আন্তর্জাতিক নারী দিবস : ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে এফটিআইআই-এর মহিলা প্রাক্তনীদের সাফল্যের উদযাপন
By PIB Kolkata
মুম্বাই, ৮ মার্চ, ২০২২
দেশে চলচ্চিত্র-শিক্ষার অগ্রণী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইন্সটিটিউট অফ ইন্ডিয়া – এফটিটিআই গত শতাব্দীর ছয়ের দশকের গোড়ায় স্থাপিত হয়। এই প্রতিষ্ঠানটি দেশকে বৈচিত্র সম্পন্ন কিছু গল্প কথক দিয়ে এক অনবদ্য নজির গড়েছে। এই গল্প কথকদের মধ্যে মহিলা প্রাক্তনীরাও রয়েছেন, যাঁরা চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে সৃজনশীলতার দিক থেকে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। এই মহিলা প্রাক্তনীদের বৈচিত্রময় কর্মজীবন চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন শিল্পের বিবর্তনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। চলচ্চিত্র নির্দেশনা, চিত্রনাট্য, সিনেমাটোগ্রাফি, শব্দগ্রহণ, প্রযোজনা, অভিনয়ের মত ক্ষেত্রে এফটিআইআই-তে প্রশিক্ষিত মহিলা প্রাক্তনীদের চ্যালেঞ্জ ও সাফল্যের স্বীকৃতি তথা এদের কৃতিত্ব উদযাপনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের প্রকাশনা বিভাগের সহযোগিতায় ‘ব্যালেন্সিং দ্য উইসডম ট্রি – অ্যান্ড অ্যান্থলজি অফ এফটিআইআই উইমেন অ্যালুমিনি’ শীর্ষক একটি সংকলন তৈরি করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনের অঙ্গ হিসেবে আজ কলকাতা আন্তর্জাতিক পুস্তক মেলায় বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা তথা এফটিআইআই-এর প্রাক্তনী শ্রীমতী অরুণারাজে পাতিল এই সংকলনটি প্রকাশ করেন। এই উপলক্ষে সংকলটির সম্পাদক গৌরী দুর্গা চক্রবর্তী এবং অন্য তিন প্রাক্তনী – রিনা মোহন, গিসি মাইকেল এবং ডরোথি ভার্মা উপস্থিত ছিলেন। এই সংকলন গ্রন্থটিতে তিনটি খন্ড রয়েছে। এগুলি হল – প্রাক্তনীদের মধ্যে কথোপকথন, ব্যক্তিগত চিন্তা-ভাবনা এবং সর্বোপরি ৫০৩ জন মহিলা প্রাক্তনীর শিল্প কর্মের বিবরণ। এই ৫০৩ জন মহিলা প্রাক্তনী ১৯৬৫ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত এফটিআইআই থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। সংকলনটি থেকে পাঠকরা চলচ্চিত্র শিক্ষায় প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে যে প্রেরণা রয়েছে সে সম্পর্কে জানতে পারবেন। এই প্রতিষ্ঠান থেকে ১৯৬৬-তে প্রথম স্নাতক ডিগ্রিধারী মহিলা পার্বতী মেনন এবং ২০২১-এ কান চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার জয়ী নির্দেশক পায়েল কাপাডিয়া সম্পর্কিত বিভিন্ন ঘটনার বিবরণ রয়েছে। মহিলা চলচ্চিত্র নির্মাতাদের পক্ষ থেকে এরকম অভিজ্ঞতা সম্বলিত সংকলন আগে কখনও প্রকাশিত হয়নি।
সংকলন প্রকাশ অনুষ্ঠানে শ্রীমতী অরুণারাজে পাতিল এফটিআইআই-এর মহিলা প্রাক্তনীদের সাফল্যের খতিয়ান লিপিবদ্ধ করে রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের পূর্বাঞ্চলীয় মহানির্দেশক শ্রী ভূপেন্দ্র কাইন্থোলা এই সংকলন গ্রন্থ প্রকাশে যৌথ প্রয়াস গ্রহণের জন্য এফটিআইআই এবং প্রকাশনা বিভাগকে অভিনন্দন জানান। এফটিআইআই-এর রেজিস্টার সৈয়দ রাবীহাসমি এবং সহকারী অধ্যাপক শ্রী বিক্রম ভার্মা উপস্থিত ছিলেন।
মনুষ্য বর্ণিত কাহিনীর লিপিবদ্ধকরণে আরও মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। লিঙ্গ সমতার ক্ষেত্রে বৃহত্তর অর্থে এধরণের কাহিনীর অত্যন্ত তাৎপর্য রয়েছে। সেদিক থেকে মনুষ্য বর্ণিত কাহিনী লিপিবদ্ধকরণ এবং গবেষণার সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের এই সংকলন গ্রন্থটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে আরও মনোযোগী হওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এই সংকলনটিতে লিঙ্গ সমতার ঊর্ধ্বে উঠে ভারসাম্য বজায় রাখার ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। দেশে গণমাধ্যম ও বিনোদন ক্ষেত্রের ক্রমবিকাশের সঙ্গে সঙ্গে এটা উপলব্ধি করা প্রয়োজন যাতে আরও বেশি সংখ্যক গল্পবলিয়ে উঠে আসেন এবং বিভিন্ন ধরণের বিষয়বস্তু প্রণয়নে তাদের আরও বেশি প্রশিক্ষিত করে তোলা যায়। চলচ্চিত্র শিক্ষার প্রতিষ্ঠান হিসেবে এফটিআইআই এধরণের কাজে যুক্ত রয়েছে এবং যাবতীয় সাহায্য দিয়ে আসছে। আজ প্রকাশিত এই সংকলনটি অতীতে চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিত্বদের চ্যালেঞ্জ, দায়িত্ব এবং সাফল্য সম্পর্কে আরও সচেতন হয়ে উঠতে ভবিষ্যতে উচ্চাকাঙ্খী তরুণীদের সঠিক দিশা দেখাবে।