাজ ই আমার কাজ”। যদিও পরে আরো তিন বছর মেয়াদ বেড়েছিল চাকরির। বিহারের এক বিখ্যাত নেতার প্রায় জেল করে ছেড়ে ছিলেন, ন্যাশনাল হেডলাইন সে নিউজ।

আরো কিছু কথা হলো , কি কি চাই, কবে থেকে ডাটা চাই ইত্যাদি, সব ইন্সট্রাকশন নোট নিয়ে রিসিভ কপি সাইন করে অফিসের বাইরে এসে সিগরাতে ধারালো ।

“সেন, সাহেব যে কথা বললো তাকি সম্ভব? আমাদের অফিসে প্রোটোকল ব্রেক করে কাজ করা যায়?”, সুমন বললো ।

“স্যার, আমি সঠিক বলতে পারবো না তবে সন্দেহ আমার হয়”, বললো সেন ।

গাড়ি এসে গেছে মের্সেডিজ বেঞ্জ এস ক্লাস অফিস থেকে এটাই ওর জন্য আলোটেড ।

২ ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনমির গুণমান কেজিএস এর মতন চার পাঁচটা সংস্থা দেখে সুতরাং তাদের সুনাম খুবই গুরুত্বপূর্ন। কোনো রকম বেআইনি কাজ সরাসরি দেশের সম্মানের সাথে বেইমানি । চোয়াল শক্ত করে বসে রইলো সুমন। ১৫ দিনের মধ্যে এই আমলা কে বুঝিয়ে দিতে হবে কেজিএস কোনো আজেবাজে কাজ করেন না । ১৭৮ দেশে অপারেশন তাদের ইউকে হেড অফিস এর মধ্যে ৪৮ দেশ তার অধীন ।

পরের সাত দিন ডাটা মাইনিং এর কাজ শুরু করলো গোপনে, অডিট ট্রেইল চেক করে এনালাইসিস করলো ।

Suman working in Laboratory
Suman working in Laboratory

ক্রমশ বুঝতে পারলো রুট পাসওয়ার্ড সুপারইউজার কম্প্রোমাইস করে ডাটা চেঞ্জ করেছে, এবং সেটা ইন্ডিয়া নয় ইউএসের আটলান্টা থেকে করা হয়েছে । স্ট্রেঞ্জ আটলান্টা অফিস ইন্ডিয়া সার্ভার একসেস পেলো কি করে?

“পল আই ওয়ান্ট টু মিট ইউ ইন পারসন”, সুমন বললো ফোনে ।
“হোয়াট হ্যাপেন্ড এনি থিং ভেরি সিরিয়াস”, এমডি জানতে চাইলো ।

“আই এম কামিং রাইট এওয়ে”, বলেই সুমন চললো পালের রুমে থার্ড ফ্লোরে ।

আধা ঘন্টায় যে ঘটনা বললো পল কে তার নির্যাস, বিদেশের লোকেশন থেকে ইন্ডিয়া ডাটা চেঞ্জ করছে , আইডেন্টিটি ক্যান নট বি ট্রেস বাক ।
কোন কোন কেস, কোনো কোন শিপমেন্ট , এনরুট ,ম্যানেজিং এজেন্ট , অফিসার ইন কেজিএস সব ডাটা তুলে দিলো ।

“মাই গড ডিস্ ইজ এ ক্রাইম এন্ড দে হ্যাভ কুকড দি ডাটা”, বললো পল ।
“হাই সেনসেটিভ, বাটার আর ড্রিঙ্কস আইটেম কম্প্রোমাইজড সো আজ মিনারেলস”, বললো সুমন ।

“ওকে ডু ওয়ান থিং, উই হ্যাভ দা প্ল্যান টু মাইগ্রেট টু নিউ সিস্টেম , নেক্সট ইয়ার , ব্যাট ইউ স্টার্ট নাউ । গো টু পার্থ এন্ড গেট দি ট্রেনিং টু আপগ্রেড। কীপ দি ইনফরমেশন হিয়ার, উইল মিট দি কমিশনার”, বললো পল ।

“হোয়াট ওই উইল সে”, জিজ্ঞাসা করলো সুমন ।

“লেট্ মি এন্ড জাগদানি হ্যান্ডেল ইট। ইউ আর নিউ।সি হাউ টু হ্যান্ডেল ডিস্ ওল্ড ড্যাডিস ।” , বলে হাসলো পল ।

জাগদানি ডিরেক্টর অপারেশন এন্ড ইম্প্রুমেন্ট কাউন্সিল । সুমনের রিপোর্টিং বস, সজ্জন ব্যক্তি।

পরের একসাপ্তাহে রিপোর্ট তৈরী করে বিবি দার সাথে দেখা করা হলো । অফ দি রেকর্ড কথা হলো ।
পল প্রমান করে দিলো সিস্টেম অডিটের জন্য সরকারি ল্যাব অডিট টিম ওই সময় পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেছিল । লিখিত অর্ডার ছিল ল অফিসার কে ডাটা এক্সেস রাইট দিতে হবে ।

“এরপর থেকে টোটাল অডিট টেবিল লক থাকে যেন,এক্সটার্নাল নেটওয়ার্ক থেকে এক্সেস বন্ধ হোক ইত্যাদি।”, বললেন বিবি দা ।

“কি সান্যাল মশাই বুড়োর ওপর সেদিন বেজায় রাগ হয়েছিলো তো। কিপ ইওর সিক্সথ সেন্স ওপেন, ইউ হ্যাভ এন্টারড এ ডেভিলস জোন । ,” বললেন বিবি দা ।

লজ্জায় লাল হয়ে গেলো সুমন সেদিন সত্যি খুব রেগে গেছিলো ।

এই ঘটনা থেকে এটাই জানা গেলো , সরকারি আমলা, প্রাইভেট বড়কর্তা আর রাজনৌতিক নেতা মিলে কিভাবে দেশের মানুষ কে ঠকায় । সম্পূর্ণ রিপোর্ট পরিবর্তন করে আর এভিডেন্স টেম্পার করে মার্কিন বহুজাগতিক সংস্থার নিশ্চিত শাটডাউন কে ক্লিনচিট দেয়া হলো। আর মানুষ বিষ খেয়ে যেতে লাগলো নির্দ্বিধায়। শেয়ার ভ্যালু বেড়ে গেলো, পাবলিক কফিডেন্স হাই হলো । মাঝে পরে ১০০ কোটির বাখরা সবাই পেলো। আর এই বাখরা কেসের গোড়া খুঁজতে নেমেছেন বিবি দা । এটাই সেনের সন্দেহ কিন্তু প্রমান করা যাবে না আর সন্দেহ দিয়ে গল্প চলবে কোর্ট নয় ।

এর পর চার বছর বিবিদা আর সুমন মিলে একডজনের বেশি মাফিয়াদের সাথে আধিকারিক আর ইন্ডাস্ট্রি নেক্সাস এর বিরুদ্ধে তথ্য খুঁজে বের করেছিল । সে দিনের সেই স্যার আজ সুমনের ভিজিলেন্স কাজের গুরু দ্রোণ। কিন্তু মাজার দেশ ভারতবর্ষ অসৎরা সঙ্গবদ্ধ আর সত্যের স্থান আস্তাকুঁড়ে ।

বিবিদা অবসর নেবার আগে বললেন “সুমন তোমার জীবন সংশয় আছে হসপেট আর বেল্লারি মাইনসে যেও না । এটা আমার অনুরোধ বাবা।”

কিন্তু অতিরিক্ত দুঃসাহস থাকলে যা হয় তাই হলো । তবে ধানবাদে, কোল মাফিয়াদের দল, অফিস ঘিরে ফেললো, ৭০ থেকে ৮০টা টাটা সুমো এসেছিল । পিছনের পাঁচিল টপকে সোজা পরিত্যাক্ত রেল লাইন টপকে গিরিডি চলে যায়, সেখান থেকে পারেশনাথ হয়ে কলকাতা। ততো দিনে বাড়িতে কল এসে গেছে। এইডার ফল ইন লাইন ওর লুস ফ্যামিলি। প্রশাসন আর মিডিয়া কেউ সাথে এলোনা।

তৎকালীন এক ডিজি পদমর্যাদার অফিসার অফ দি রেকর্ড বলেছিলেন “আপনি জব চেঞ্জ করে ফেলুন, না হলে দেশ ছেড়ে দিন, প্রয়োজনের বেশি বড় ভিমরুলের চাকে হাত দিয়ে ফেলেছেন । যে দরজায় নক করবেন সেখানেই আগে দুর্নীতির কাজীরা হাজির দেখতে পাবেন। আপনার দেশ ভক্তি বইতে ভালো বাস্তবে আর নেই। অনেক কিছুই ইচ্ছা করে দেশের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কিন্তু হাত পা গলা ফাঁস পরান । অল্প বয়সে আপনার মতো আমিও আইপিএস ড্রেসটার মর্যাদা রাখতে গিয়ে এক বছরে সাত বার বদলি হয়েছিলাম ” ।

বিবি দা বুদ্ধি দিলেন, “আমি কিছু টাকা জোগাড় করে দিচ্ছি, তুমি একটা মিডিয়া তৈরী কর, উই উইল ক্রিয়েট সাম নয়েস।”, সেই শুরু ।

সাংবাদিকতার কিছুই জানতোনা, কিন্তু হার মানতেও জানতোনা, শুধু পড়াশুনো আর পাবলিক রিলেসন স্কিল দিয়ে শুরু হলো লড়াই।

খুব দ্রুত আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলো ওর পোর্টাল পূর্ব ভারতের প্রথম ডিজিটাল চ্যানেল। বিবি দা ফোনে হেসে বললেন “কি বিপ্লবী, বুড়োর কথা মিলছে। আজ তুমি আন্তর্জাতিক মিডিয়া এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট, রয়টার সার্টিফাইড জার্নালিস্ট । সবচেয়ে বড় কথা স্বাধীন।”

“এ সবই আপনার আশীর্বাদ দাদা ।”, বলেছিলো সুমন ।

২০১১ থেকে ২০১৪ সাল দেশে পালা বাদলের দিন । দেশে রাজ্যে নতুন সরকার এসেছে , সকলের মনে আশা এইবার দেশ ঘুরে দাঁড়াবে ।

কিন্তু সমস্যা খুবই কঠিন কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার মতো । আগে নেতা হতো চিত্তরঞ্জন দাস,নেতাজি সুভাষ , রাসবিহারী বোস, মাস্টারদা সূর্য সেন , ভকত সিং, রাজগুরু, আসফাকুল্লা। সকলেই উচ্চ শিক্ষিত উচ্চ আদর্শের মানুষ । আর এখন যত নেতা আছেন বেশির ভাগই এদের নখের যোগ্য নয় । প্রত্যেকের স্ট্রং ক্রিমিনাল ব্যাগগ্রাউন্ড না হলে রাজনীতিতে সে প্রায় অচল । তাই দেশে ক্রিমিনালদেরই ক্ষমতার কাছাকাছি দেখা যায় সবচেয়ে বেশি। এই কথা গুলো বলেছিলেন সুমনের স্বর্গীয় দাদু, আর এক বিপ্লবী গনেশ ঘোষের বন্ধু ও স্বাধীনতা সংগ্রামী । পিতা মাতা দুই দিকের উত্তরাধিকার বিপ্লবীর তাই সোজা কথা সোজা ভাবে বলাই কাজ।হাত কাটা পঁচু, চোখ ফাটা সেলিম কি কান কাটা নেপা কে নেতা করলে যা হবার তাই হচ্ছে ।

সুমন আর বিবিদার চ্যানেল বিদেশে দ্রুত স্বীকৃতি পেতে লাগলো । অবিদ্যা আর রগরগে মশলা খবরে অভ্যস্ত জাতি একটু দেরিতে বুঝতে শুরু করলো ।

“আজকালকার নিউজ মানেই ঘন্টা খানেক ধরে কিছু মেকি বুদ্ধিজীবী ভন্ড নেতাদের গলা ফাটিয়ে আবোলতাবোল চিৎকার । রাজা তুমি উলঙ্গ বলার সাহস নেই ।”, আক্ষেপ করে বলেছিলেন বিবি দা ।

অনেক দিন ধরেই একটা মেডিকো লিগ্যাল কেস হাই প্রোফাইল প্রস্টিটিউটিশন এন্ড ব্লুফিল্ম চক্র কে ধরার জন্য তথ্য খুঁজে বের করেছেন বিবিদা । এর সাথে রয়েছে সিক্রেট সার্ভিসের একটা এটি গোপন কাজ ।

Old man and the natural friend
Old man and the natural friend

আজ তাই নিয়েই কথা সেই জন্যই সুমন কে ডেকেছেন নিজের বাড়ি সিআর পার্কে ।

সুমন যখন পৌছালো তখন ৬:৩০ দিল্লি সবে আলো মরতে শুরু করেছে ।

সিকিউরিটি গার্ড ওকে চেনে বুড়াবাবুর ভাইপো বলে। হেসে চাবি এগিয়ে দিয়ে বললো “স্যার ১০ মিনিটে আ রাহা হয়”।

সুমন দরজা খুলে ঢুকে দেখে টেবিল নোট “বেলের সরবত বানিয়েছি ফ্রীজে তোমার ভাগেরটা আছে, সিবিআই জয়েন্ট ডিরেক্টর রতন সাক্সেনা
আসলে রিসিভ করে বসাবে আমি আসছি ।

সুমন বুঝলো পার্কে গেছে বিবিদের প্রিয় কাঠ বেড়ালিদের সাথে দেখা করতে ।

সোফায় বসে টেবিলে রাখা ওয়ার্ল্ড ট্রু ডিটেকটিভ মিস্ট্রির একটা নভেম্বর ১৯৮০ কপি । বিবি দার বন্ধুর Jeep মামলা নিয়ে একটা লেখা বেরিয়েছে । সুমন পড়তে শুরু করলো । বুড়ো আধ ঘন্টার আগে আসবে না ।

এমন সময় দরজার বেল বেজে উঠলো ।

আই হোল দিয়ে দেখলো বিবিদা আর মিস্টার সাক্সেনা ।

“বেল পানা খেয়েছো “, ঢুকতে ঢুকতে প্রশ্ন করলো বিবিদা ।

মাথা নেড়ে না বলতেই বিবিদা বললেন ” ভালো জিনিস খাবে কেন , কেমিক্যাল সফ্ট ড্রিংক হলে ঠিক বোতল সাফ হয়ে যেত ।

“যাক তোমার আর সাক্সেনার জন্য নিয়ে এস আর আমার জলের বোতলটা”, সোফায় বসে সামান্য হাঁফাচ্ছেন বিবিদা ৭০ হলো এই ২০১৬র আগস্টে ।

“সুমন তোমার পাসপোর্ট রেডি আছে”, প্রশ্ন করলেন বিবি দা
“ইয়েস, কিন্তু কেন”, বললো সুমন ।

“তোমাকে দুবাই যেতে হবে দু দিনের জন্য, গেট রেডি। আই উইল অল্সো গো “, বললেন বিবি দা ।

“সাক্সেনা হ্যাব দিজ এন্ড টেল মি হোয়াট পিএমও এডভাইস ফর আস”, প্রশ্ন করলেন বিবি দা ।

“কনফিডেনটিয়াল এন্ড হাই রিস্ক আওয়ার নরমাল এজেন্টস ক্যান নট বি ইনভল্ভড, সো স্যার বিবি ইউ হ্যাভ বিন সিলেক্টেড এজ মোস্ট সুইট্যাবল হিডেন গাই, মিস্টার সান্যাল উইল বি জার্নালিস্ট এজ ইউজুয়াল। আপনাদের সেমিনার ২৯-৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭। অল লজিস্টিকস উইল বি ওন কনস্যুলেট কাভার্ড বিসনেস গ্রুপ। ব্যাট ক্রাক দি ম্যাটার লিবো”, বললেন সাক্সেনা ।

“লিবো কি?”, প্রশ্ন করলো সুমন ।

শুরু হলো নতুন চ্যাপ্টার ইনভেস্টিগেটিং জার্নালিসিমের পথে নতুন জার্নি ।

(ক্রমশ)

কাল্পনিক গল্প বাস্তবের চরিত্র

About Post Author

Editor Desk

Antara Tripathy M.Sc., B.Ed. by qualification and bring 15 years of media reporting experience.. Coverred many illustarted events like, G20, ICC,MCCI,British High Commission, Bangladesh etc. She took over from the founder Editor of IBG NEWS Suman Munshi (15/Mar/2012- 09/Aug/2018 and October 2020 to 13 June 2023).
Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Advertisements

USD





LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here